এবার এইচ১বি ভিসা এবং গ্রিনকার্ড নীতিতে রদবদল আনতে চলেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। মঙ্গলবার এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লুটনিক।তিনি এইচ১বি ভিসা কর্মসূচিকে 'একটি প্রতারণা' বলে উল্লেখ করেছেন। তাঁর মতে, এই প্রক্রিয়া মার্কিন শ্রমিকদের চাকরি থেকে বঞ্চিত করছে। আর এরপরেই ঘুম উড়ে গিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী ভারতীয়-সহ লক্ষ লক্ষ বিদেশি কর্মী ও পড়ুয়াদের।
এক্স বার্তায় মার্কিন বাণিজ্য সচিব বলেন, 'বর্তমান এইচ১বি ভিসা সিস্টেম একটি স্ক্যাম যা বিদেশি কর্মীদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চাকরির সুযোগ দেয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংস্থাগুলিতে চাকরির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কর্মীদেরই অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত। এখনই সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের নিয়োগ করার।' ফক্স নিউজকে এক সাক্ষাৎকারে হাওয়ার্ড লাটনিক গ্রিন কার্ডধারীদের মধ্যে বেতন বৈষম্যকে এই পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তার যুক্তি হিসেবে উল্লেখ করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, 'আমি এইচ১বি প্রোগ্রাম পরিবর্তনে যুক্ত। আমরা গ্রিন কার্ডও পরিবর্তন করতে যাচ্ছি। গড়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা বছরে ৭৫ হাজার মার্কিন ডলার উপার্জন করেন। গড় গ্রিন কার্ডধারীরা আয় করেন বছরে ৬৬ হাজার মার্কিন ডলার। কেন আমরা এটি করছি? এটির জবাব দেবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামীতে আসছে ‘গোল্ড কার্ড।' ইতিমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য আমরা সেরা মানুষদের বাছাই প্রক্রিয়া শুরু করেছি।'
আরও পড়ুন-দিনে ১০ ঘণ্টা ডিউটি! বড় সিদ্ধান্তের পথে মহারাষ্ট্র সরকার, মাথায় হাত কর্মীদের
ভিসা প্রক্রিয়ায় প্রস্তাবিত পরিবর্তন এইচ১বি লটারির ব্যবস্থা বাতিল করা এবং বেতন-ভিত্তিক ভিসা বরাদ্দ যেখানে বেশি উপার্জনকারীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়, এমন ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।এই পরিবর্তনগুলি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ভারতীয় কর্মী ও পড়ুয়াদের প্রভাবিত করতে পারে, যারা এইচ১বি ভিসার বরাদ্দ ধারাবাহিকভাবে ৭০ শতাংশ শেয়ার দেখিয়েছে।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসায়িক প্রয়োজনে যাওয়ার জন্য বি১ ভিসা প্রয়োজন হয়। আর বেড়াতে যাওয়ার ক্ষেত্রে বি২ ভিসা প্রয়োজন। পরিবারের সদস্য বা বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে, কিংবা চিকিৎসার প্রয়োজনে সে দেশে যেতে গেলে বি২ ভিসারই প্রয়োজন হয়।অন্যদিকে, গ্রিন কার্ড হল অনাবাসীদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী বসবাসের ছাড়পত্র।
আরও পড়ুন-দিনে ১০ ঘণ্টা ডিউটি! বড় সিদ্ধান্তের পথে মহারাষ্ট্র সরকার, মাথায় হাত কর্মীদের
গত জানুয়ারিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিদেশি কর্মী ও পড়ুয়াদের জন্য নিয়ম কঠোর করেছে। এই বছরের শুরুতে সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিস (সিআইএস) যা হাজার হাজার অভিবাসীকে ভিসা-সম্পর্কিত সহায়তা দিত তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তারপর গত মার্চে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স জানান, গ্রিন কার্ড নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনির্দিষ্টকাল থাকতে পারবেন না অভিবাসীরা। এরপরে সত্যিই যদি কোনও সংস্কার হয় সবচেয়ে বড় ধাক্কা খাবে ভারত। ২০২৩ অর্থবর্ষে অনুমোদিত এইচ১বি ভিসার ৭২ শতাংশই ভারতীয়দের জন্য ছিল। সেখানে চিনের পরিসংখ্যান মাত্র ১১.৭ শতাংশ ছিল।