কৃষিকাজের জন্য গরু কিনে বাড়ি ফেরার সময় রাস্তার মাঝেই বয়স্ক বাসিন্দাদের গলায় ও হাতে দড়ি বেঁধে কান ধরে হাঁটানো হয়। সেইসঙ্গে মারধর করার অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় বিভিন্ন মহল থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া আসতে শুরু করে। সেই ঘটনায় অভিযুক্ত আরও দু’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতদের নাম কিরণ মান ও বাসুদেব বাদ্যকর। তাঁরা বিজেপি কর্মী বলে জানা গিয়েছে। রবিবার তাঁদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁদের চারদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন দুর্গাপুর আদালতের বিচারক। কিন্তু এখনও অধরা মূল অভিযুক্ত বিজেপি যুব মোর্চার রাজ্য কমিটির সদস্য পারিজাত গঙ্গোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন:মন্দিরের সামনে থেকে ষাঁড় চুরি রুখতে গিয়ে 'খুন' পুলিশের চালক, জখম ২ পুলিশকর্মী
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরের গ্যামেন ব্রিজ এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। বাঁকুড়ার আশুড়িয়া হাট থেকে গরু কিনে ফিরছিলেন জেমুয়া গ্রামের তিন বাসিন্দা। অভিযোগ, রাস্তায় তাঁদের গাড়ি আটকায় পারিজাত ও তাঁর অনুগামীরা। প্রথমে চাষিদের বেধড়ক মারধর করা হয়। এরপর গরুর দড়ি দিয়েই তাঁদের হাত ও গলা বেঁধে দেওয়া হয়। তারপর কান ধরিয়ে রাস্তায় হাঁটানো হয় তাঁদের। ঘটনার ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়, যার পর নিন্দার ঝড় ওঠে নানা মহলে। শুক্রবার রাতে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শনিবার ধরা পড়ে আরও দু’জন। রবিবার জালে ধরা পড়ে কিরণ ও বাসুদেব। কিন্তু চার দিন কেটে গেলেও অধরা পারিজাত। বিষয়টি ঘিরে রাজনীতিও তুঙ্গে। আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি শনিবার জেমুয়ায় গিয়ে আক্রান্তদের সঙ্গে দেখা করেন। রবিবার তাঁদের পাশে দাঁড়ান সিপিএম ও কংগ্রেস নেতারাও।
সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক বিপ্রেন্দু চক্রবর্তী বলেন, এমন অমানবিক ঘটনা দুর্গাপুরে আগে হয়নি। পুলিশ কীভাবে পারিজাতকে ধরতে পারছে না, তা বিস্ময়কর। তৃণমূল-বিজেপির আঁতাতের ফল এটা। একই সুর কংগ্রেস জেলা সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তীর গলাতেও। তিনি বলেন, পারিজাতের গ্রেফতারি না হলে স্পষ্ট হবে দুই দলের বোঝাপড়া রয়েছে। তৃণমূল জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী জানান, পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, দোষী কেউই ছাড় পাবে না। পারিজাত বিজেপি নেতাদের আশ্রয়ে রয়েছে। এদিকে বিজেপির চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় পাল্টা দাবি করেন, অপরাধীরা শাস্তি পাক, কিন্তু নির্দোষ কর্মীদের হয়রানি হলে বিজেপি আন্দোলনে নামবে। পুলিশের পক্ষ থেকে এসিপি সুবীর রায় জানান, অভিযুক্তদের খোঁজে জোরদার তল্লাশি চালানো হচ্ছে। যে কোনও মূল্যে দোষীদের গ্রেফতার করা হবে।