দক্ষিণ ২৪ পরগনার রাজনীতির মানচিত্রে ভাঙড় এক বিশেষ নাম। একসময় কংগ্রেস, পরে দীর্ঘদিন বামেদের দখলে থাকা এই এলাকা ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যের রাজনীতিকে অবাক করে দিয়েছিল। শাসক তৃণমূল বা প্রধান বিরোধী বিজেপি নয়, ভাঙড়ে জয় এসেছিল সদ্য আত্মপ্রকাশ পাওয়া আইএসএফের ঝুলিতে। নওশাদ সিদ্দিকির হাত ধরে রাজ্যের একমাত্র আসনটি আইএসএফের হাতে গিয়েছিল। এবার জল্পনা শুরু হয়েছে তাঁর দাদা পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকি নাকি ভোটে লড়তে পারেন।
আরও পড়ুন: নওশাদকে গ্রেফতারির প্রতিবাদে মুখ্যমন্ত্রীকে কুমন্তব্য, ভাঙড়ে ধৃত গৃহবধূ
উল্লেখ্য, ভাঙড়ের রাজনীতি শুধু নওশাদকে ঘিরেই সীমাবদ্ধ নয়। ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা, নওশাদের দাদা আব্বাস সিদ্দিকিও এ অঞ্চলের রাজনীতিতে এককালে ছিলেন দাপুটে মুখ। কিন্তু গত কয়েক বছরে তাঁকে তেমন সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যায়নি। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, এবার আব্বাস ফের ময়দানে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আর তাঁর সেই সম্ভাব্য প্রত্যাবর্তন ঘিরেই জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। শাসক তৃণমূলও বিষয়টিকে হালকা ভাবে নিচ্ছে না। ভাঙড় পুনর্দখলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত মোল্লাকে। রবিবার ভাঙড়ের কাঁঠালিয়া বাসস্ট্যান্ড থেকে শোনপুর সবজি বাজার পর্যন্ত আইএসএফ বিরোধী মিছিল করেন তিনি। মিছিল শেষে প্রকাশ্য সভা থেকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন আব্বাসকে।
শওকতের হুঁশিয়ারি, ‘আব্বাস সিদ্দিকি যেখানে দাঁড়াবে, আমি সেখানে দাঁড়াব। যদি ভাঙড়ে দাঁড়াও, আমিও ভাঙড়েই তোমার বিরুদ্ধে প্রার্থী হব। শুধু ভাঙড় নয়, বারুইপুর, ক্যানিং-সহ অন্য আসনেও একইভাবে তোমার মোকাবিলা করব।’ শওকতের এই বক্তব্যে স্পষ্ট, তৃণমূল এখনই প্রতিদ্বন্দ্বীর সম্ভাব্য প্রস্তুতির জবাব দিতে চাইছে। কারণ গত নির্বাচনে ভাঙড়ে আব্বাসই কার্যত তৃণমূলকে ঘায়েল করেছিলেন। যদিও শেষ পর্যন্ত নওশাদকেই প্রার্থী করা হয় এবং তাতে সফল হয়েছিল আইএসএফ। এবার আব্বাস নিজে নামলে পরিস্থিতি আরও তীব্র হতে পারে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
অন্যদিকে, ভাঙড়বাসীর মধ্যেও এই সম্ভাব্য মুখোমুখি লড়াই ঘিরে জল্পনা তুঙ্গে। অনেকেই বলছেন, নওশাদের পর আব্বাস নামলে আইএসএফের শক্তি দ্বিগুণ হবে। যদিও আব্বাস প্রার্থী হবেন কি না তা এখনও দলের তরফে নির্দিষ্টভাবে কিছু জানানো হয়নি।