আদনান সামি পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত হলেও, তিনি ২০১৬ সালে ভারতীয় নাগরিকত্ব লাভ করেন। নিজের এবং পরিবারের নিরাপত্তার জন্য ভারত ছেড়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এরপর থেকে বহুবার তাঁর কথায় ভারত-প্রেম ধরা পড়েছে। পহেলগাঁও হামলার পরেও তিনি পাকিস্তান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে যখন তাঁকে পহেলগাঁও হামলার পর পাকিস্তানের শিল্পীদের বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন করা হয়, জবাব আসে, ‘রাজনীতি এক জিনিস আর জাতীয়তাবাদ আলাদা। একজন শিল্পী সবসময়ই একটি দেশের নাগরিক। সে রাজনীতিবীদ নাও হতে পারে, তবে দেশপ্রেমিক হতেই পারেন। আপনি বলতেই পারেন, 'শিল্পী কোনও বিশেষ রাজনৈতিক মতাদর্শের নাই হতে পারেন। ঠিক আছে, এটি বোধগম্য, আপনি তাদের জোর করতে পারেন না। কিন্তু একজন শিল্পী অবশ্যই নিজের দেশকে আগে রাখবে।'’
আদনান আরও বলেন, ‘জাতিকে প্রথমে রাখতে হবে। নিজের বাড়ি ও দেশের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। আপনি যে বাড়ির বাসিন্দা তার পাশে আপনাকে দাঁড়াতেই হবে। এবং এটিকে রক্ষা করতে হবে। আপনার দেশই আপনার বাড়ি। শেষ পর্যন্ত যদি লোকেরা আপনার বাসস্থান নষ্ট করতে আসে, তবে শিল্পী কি উঠে দাঁড়িয়ে লড়াই করবে না? আপনাকে বলতেই হবে, 'আরে তুমি আমার বাড়িতে গণ্ডগোল করবে না'। অনেকেই বলে শিল্পের কোনো সীমানা নেই। আমি দুঃখিত। শিল্পেরও সীমানা আছে। আপনি কি একজন শিল্পীকে যে কারও বাড়িতে থাকতে দেবেন? না, সে তো নিজের বাড়িতেই থাকবে। তুমি কখনোই বলতে পারো না, 'আমার বাড়ি আমার অধিকার, আমার দেশ নয়'। না সেরকম হয় না। তোমার দেশও তোমার বাড়ি। যে সমস্ত মানুষ দেশের হয়ে কথা বলে... আমি তাঁদের সম্মান করি।’
বর্তমান সময়ে শুধু পাকিস্তানের শিল্পীদের ভারতে নিষিদ্ধ করা হয়নি, সঙ্গে পাকিস্তানি কনটেন্টও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সেই প্রসঙ্গে আদনানের মত, ‘মূল বিষয় এই মুহূর্তে আমাদের দেশ, আমাদের বাড়িতে হুমকি দেওয়া হয়েছে, হামলা করা হয়েছে। তাই এই পরিস্থিতিতে আমাদের দেশের পাশে দাঁড়াতে হবে এবং আমাদের ঘরকে রক্ষা করতে হবে। তাই আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে অবস্থান নিতে হবে। ব্যক্তিগতভাবে, আমি বোর্ডিং স্কুল থেকে এসেছি। যাই ঘটুক না কেন, আমরা শিক্ষকদের বিরুদ্ধে একসঙ্গে দাঁড়াতাম, আমাদের সেই নীতি ছিল। কেউ বলতে পারে না শিল্পীরা এর ঊর্ধ্বে। কোনো শিল্পী যদি সরকারের কাছ থেকে নিজেদের রক্ষা প্রত্যাশা করেন, তাহলে তাদেরও দেশকে রক্ষার দায়িত্ব নিতে হবে। কেউ কেবল দাঁড়িয়ে বলতে পারে না যে, ‘আমরা আশা করি যে আপনি আমাদের নাগরিক হিসাবে আমাদের সুযোগ-সুবিধা দেবেন, কিন্তু যখন বাইরে লড়াই, হুমকির কথা আসে, তখন আপনি শুধু নিজের কথা ভাবতে পারেন না।’