মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি সতর্ক করেছিলেন, রাজ্যে নানান এজেন্সি ঘুরে বেড়াচ্ছে, মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য জোগাড়ের চেষ্টা করছে। সেই সতর্কবার্তার কয়েক দিনের মধ্যেই পূর্ব বর্ধমানে মিলল তার বাস্তব প্রমাণ। পুলিশ আলিশা বাসস্ট্যান্ড থেকে এক যুবককে পাকড়াও করেছে। জানা গিয়েছে, তিনি বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে নাগরিকত্ব যাচাইয়ের অজুহাতে ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, জন্মসনদ-সহ নথি চাইছিলেন। (আরও পড়ুন: শুধু মহুয়া নয়, এবার 'অভিমানী' কল্যাণের নিশানায় তৃণমূলের সব মহিলা সাংসদ!)
আরও পড়ুন: কালীঘাটে ধৃত বাংলাদেশি কীভাবে পেলেন ‘খাঁটি ভারতীয়’ ড্রাইভিং লাইসেন্স?
শুক্রবার রাতে গ্রেফতার হওয়া ওই যুবকের নাম হিমাদ্রি ঘোষ। পুলিশ সূত্রে খবর, বর্ধমান শহরের বাসিন্দা তিনি। দীর্ঘদিন ধরে একটি সংস্থার হয়ে কাজ করলেও সম্প্রতি বিভিন্ন বিধানসভা এলাকায় ঘুরে তথ্য সংগ্রহে নেমেছিলেন। শুধু তাই নয়, জেরায় সে স্বীকার করেছেন, তাঁর মতো আরও অনেকেই একই কাজ করছে। পুলিশ ইতিমধ্যেই তাদের খোঁজে নেমেছে। ধৃতের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে একাধিক ইলেকট্রনিক গ্যাজেট ও নথি। পুলিশ জানিয়েছে, কখনও সে নিজেকে নির্বাচন কমিশনের কর্মী বলে পরিচয় দিতেন, আবার কখনও সরকারি দফতরের কর্মী সেজে নথি চাইতেন। এমনকি ভুয়ো পরিচয়পত্রও ব্যবহার করতেন বলে অভিযোগ। (আরও পড়ুন: SSC অযোগ্যদের তালিকায় বালুরঘাটের TMC কাউন্সিলর, পড়াতেন জীবনবিজ্ঞান)
আরও পড়ুন: বিজেপির নেতার স্ত্রীর নাম SSC-র অযোগ্যদের লিস্টে! মুখ খুললেন না অনুব্রত, TMC MLA
এ নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতরও শুরু হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা দেবু টুডু অভিযোগ করেছেন, রাজ্যের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই ষড়যন্ত্র চলছে। বিজেপি বাঙালির ভোটাধিকার কেড়ে নিতে চাইছে। এই ঘটনাও সেই চক্রান্তের অংশ। তিনি মানুষকে সতর্ক করে বলেন, সরকারি প্রতিনিধি ছাড়া কাউকে যেন কেউ নথি না দেন। অন্যদিকে, বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র তৃণমূলের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, সব কিছুতেই বিজেপির ভূত দেখলে চলবে না। কে কোন উদ্দেশ্যে তথ্য চাইছে, সেটা তদন্ত করে দেখা হোক। (আরও পড়ুন: এসএসসি অযোগ্য তালিকায় নাম ওঠা শিক্ষকদের বেতনের কত টাকা ফেরাতে হবে?)
প্রশাসনের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, প্রতারকরা এভাবে সাধারণ মানুষের আধার বা প্যানকার্ড সংগ্রহ করে ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলে এবং অর্থ লেনদেন করে থাকে। কখনও গবেষণা বা সমীক্ষার নামে, কখনও ফোনে কল করে নথি হাতানোর চেষ্টা হয়। তাই মানুষকে সচেতন করতে ইতিমধ্যেই প্রচার শুরু করেছে পুলিশ। তবে ধৃত যুবকের পরিবার অন্য দাবি করছে। তাঁদের বক্তব্য, হিমাদ্রি আসলে একটি সমীক্ষক দলের সদস্য। তারা বিভিন্ন সময়ে নানা বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করেন। এদিকে হিমাদ্রির জেরায় আরও কয়েকজনের নাম উঠে এসেছে। পুলিশ তাদের ধরতে জাল বিছিয়েছে। তদন্তকারীদের মতে, জাল এজেন্সির এই নেটওয়ার্ক আরও বড় হতে পারে। তাই গোটা ঘটনাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।