রাজ্য রাজনীতি ফের উত্তপ্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্তার অভিযোগকে ঘিরে। দিল্লি, ওড়িশা সহ একাধিক বিজেপি-শাসিত রাজ্যে বাংলার শ্রমিকরা আক্রান্ত হচ্ছেন বলে অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আর এই ইস্যুকেই হাতিয়ার করে বিজেপিকে কড়া বার্তা দিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। তাঁর বক্তব্যে সরাসরি হুঁশিয়ারির সুর, যা ঘিরে নতুন করে তীব্র তরজা শুরু হয়েছে শাসক ও বিরোধী শিবিরে। (আরও পড়ুন: অযোগ্য শিক্ষকদের তালিকায় খানাকুলের দাপুটে তৃণমূল নেতার, নাম আছে তাঁর স্ত্রীরও)
আরও পড়ুন: শুভেন্দুর গাড়িতে হামলায় ধৃত সাত, ৪১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, রয়েছে উদয়নের নাম
উদয়ন গুহ এদিন বলেন, যে সমস্ত গ্রাম থেকে মানুষ বিজেপি-শাসিত রাজ্যে গিয়ে অত্যাচারিত হবে, সেই সমস্ত এলাকায় হুলিয়া জারি করতে হবে। যাতে বিজেপি কর্মীরা সেখানে ঢুকতে না পারে। এখানেই থামেননি তিনি। আরও একধাপ এগিয়ে ঘোষণা করেন, প্রয়োজনে সেইসব গ্রামে ১৪৪ ধারা জারি করে বিজেপির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করতে হবে। মন্ত্রী হিসেবে তাঁর এমন প্রকাশ্য মন্তব্যে মহলে ইতিমধ্যেই চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। (আরও পড়ুন: অযোগ্য শিক্ষকদের তালিকায় নাম তৃণমূল কাউন্সিলরের, কী বলছেন তিনি?)
তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি, ওড়িশা, কর্ণাটক এমন একাধিক বিজেপি-শাসিত রাজ্যে বাংলার শ্রমিকদের নিয়মিতভাবে হয়রানির ঘটনা ঘটছে। তাঁদের পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, বাংলা ভাষাভাষীদের ‘বাংলাদেশি’ বলে হেনস্তা করা হচ্ছে। বহু শ্রমিকের অভিযোগ, শুধু ভাষার কারণে তাঁদের কাজ থেকে বিতাড়িত করা হচ্ছে। এই ইস্যুতে ইতিমধ্যেই সংসদে সরব হয়েছেন তৃণমূল সাংসদরা।
যদিও বিজেপির তরফে এই অভিযোগকে একেবারেই ‘অবাস্তব গল্প’ বলে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কোচবিহার জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি বিরাজেন্দ্র বসু স্পষ্ট ভাষায় বলেন, বিজেপি চাই না কোনও পরিযায়ী শ্রমিক হয়রানির শিকার হোক। এমন ঘটনার খবর কোথাও নেই। আসলে তৃণমূলের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। তাই নির্বাচনের আগে এই ধরনের গল্প ফাঁদা হচ্ছে। বিরাজেন্দ্রর আরও দাবি, রাজ্যে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্যই উদয়ন গুহ এই ধরনের উসকানিমূলক মন্তব্য করছেন।
রাজনৈতিক মহলের মতে, উদয়ন গুহর বক্তব্যে কার্যত এক নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। এখন পর্যন্ত তৃণমূল মূলত শ্রমিক হেনস্তার ঘটনাকে সামনে এনে বিজেপি-শাসিত রাজ্যের বিরুদ্ধে সরব হচ্ছিল। কিন্তু কোনও মন্ত্রী প্রকাশ্যে গ্রামে গ্রামে বিজেপি কর্মীদের প্রবেশ বন্ধের ডাক দেবেন, এমন নজির বিরল। ফলে এই মন্তব্য ঘিরে বিজেপি যে আরও আক্রমণাত্মক হবে, সেটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।