দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে খুলে গেল তিলপাড়া ব্যারাজের উপর সেতু। রবিবার সকাল থেকেই জেলা প্রশাসনের অনুমতিতে ওই সেতুর উপর দিয়ে বাস চলাচল শুরু হয়েছে। মূলত চাকরিপ্রার্থী এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের সুবিধার কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায়। প্রশাসনের নির্দেশ অনুযায়ী, প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বাস চলতে পারবে ব্যারাজের উপর দিয়ে। এই নিয়ম কার্যকর থাকবে আগামী ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।
আরও পড়ুন: তিলপাড়া ব্যারাজে দ্রুতগতিতে সংস্কার, পুজোর আগেই ফের চালু হতে পারে যান চলাচল
গত ৯ আগস্ট থেকে তিলপাড়া ব্যারাজে জরুরি ভিত্তিতে সংস্কারের কাজ চলছিল। বর্ষার শুরুতেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়া ব্যারাজে সেচ দফতরের উদ্যোগে ডাউনস্ট্রিমে মেরামতির কাজ শুরু হয়। এক মাসের বেশি সময় ধরে নানা প্রতিকূলতার মাঝেও দিনরাত কাজ করে অবশেষে শনিবার শেষ হয় সংস্কার প্রক্রিয়া। সেচ দফতরের দাবি, কাজ শেষ হওয়ার ফলে ব্যারাজের বহনক্ষমতা আগের তুলনায় বেড়েছে। তবে ভারী পণ্যবাহী যানবাহন আপাতত চলাচল করতে পারবে কি না, তা নিয়ে এখনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, আপাতত নির্দিষ্ট গতিসীমা মেনে বাস চালাতে হবে। ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১০ কিলোমিটার গতিতে বাস চলতে পারবে ব্যারাজের উপর দিয়ে। নিরাপত্তার স্বার্থেই এই নিয়ম বেঁধে দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর বাস চলাচল অব্যাহত থাকবে কি না, সে বিষয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এদিকে, সেতু চালুর সিদ্ধান্তে খুশি বাস মালিক ও চালকেরা। তাঁদের মতে, দুর্গাপুজোর মরশুমে এই অনুমতি ভীষণভাবে উপকারে আসবে। বীরভূম জেলা বাস মালিক সমিতির সহ-সম্পাদক তন্ময় পৈতুণ্ডী বলেন, প্রশাসনের এই পদক্ষেপে স্বস্তি মিলেছে। তবে শুধু নির্দিষ্ট সময় নয়, সর্বক্ষণ বাস চলাচলের অনুমতি দেওয়া হোক। তাহলেই যাত্রীদের ভোগান্তি আরও কমবে।
প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, রাজ্য সেচ দফতরের বিশেষজ্ঞ দল খুব শিগগিরই তিলপাড়া ব্যারাজ পরিদর্শনে আসবে। সেই সঙ্গে বাঁধ বিশেষজ্ঞ জুলফিকার আহমেদের মতামতও নেওয়া হবে। তাঁদের রিপোর্টের ভিত্তিতেই আগামী দিনে সেতুর উপরে কোন কোন ধরনের যানবাহন চলাচল করতে পারবে, তা নির্ধারিত হবে। সংস্কার শেষ হতেই ফের জীবনের গতি ফিরেছে তিলপাড়ার সেতুতে। তবে আপাতত বাস চলাচলের ক্ষেত্রে সময় ও গতির সীমাবদ্ধতা থাকলেও, সাধারণ মানুষ ও যাত্রীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে আগের তুলনায় অনেকটাই।