‘অপারেশন সিঁদুর’ দেখে দেশবাসীর মনে একটা আনন্দ শুরু হয়েছে। কারণ পাকিস্তান মদতপুষ্ট জঙ্গিরা পহেলগাঁওতে নির্মম হামলা চালিয়েছিল। যার প্রতিশোধ নেওয়া গিয়েছে আজ। পাকিস্তানকে দেখিয়ে দিয়েছে ভারতের সঙ্গে লাগলে তার ফল কেমন হয়। পাল্টা প্রত্যাঘাতে পাকিস্তান এখন দিশেহারা। এই ঘটনার পর রাজ্যজুড়ে মিষ্টি বিতরণ শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক নেতা–নেত্রী থেকে শুরু করে বিশিষ্ট নাগরিকরা এক্স হ্যান্ডেলে খুশি প্রকাশ করছেন। কিন্তু বিপরীতে আরও দুচিন্তায় রয়েছেন পাকিস্তানে আটকে থাকা বিএসএফ জওয়ান পূর্ণম কুমার সাউয়ের স্ত্রী ও জওয়ানের পরিবার। এবার কি পূর্ণমকে ছাড়বে পাকিস্তান? মনের অন্তরে ডুগরে উঠেছে প্রশ্ন।
এদিকে মঙ্গলবার মাঝরাতে পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের জঙ্গি ঘাঁটিতে অতর্কিতে হামলা চালাল ভারতীয় সেনাবাহিনী। ‘অপারেশন সিঁদুর’ নাম দিয়ে নিকেশ করা হয়েছে মোট ৯টি সন্ত্রাসবাদী ডেরাকে। নির্ভুল প্রত্যাঘাতে পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার বদলা নিল ভারতীয় সেনাবাহিনী। এই হামলায় কমপক্ষে ১০০ জঙ্গিকে নিকেশ করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। পূর্ণমকে ছাড়াতে বিএসএফের ডিজিকে ফোন করে ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর বিএসএফ কর্তারা বাড়ি আসেন পূর্ণমের। কিন্তু তারপরও ছাড়া পায়নি রিষড়ার জওয়ান।
আরও পড়ুন: ‘ভারতীয় সেনাবাহিনীকে কুর্নিশ’, অপারেশন সিঁদুরে এয়ার স্ট্রাইকের বিপরীত স্ট্যান্ড পয়েন্ট তৃণমূলের
অন্যদিকে বারবার পাকিস্তানের সঙ্গে ফ্ল্যাগ মিটিং হয়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনীর। তার পরও পাকিস্তান ছাড়েনি পূর্ণম কুমার সাউকে। অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রজনী ছুটে গিয়েছিলেন পাঠানকোট। কিন্তু ফিরিয়ে আনতে পারেনি স্বামীকে। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে নানা চেষ্টা করা হচ্ছে তাঁকে বলা হলেও মন মানেনি। আর আজকের ‘অপারেশন সিন্দুর’ ঘটে যাওয়ার পর চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন স্ত্রী রজনী সাউ। পূর্ণমের স্ত্রী রজনী স্বামীর চিন্তায় দু চোখে জল নিয়ে বলেন, ‘এখন আর আশা দেখছি না। যুদ্ধ বেঁধে গিয়েছে। এখন পাকিস্তান আর হয়তো ছাড়বে না।’
এছাড়া বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একদিন আগেই মুর্শিদাবাদ থেকে কেন্দ্রের উপর চাপ বাড়িয়ে বলেছিলেন, পূর্ণম সাউকে দেশে ফেরাতেই হবে। তাতেও খানিকটা ভরসা পেয়েছিলেন রজনী সাউ। এখন পূর্ণম সাউয়ের বাবা–মা এবং স্ত্রী চরম উৎকণ্ঠায় রয়েছেন। কারণ পাকিস্তানকে কড়া জবাব দিয়েছে ভারত। এবার রজনী সাউ চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে তাঁর অসহায় অবস্থার কথা জানাতে। ইতিমধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক বিবেক গুপ্তা এসেছিলেন রিষড়ায় জওয়ানের বাড়িতে। তাঁর মাধ্যমেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চান স্ত্রী রজনী বলে সূত্রের খবর।