বকেয়া পাক্ষিক মজুরি ঘিরে ফের অশান্ত চা বাগান এলাকায়। শ্রমিক অসন্তোষের জেরে বন্ধ হয়ে গেল উত্তরবঙ্গের আরও একটি চা বাগান। শ্রমিকদের বিক্ষোভে হেনস্তার শিকার হলেন ম্যানেজার। আর তার জেরেই শুক্রবার বন্ধ হয়ে গেল জলপাইগুড়ির নাগরাকাটার বামনডাঙা চা বাগান। তারফলে কাজ হারালেন প্রায় ১,১৫৭ জন শ্রমিক।
আরও পড়ুন: ১০ বছর পর ফের চালু জলপাইগুড়ি চা নিলাম কেন্দ্র, শুরুতেই ব্যাপক সাড়া, চলবে ১১ দিন
ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার। ঠিক সময়মতো মজুরি না মেলায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন শ্রমিকেরা। বাগান চত্বরে পৌঁছলে ম্যানেজার মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীর গাড়ি আটকে ঘিরে ধরেন তাঁরা। পরে তাঁকে গাড়ি থেকে নামিয়ে প্রায় ছয় কিলোমিটার হাঁটিয়ে অফিস পর্যন্ত নিয়ে আসেন শ্রমিকরা। এর পর থেকেই ম্যানেজার ও অন্যান্য কর্মীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে থাকেন। শুক্রবার সকালে বাগান মালিক ঋত্তিক ভট্টাচার্য সাংবাদিকদের জানান, ম্যানেজারকে গাড়ি থেকে বের করে হাঁটানো হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কর্মীরা নিরাপদ বোধ করছেন না। তাই বাধ্য হয়ে ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’-এর নোটিস জারি করা হয়েছে। একই সুর ম্যানেজারের গলাতেও। তাঁর কথায়, বাগানের আর্থিক অবস্থা খারাপ হলেও এতদিন নিয়মিত বেতন দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু এই ঘটনায় কর্মীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
অন্যদিকে শ্রমিকদের দাবি, বকেয়া মজুরি না পেয়ে ক্ষোভ দেখানো ছাড়া তাঁদের আর কোনও উপায় ছিল না। এক শ্রমিক জানান, দিনের পর দিন প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু মজুরি মেটানো হচ্ছে না। ক্ষোভ থাকা স্বাভাবিক। আর এক শ্রমিক জানান, ম্যানেজারকে হাঁটানো হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু তাঁকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করা হয়নি। এ নিয়ে হস্তক্ষেপ করেছে শ্রম দফতরও। জলপাইগুড়ি জেলা উপশ্রম আধিকারিক শুভাগত গুপ্ত জানান, বাগান পুনরায় চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। আগামী ১ সেপ্টেম্বর মালিকপক্ষ, শ্রমিক প্রতিনিধি ও প্রশাসনের মধ্যে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকা হয়েছে। তবে আপাতত অচলাবস্থার জেরে শ্রমিক পরিবারগুলো নতুন করে অনিশ্চয়তার মুখে পড়ল।