ফের কি উত্তরবঙ্গে সক্রিয় হচ্ছে কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজেশন বা কেএলও। মূলত রাজ্যের বিভিন্ন অংশে যখন জঙ্গি সন্দেহে একের পর এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হচ্ছে, সেই পরিস্থিতিতে নতুন করে কেএলওর মাথা চাড়া দেওয়ার সম্ভাবনা স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
বাম জমানায় একাধিক রক্তক্ষয়ী কর্মসূচি, অতর্কিতে হামলা, ব্যবসায়ী অপহরণ, নাশকতামূলক কাজের পেছনে কেএলওর হাত ছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল। পৃথক কামতাপুরী রাজ্যের দাবিতে আন্ডারগ্রাউন্ডে থেকে কীভাবে আন্দোলনকে জঙ্গি রূপ দেওয়া যায় তার কালো অধ্য়ার রচিত করেছিল এই কেলএও সংগঠন। এদিকে বাংলায় যখন একের পর এক জঙ্গির নাম সামনে আসছে তখন কি ফের সুযোগ বুঝে ফোঁস করার চেষ্টা করছে কেএলও?
এসবের মধ্যেই গত ৯ ডিসেম্বর কোচবিহারে একটি মিছিল বের হয়েছিল। গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের একটি গোষ্ঠী ও কামতাপুর স্টেট ডিমান্ড কাউন্সিলের উদ্যোগে এই মিছিল বের হয়েছিল বলে খবর। সেই মিছিল চিন্তা বাড়়িয়েছে গোয়েন্দাদের। ইতিমধ্যেই সেই মিছিল সংক্রান্ত ব্যাপারে ১০জনকে পুলিশ জেরা করেছে বলে সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর। সূত্রের খবর, সেদিন উত্তরবঙ্গ ছাড়াও নিম্ন অসম থেকেও প্রচুর লোকজনকে আনা হয়েছিল। তারা দলে দলে জড়ো হয়েছিলেন কোচবিহারে। মূল দাবি পৃথক রাজ্য।
এদিকে এর আগেই সন্দেহ করা হচ্ছিল একাধিক সমমনোভাবপন্ন জঙ্গি সংগঠন নিজেদের মধ্য়ে সমণ্বয় রেখে কাজ করছে। ফের একটা অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে কি না সেটাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তবে যেভাবে কেএলও চিফ জীবন সিংহের বার্তাকে সামনে রেখে, জীবন সিংহের নামে জয়ধ্বনি দিয়ে মিছিল বের করা হয়েছিল তা একেবারেই ভালো চোখে দেখছে না পুলিশ।
এর পেছনে আসলে মতলবটা কী সেটাই খতিয়ে দেখার চেষ্টা করছে পুলিশ। কোথাও গোপন বৈঠক হচ্ছে কি না, কোথাও তলায় তলায় জঙ্গি কার্যকলাপের সলতে পাকানো হচ্ছে কি না সেটা খতিয়ে দেখার চেষ্টা করছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই গোয়েন্দা মারফৎ খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।
সূত্রের খবর, মাঝেমধ্যে গোপন ডেরা থেকে নানারকম বার্তা দেন জীবন সিংহ। সেই ভিডিয়ো নানা ভাবে প্রকাশ্যে আনা হয়। তবে এবার একেবারে জীবন সিংহের নাম করে মিছিল বের করার ঘটনা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। তবে কি ফের উত্তরবঙ্গকে অশান্ত করার ছক তৈরি হচ্ছে? তবে কি ফের পৃথক রাজ্যের দাবিকে সামনে রেখে ধসে যাওয়া সংগঠনকে চাঙা করার চেষ্টা হচ্ছে? কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি জেলার পুলিশ ইতিমধ্যেই এনিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। এনিয়ে বিশেষ টিম গড়েও গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।