রামপুরহাটের বগটুইয়ের নৃশংসতার রেশ কাটেনি। তারইমধ্যে নদিয়ার হাঁসখালিতে গুলিবিদ্ধ হলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা। প্রাথমিকভাবে তাঁকে শক্তিনগর হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছিল। পরবর্তীতে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে কল্যাণীর জওহরলাল নেহরু হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
বুধবার রাতে কাজ সেরে বাড়ি ফিরছিলেন সহদেব মণ্ডল। তাঁর স্ত্রী অনিমা হাঁসখালি পঞ্চায়েতের তৃণমূলের সদস্য। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, রাত আটটা নাগাদ মুড়াগাছা বাজারে পিছন থেকে এসে সহদেবকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুষ্কৃীতরা। চারদিক রক্তে ভেসে যেতে থাকে। দ্রুত তৃণমূল নেতাকে শক্তিনগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যায়। কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে ভরতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যদিও পরিস্থিতি বেগতিক হওয়ায় তাঁকে কল্যাণীর জওহরলাল নেহরু হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অনিমা।
সেই গুলি চালানোর ঘটনা নিয়ে যথারীতি রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে তৃণমূল এবং বিজেপির। ইতিমধ্যে গুলি চালানোর ঘটনায় বিজেপির ইন্ধন আছে বলে দাবি করেছেন তৃণমূলের রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা সভানেত্রী রত্না ঘোষ। তিনি জানিয়েছেন, কারা এবং কেন গুলি চালিয়েছে, তা নিয়ে তদন্ত করছে পুলিশ। যদিও তৃণমূলের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি। রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার দাবি করেন, তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের কারণে সহদেবের উপর গুলি চলেছে। রাজ্যে আইনের শাসন পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে বলে অভিযোগ করেন জগন্নাথ।
উল্লেখ্য, গত কয়েক সপ্তাহে রাজ্যে একাধিক জনপ্রতিনিধি, নেতা এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মী-সমর্থকদের উপর হামলা চালানো হয়েছে। পানিহাটির ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অনুপম মণ্ডল, ঝালদা পুরসভার দু'নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুকে গুলি করে খুন করেছে দুষ্কৃতীরা। তারপর সোমবার রাতে বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু শেখ খুন হন। তারপরেই তাণ্ডব শুরু হয় বগটুই গ্রামে। একাধিক বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। জীবন্ত পুড়ে মৃত্যু হয় ১০ জনের। তবে মৃতের সংখ্যা নিয়ে বিভিন্ন দাবি করা হচ্ছে। পুলিশের দাবি, আটজন মারা গিয়েছে। প্রাথমিকভাবে দমকল দাবি করেছিল, ১০ জনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে।