সিঙ্গুর মামলায় টাটা গোষ্ঠীকে ৭৬৬ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছিলেন আরবিট্রেশন আদালতের বিচারক। সেই বিচারকের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিল রাজ্য সরকার। সেই মামলা খারিজ করে দিল শীর্ষ আদালত। শুধু তাই নয়, আদালতের ভর্ৎসনার মুখেও পড়তে হয় মমতার সরকারকে। এদিকে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, সিঙ্গুরে কারখানা না-হওয়ার জন্য টাটা মোটরসকে ৭৬৬ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার মামলাটি কলকাতা হাই কোর্ট শুনবে। আগামী ১২ অগস্ট বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়ের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হতে চলেছে। (আরও পড়ুন: বিহার নির্বাচনের প্রচারে মমতা? রাহুলের প্রস্তাবে কার্যত 'দিশাহীন' বঙ্গ কংগ্রেস)
আরও পড়ুন: বসিরহাটে তৃণমল নেতার হাতে হেনস্থার শিকার আইপ্যাকের ২ কর্মী, ছোড়া হয় চেয়ার
এর আগে ওয়েস্ট বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড ও টাটা মোটরসের মধ্যে মামলা মেটাতে আরবিট্রেটর নিয়োগ করেছিল শীর্ষ আদালত। তিন সদস্যের আরবিট্রেশন আদালতের একজনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্টতার অভিযোগ তোলে রাজ্য। প্রথমে হাইকোর্টে এই নিয়ে মামলা করা হয়েছিল। তা খারজি হয়ে যায়। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি পি নরসিমহা ও বিচারপতি অতুল এস চান্দুরকরের বেঞ্চে ওঠে মামলা। রাজ্যের হয়ে আইনজীবী কপিল সিব্বল দাবি করেন, আরবিট্রেটরদের মধ্যে এক বিচারক পক্ষপাতদুষ্ট ছিলেন। তাঁকে টাটাদের আমন্ত্রণে ১৫ বার নাগপুরে যেতে দেখা গিয়েছে। এই অভিযোগ উঠেছে সালিশি আদালতের সভাপতি তথা অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ভিএস সিরপুরকরের বিরুদ্ধে। (আরও পড়ুন: চিংড়িঘাটা মোড়ের যানজটের স্থায়ী সমাধান মিলবে জলদি, দাবি কলকাতা পুলিশ কমিশনারের)
আরও পড়ুন: এসি লোকালে শিয়ালদা থেকে দমদম যেতে পড়বে ৩৫ টাকা, টিকিট না কেটে উঠলে জরিমানা কত?
এদিকে টাটার পক্ষে এদিন সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করেন মুকুল রোহতগি। তিনি বলেন, 'একজন বিচারপতির বিরুদ্ধে কীভাবে এই ধরনের অভিযোগ করা যায়?' পরে নিজের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আদালতে বেশ কিছু নথি জমা দিয়েছিলেন কপিল সিব্বল। যা দেখে আদালত বলে, 'যদি কোনওভাবে বোঝা যায় যে, এই দাবি অন্যায্য। তবে রাজ্যকে বড় জরিমানা করা হবে।' এরপরই কপিল সিব্বল সেই সব নথি ফেরত নিয়ে নিতে চান। পরে রাজ্যের আবেদন খারিজ করে দেয় আদালত।
উল্লেখ্য, টাটা মোটরসকে ৭৬৫.৭৮ কোটি টাকা দিতে বলেছে ট্রাইব্যুনাল। ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে পুরো ক্ষতিপূরণ না মেটানোর পর্যন্ত তার ওপর ১১ শতাংশ হারে সুদ দিতে বলা হয়েছে রাজ্যকে। তবে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ভিএস সিরপুরকরের বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্ট হওয়ার অভিযোগ তুলে সেই রায় খারিজের আবেদন জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য। তবে হাইকোর্টে সেই আবেদন খারিজ হয়। এরপর সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতির বিরুদ্ধে করা রাজ্যের অভিযোগ খারিজ হয়ে গেল। এখন হাইকোর্টে ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত মামলাটি চলবে।