বাল্যবিবাহ রুখতে এবার নতুন নির্দেশিকা জারি করল প্রশাসন। আগামিদিনে কোনও বিয়েতে কাজ করতে গেলে ক্যাটারার ও ডেকরেটরদের পাত্র ও পাত্রী উভয়ের আধার কার্ড সংগ্রহ করতে হবে। শুধুমাত্র কার্ড সংগ্রহ করলেই হবে না, বয়সও যাচাই করে নিতে হবে ঠিকমতো। সেক্ষেত্রে কন্যার বয়স যদি ১৮-এর নিচে কিংবা পাত্রের বয়স ২১ বছরের কম হয়, তাহলে বিয়ে আটকে দিতে হবে। পাশাপাশি ব্লক প্রশাসনকে সঙ্গে সঙ্গে খবর দিতে হবে সংশ্লিষ্ট পক্ষকে। এমনই নির্দেশিকা জারি করেছে মালদা জেলা প্রশাসন।
আরও পড়ুন: নাবালিকার বিয়েতে ভোজ খেতে গেলেও ঠাঁই হতে পারে শ্রীঘরে, কঠোর পথে প্রশাসন
মালদার জেলাশাসক নীতিন সিঙ্ঘানিয়া জানিয়েছেন, এখন থেকে যেসব ডেকরেটর ও ক্যাটারিং সংস্থা বিয়ের কাজ করবেন, তাদের জন্য আধার কার্ড যাচাই বাধ্যতামূলক। নাবালক বা নাবালিকা পাত্রপাত্রীর বিয়ে করালে শুধু পরিবার নয়, বিয়েতে যুক্ত সমস্ত পক্ষের ডেকরেটর ও ক্যাটারারদের বিরুদ্ধেও এফআইআর দায়ের করা হবে। জানুয়ারি থেকে মে, মাত্র পাঁচ মাসেই মালদহে প্রায় ৩০০ নাবালিকা বিয়ের খবর এসেছে প্রশাসনের কাছে। যদিও এর মধ্যে একশোরও বেশি বিয়ে শেষমেশ বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে। বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে কন্যাদের উদ্ধার করে সিডব্লিউসি-র মাধ্যমে সেফ হোমে পাঠানো হয়েছে। তবে প্রশাসন সূত্রে খবর, এত সংখ্যক ঘটনা সত্ত্বেও অভিযোগ দায়ের হয়েছে হাতে গোনা কিছু ক্ষেত্রে।
জেলার এক প্রশাসনিক কর্তা জানিয়েছেন, এতদিন ধরে প্রচার চালালেও কার্যত তার সুফল মিলছিল না। এবার তাই আইনের কড়াকড়ি প্রয়োগই একমাত্র উপায়। তিনি জানান, শহর থেকে গ্রাম, সর্বত্র মাইকিং চলছে। স্কুল, ব্লক ও পঞ্চায়েত স্তরে চলছে সচেতনতা অভিযান। তবে এখন থেকে প্রচারের পাশাপাশি হবে কঠোর আইনি ব্যবস্থা। আইন বলছে, বিয়েতে যে বা যারা উপস্থিত থাকবে, তারা নাবালক বা নাবালিকার বিয়েতে সহায়তা করলে সবার বিরুদ্ধেই মামলা রুজু করা যাবে। ‘চাইল্ড ম্যারেজ প্রিভেনশন অ্যাক্ট’-এর সমস্ত ধারা অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। কন্যাশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে কিছুটা রাশ টানা গেলেও তা যথেষ্ট নয়, এমনটাই মত আধিকারিকদের।