নদিয়ার কালীগঞ্জের মোলান্দিতে তৃণমূল কংগ্রেসের বিজয় মিছিল থেকে ছোড়া বোমায় মৃত্যু হয়েছে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী তামান্না খাতুনের। ঘটনায় উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। পুলিশ ইতিমধ্যেই পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে, তাদের মধ্যে অন্যতম মূল অভিযুক্ত কালু শেখ। তার ছোঁড়া বোমাতেই মৃত্যু হয়েছে নাবালিকার। ঘটনার পর এলাকায় পৌঁছেছেন তৃণমূলের একাধিক নেতা। তবে এখনও পর্যন্ত নিহত নাবালিকার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেননি ওই এলাকার সদ্য নির্বাচিত তৃণমূল বিধায়ক আলিফা আহমেদ। এই প্রেক্ষিতে আজ তামান্নার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে কালীগঞ্জে যাচ্ছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার।
আরও পড়ুন: কালীগঞ্জে বোমায় নাবালিকার মৃত্যুতে ধৃত মূল অভিযুক্তের ছেলে, তুঙ্গে তরজা
বিজেপি সূত্রে জানা যাচ্ছে, আজ দুপুর ১ টা নাগাদ তামান্নার পরিবারের সঙ্গে দেখা করার কথা রয়েছে সুকান্তর। তবে বিজেপির অভিযোগ, সুকান্ত যাতে তামান্নার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে না পারেন তার জন্য পুলিশ ষড়যন্ত্র করছে। অভিযোগ, পুলিশ মামলার শুনানির অজুহাতে তামান্নার পরিবারকে আদালতে নিয়ে যেতে চাইছে। যদিও সুকান্ত মজুমদার স্পষ্ট জানিয়েছেন, পরিবারকে যেখানেই নিয়ে যাওয়া হোক না কেন, তিনি সেখানে পৌঁছে যাবেন। পুলিশ বাধা দিলে ‘প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা’ নেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
এদিকে বুধবার ঘটনাস্থলে গিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। তামান্নার মায়ের হাতে ক্ষতিপূরণের অর্থ দিতে গেলে সেই টাকা ফিরিয়ে দেন তিনি। সঙ্গে তামান্নার মা বলেন, ‘দয়া করে এইভাবে শোক দেখাতে আসবেন না।’ বিধায়কের এই পদক্ষেপে অস্বস্তিতে পড়েছে শাসক দল। দলকে না জানিয়ে পরিবারের সঙ্গে দেখা করা ও ক্ষতিপূরণের অর্থ দেওয়ার চেষ্টা করার জন্য হুমায়ুনকে শোকজ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
প্রসঙ্গত, মৃত তামান্নার পরিবার ২৪ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। বুধবার সকালে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের একটি তিন সদস্যের দল মোলান্দির বেলেপাড়া এলাকায় গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা মাটি, ক্ষতিগ্রস্ত বস্তু ও বোমার সকেটসহ একাধিক নমুনা সংগ্রহ করেছে। এলাকার কিছু ঘরের দেওয়ালে বিস্ফোরণের চিহ্নও পাওয়া গেছে। ফরেনসিক দলের একজন সদস্য জানিয়েছেন, পরীক্ষার পরই নিশ্চিত করে বলা যাবে কী ধরনের বিস্ফোরক ব্যবহৃত হয়েছিল। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে নিশ্চিত হয়েছে, বোমার আঘাতেই মৃত্যু হয়েছে তামান্নার।