আবারও ভিনরাজ্যে বাংলার শ্রমিকদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ উঠল। উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের দুই ভাই, রুবিকুল আলি ও জাফর আলিকে হরিয়ানায় আটক করেছে স্থানীয় পুলিশ। এমনই গুরুতর অভিযোগ তুলেছে তাঁদের পরিবার। বাংলায় কথা বলার ‘অপরাধেই’ তাঁদের বাংলাদেশি বলে দাগিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি। ঘটনায় দিশেহারা তাঁদের অসুস্থ মা তসলিমা বিবি।
আরও পড়ুন: বিজেপির উপর ১৪৪ ধারা জারি করতে হবে, পরিযায়ী ইস্যুতে হুঁশিয়ারি উদয়নের
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় দু’মাস আগে ক্যাটারিংয়ের কাজের সন্ধানে হরিয়ানা গিয়েছিলেন দুই ভাই। সেখানেই থাকতেন। আর প্রতিমাসে উপার্জিত টাকা পাঠাতেন বসিরহাটে মায়ের কাছে। সেই টাকাতেই কোনও রকমে সংসার চলত। কিন্তু অভিযোগ, এক সপ্তাহ আগে হঠাৎই হরিয়ানা পুলিশ এসে তাঁদের আটক করে। আধার, ভোটার কার্ড দেখিয়েও লাভ হয়নি। স্থানীয়দের দাবি, তাঁরা বাংলায় কথা বলতেন। আর সেই কারণেই সন্দেহ করা হয় তাঁদের ‘বাংলাদেশি’ বলে। ৭০ বছরের বেশি বয়সি তসলিমা বিবি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ছেলেদের সঙ্গে শেষ কথা হয়েছিল পুলিশ তাঁদের হেফাজতে নেওয়ার পর। তারপর থেকে আর কোনও যোগাযোগ নেই। কোথায় রাখা হয়েছে তাঁদের, আদৌ কেমন আছেন, কিছুই জানেন না তিনি। তিনি ছেলেদের ফিরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।
ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। প্রতিবেশীদের অনেকের বক্তব্য, বাংলার গরিব শ্রমিকেরা ভিনরাজ্যে গিয়ে খেটে সংসার চালান। সেখানে ভাষার কারণে তাঁদের বাংলাদেশি বলে অপবাদ দিয়ে আটক করা হলে এক ভয়ঙ্কর অনিশ্চয়তার মুখে পড়তে হচ্ছে পরিবারগুলিকে। গ্রামের মানুষ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। তাঁদের প্রশ্ন, শুধুমাত্র বাংলায় কথা বললেই কি কেউ বাংলাদেশি হয়ে যায়? এভাবে বাংলার শ্রমিকদের আটক করলে তাঁদের জীবিকা ও জীবন দুটোই হুমকির মুখে পড়ছে। পরিবার ও স্থানীয় মহলের দাবি, অবিলম্বে রুবিকুল ও জাফরকে মুক্তি দিতে হবে এবং বাংলায় ফিরে আসার ব্যবস্থা করতে হবে।