নদিয়ার কালীগঞ্জের মোলান্দিতে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী তমান্না খাতুনের মৃত্যুর ঘটনায় আরও একজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বুধবার সকালে মোলান্দি শেখপাড়ার কাছ থেকে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে সারিফুল শেখ নামে এক যুবক। সে এই মামলার অন্যতম অভিযুক্ত আনোয়ার শেখের ছেলে। আজ তাকে কৃষ্ণনগর আদালতে তোলা হবে। পুলিশ সূত্রে খবর, সারিফুলকে সাতদিনের হেফাজতে চাইতে পারে তারা।
আরও পড়ুন: কালীগঞ্জে নাবালিকা মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার আরও ৩, মোট ৪, জানাল পুলিশ
এই নিয়ে ঘটনায় মোট গ্রেফতারির সংখ্যা দাঁড়াল পাঁচ। এর আগে সোমবার রাতেই ১২ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল চারজনকে। তাদের নাম আনোয়ার শেখ, মানোয়ার শেখ, কালু শেখ এবং আদর আলি শেখ। মঙ্গলবার ধৃতদের আদালতে পেশ করা হলে মানোয়ার শেখ ও কালু শেখকে পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত। অন্য দুই অভিযুক্ত আনোয়ার ও আদর আলিকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠানো হয়। ঘটনার সূত্রপাত সোমবার বিকেলে। কালীগঞ্জ উপ-নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ের পর এলাকায় বিজয় মিছিল বের করেন তৃণমূল কর্মীরা। অভিযোগ, মোলান্দি গ্রামে বিজয়ের আনন্দের মধ্যেই সিপিএম সমর্থক কয়েকজন গ্রামবাসীর বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয়। সেই বোমার আঘাতে গুরুতর জখম হয় চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী তমান্না খাতুন। কিছুক্ষণের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়। মর্মান্তিক এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় গোটা রাজ্যে।
নিহত তমান্নার বয়স খুবই অল্প এ কথা মাথায় রেখেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘটনার তীব্র নিন্দা করে পুলিশকে দ্রুত ও কঠোর পদক্ষেপের নির্দেশ দেন। তার পরেই তৎপর হয় জেলা পুলিশ। মোলান্দি গ্রামে এখনও সর্বত্র থমথমে পরিবেশ। অধিকাংশ বাড়ির দরজা বন্ধ, গলিতে টহল দিচ্ছে পুলিশ বাহিনী। কিছু কিছু বাড়ির দেয়ালে বোমার আঘাতের স্পষ্ট চিহ্ন। ঘটনাস্থলে বসানো হয়েছে পুলিশ পিকেট। তমান্নার নৃশংস মৃত্যুর পরে শোকস্তব্ধ গোটা মোলান্দি। সাধারণ মানুষ এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না, এমন নির্মম ঘটনা তাদের গ্রামের বুকে ঘটতে পারে। তৃণমূলও এই ঘটনায় নিজেদের সমস্ত বিজয় উৎসব বাতিল করেছে বলে জানা গিয়েছে। এই ঘটনায় আরও অনেকে জড়িত। তদন্তের গতি বাড়াতে স্থানীয়দেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তদন্তে নামানো হয়েছে ফরেনসিক টিমকেও।