দলের সিদ্ধান্তের তোয়াক্কা না করেই অঞ্চল স্তরে নেতৃত্বে রদবদল ঘটিয়ে বিপাকে পড়লেন তৃণমূল নেতা। নেতার এই পদক্ষেপ ঘিরে প্রবল অস্বস্তিতে পড়েছেন জেলা নেতৃত্ব। অঞ্চল সভাপতিকে রদবদলের জন্য নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গকে শোকজ করতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সূত্রের খবর, আজ শনিবারই সেই প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে।
আরও পড়ুন: বাগদায় সিএএ-তে নাগরিকত্বের আবেদন সংগ্রহের ক্যাম্প বিজেপির, সরব তৃণমূল
জানা যাচ্ছে, ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার সন্ধ্যায়। ভেকুটিয়া অঞ্চলের তৃণমূল নেতা রাখহরি ঘড়ার হাতে অঞ্চল সভাপতির নিয়োগপত্র তুলে দেন বাপ্পাদিত্য নিজেই। অথচ এই রদবদলের কোনও অনুমোদন ছিল না দলের উপরমহলের তরফে। জেলা সভাপতি সুজিত রায় স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছিলেন, ব্লক সভাপতিদের নাম চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত অঞ্চল পর্যায়ে কোনও রদবদল করা যাবে না। তবুও বাপ্পাদিত্য নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন। তার জেরে তৃণমূলের অন্দরেই তৈরি হয়েছে ক্ষোভ। দলীয় সহ সভাপতি শেখ আব্দুল আলিম আলরাজি সাফ জানিয়ে দেন, এই সিদ্ধান্তে দলের সায় নেই। এমনকী জেলা নেতৃত্বও প্রকাশ্যে বিরোধিতা করে বলেছে, এই পরিবর্তনকে তৃণমূল কংগ্রেস স্বীকৃতি দেবে না। এই ঘটনায় সামনে এসেছে তৃণমূলের অন্দরের দ্বন্দ্ব।
জানা যাচ্ছে, ২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকে ভেকুটিয়ার অঞ্চল সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন কাঞ্চন দাস। ২০২৩ সালে তিনি গোটা অঞ্চল দায়িত্বে আসেন। তবে সেই সময় থেকেই কিছু নেতা-কর্মীর সঙ্গে তাঁর বনিবনা ছিল না বলে জানা যায়। সম্প্রতি কাঞ্চনবাবুর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে ব্লক সভাপতির কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেন অঞ্চল নেতৃত্বের একাংশ। চিঠিতে অঞ্চল তৃণমূলের সহ সভাপতি, পঞ্চায়েত সদস্য থেকে শুরু করে যুব সংগঠনের সভাপতিরাও নাম লেখান। অবশ্য কাঞ্চন শিবিরের অভিযোগ, এই বিদ্রোহ ছিল সাজানো নাটক। ব্লক সভাপতির সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার কৌশল নেওয়া হয়েছিল।
এই ঘটনার পরই জেলা তৃণমূল সভাপতি সুজিত রায় সাফ জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে অঞ্চল স্তরে কোনও রদবদল মেনে নিচ্ছে না দল। সামনেই ব্লক স্তরে নেতৃত্বের নাম ঘোষণা হবে। তার আগে কেউ যদি নিজের পছন্দের লোক বসিয়ে দেন, তা দলের নিয়মের পরিপন্থী। যদিও বাপ্পাদিত্য গর্গের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। অন্যদিকে, নবনিযুক্ত অঞ্চল সভাপতি রাখহরি ঘড়া বলেন, সংগঠনকে শক্তিশালী করতেই তাঁকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।