সোমবার রাতের বৃষ্টিতে জলমগ্ন গোটা কলকাতা। কিন্তু এর দায় জন্য কারা দায়ী, সে কথা মঙ্গলবারই এক্স হ্যান্ডলে একটি পোস্ট করে জানিয়ে দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী তাঁর পোস্টে লেখেন, উত্তরপ্রদেশে প্রচুর জল রয়েছে। ডিভিসি জল ছেড়েছে। সে কারণেই বৃষ্টিতে কলকাতার হাল এমন শোচনীয়।
বহু পুজো প্যান্ডেল জলের তলায়
পুজোর আর দিন তিনেক বাকি। এর মধ্যেই প্রবল বৃষ্টিতে ভেসেছে সারা কলকাতা। উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতার মূল স্থানগুলিই জলের তলায়। বিপদে পড়েছে বিভিন্ন নামীদামী পুজো প্যান্ডেলও। উত্তর থেকে দক্ষিণের অধিকাংশ পুজো প্যান্ডেল জলের তলায় চলে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অনেকেই আঙুল তুলছে শহরের জলনিকাশী ব্যবস্থার দিকে। পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকেও জনসাধারণ কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে। কিন্তু সেইসব তত্ত্ব একপ্রকার খারিজ করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি এক্স হ্যান্ডেলে স্পষ্ট লিখে দিলেন ডিভিসি-সহ আর কোন কোন সমস্যার জন্য আজ কলকাতার এই হাল হল।
কী লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর পোস্টে লেখেন, ‘আকস্মিক দুর্যোগের আক্রমণে বিপর্যস্ত কলকাতা শহরের ও লাগোয়া কিছু এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য আমাদের সহকর্মীরা ও আধিকারিকরা সর্বত্র চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ডিভিসি-র একতরফা জল ছাড়ায় রাজ্য এমনিতেই প্লাবিত ছিল, নদী, খাল সব টইটম্বুর ছিল। ফারাক্কা ব্যারেজ দিয়ে আসছে বিহার, উত্তরপ্রদেশের প্রচুর জল, সেখানে ড্রেজিং না হওয়ায় সমস্যা তো ছিলই । তার ওপরে এল এই হঠাৎ বিপুল বৃষ্টি। আমি মেয়র, মুখ্যসচিব প্রমুখের মাধ্যমে পরিস্থিতির ওপর নজর রেখেছি, প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিচ্ছি।’
আরও পড়ুন - কন্ট্রোল রুম খুলল নবান্ন, বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত শহরের এইসব পুজো মণ্ডপগুলি
আরও পড়ুন - জলমগ্ন কলকাতার জেরে ভুগল ১০০ বিমান- Report, কী বলছে এয়ার ইন্ডিয়া, ইন্ডিগো?
স্কুল কলেজের ছুটি ঘোষণা
স্কুলকলেজগুলিকে ছুটিও দিয়ে দেন তিনি। লেখেন, ‘আমি বলেছি, আজ থেকে সরকারী সব স্কুল ছুটি থাকবে। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়েও আগামী দু-দিন ছুটি। বেসরকারী অফিস গুলি আগামী দু'দিন ওয়ার্ক ফ্রম হোম করুন। সরকারী অফিস-ও দুদিন ওয়ার্ক ফ্রম হোম করবে। মানুষকে বাঁচানোই এখন প্রাথমিক কাজ।’
CESC-র অবহেলা নিয়ে মন্তব্য
শহরে এই দিন বৃষ্টির কারণে যারা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গিয়েছেন, তাঁদের জন্য দুঃখপ্রকাশ করে মমত। সিইএসসি-র দায় উল্লেখ করে তিনি লেখেন, ‘আজ CESC-র অবহেলায় কলকাতায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে যাঁরা মারা গেলেন, তাঁদের পরিবারের জন্য আমাদের আন্তরিক সমবেদনা। মৃত্যুর কোনো ক্ষতিপূরণ হয়না, জীবনের কোন বিকল্প হয় না। তবুও আমরা প্রতি পরিবারের একজনের চাকরি নিশ্চিত করব। ক্ষতিপূরণ দিতে বলছি CESC কে-ও। আমি CESC-র সঙ্গে কথা বলেছি। আমাদের আন্তরিক সমবেদনার পাশাপাশি এই ক্ষতিপূরণ-ও পরিবারগুলির প্রাপ্য।’
কন্ট্রোল রুম খুলেছে নবান্ন
এই দিন তিনি কন্ট্রোল রুম খুলেছেন নবান্নে। সে কথাও উল্লেখ করেন তাঁর পোস্টে। তিনি লেখেন, ‘আমরা পাশে আছি, সব সময়, প্রতিটি মুহূর্তে। নবান্নে কন্ট্রোল রুম খুলেছি, আমি দেখছি। কন্ট্রোল রুম সারাক্ষণ খোলা আছে। ফোন নম্বর- 91-33-22143526/91-33-22535185. এ ছাড়াও টোল ফ্রি নম্বর- 91-8697981070’। প্রসঙ্গত, এই দিন তিনি আর কোনও পুজো উদ্বোধনে যাবেন না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন। পোস্টেও সেই কথা উল্লেখ করে দেন।