অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলাঙ্গানার পর এবার বড় সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে মহারাষ্ট্র সরকার।এবার থেকে মহারাষ্ট্রে বেসরকারি ক্ষেত্রে কর্মরতদের দিনে ১০ ঘণ্টা কাজ করতে হতে পারে। দৈনিক কাজের সময় বৃদ্ধির বিষয়ে ইতিমধ্যে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে দেবেন্দ্র ফড়নবিশের সরকার।
মহারাষ্ট্রে বেসরকারি ক্ষেত্রে দৈনিক কর্মঘন্টা বাড়ানো হলে সেক্ষেত্রে ২০১৭ সালের এ সংক্রান্ত আইন পরিবর্তন করা হবে। মহারাষ্ট্র সরকারের ভাবনায় রয়েছে, একটানা ছ’ঘণ্টা কাজ করলে মিলবে আধঘণ্টার অবসর। দোকান, হোটেল, বিনোদন জগত-সহ একাধিক ক্ষেত্রে কর্মরতরা এর আওতায় পড়বেন। মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে রাজ্য শ্রম দফতর এই সংক্রান্ত বিষয় উপস্থাপন করে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এইচটি-কে জানিয়েছেন যে এই বিষয়ে আলোচনা চলাকালীন, মন্ত্রিসভা প্রস্তাবটি সম্পর্কে আরও স্পষ্ট জানতে চেয়েছেন।জানা গেছে, শ্রম দফতর ২০১৭ সালের আইনে প্রায় পাঁচটি বড় পরিবর্তন আনতে চাইছে, যার মধ্যে অন্যতম হল কাজের সময় বৃদ্ধি। এই আইনের ১২ ধারার প্রস্তাবিত সংশোধনীতে বলা হয়েছে, 'কোনও প্রাপ্তবয়স্ক কর্মীকে কোনও প্রতিষ্ঠানে দিনে ১০ ঘন্টার বেশি কাজ করতে দেওয়া হবে না বা অনুমতি দেওয়া হবে না।' অতিরিক্তভাবে, প্রস্তাব করা হয়েছে যে একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিকে কেবল তখনই ছয় ঘন্টার বেশি কাজ করার অনুমতি দেওয়া হবে যদি সেই সময়ের মধ্যে আধ ঘন্টা বিরতি অন্তর্ভুক্ত থাকে। বর্তমানে, একজন কর্মচারীর দীর্ঘতম সময় হল পাঁচ ঘন্টা।
আরও পড়ুন-'মর্মান্তিক এবং অত্যন্ত দুঃখজনক!' গাজায় সাংবাদিক হত্যায় কড়া প্রতিক্রিয়া ভারতের
বর্তমানে শ্রম দফতর তিন মাসে একজন কর্মীর ওভারটাইমের সময় ১২৫ থেকে বাড়িয়ে ১৪৪ ঘন্টা করার প্রস্তাব করেছে। অন্যদিকে, দিনে সর্বোচ্চ কর্মঘণ্টা ১০.৫ ঘন্টা (ওভারটাইম সহ), যা ১২ ঘন্টা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। জরুরি কাজের ক্ষেত্রে প্রতিদিন সর্বোচ্চ কর্মঘণ্টা যা ১২ ঘন্টা ছিল, তা অপসারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই আইনের ধারাগুলি ২০ বা তার বেশি কর্মী নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। বর্তমানে, এই আইনটি ১০ বা তার বেশি কর্মী নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
আরও পড়ুন-'মর্মান্তিক এবং অত্যন্ত দুঃখজনক!' গাজায় সাংবাদিক হত্যায় কড়া প্রতিক্রিয়া ভারতের
উল্লেখ্য, চলতি বছর জুন মাসে অন্ধ্রপ্রদেশের কর্মচারীদের ন্যূনতম ১০ ঘন্টা করে দৈনিক কাজ করার ঘোষণা করে সরকার। আগে এই সময় ছিল ৯ ঘন্টা। পাশাপাশি মহিলাদের জন্য রাতে কাজের সুবিধা দেওয়া হয়েছে নয়া নিয়মে। সরকারের দাবি, নতুন আইনের ফলে রাজ্যে বিনিয়োগের পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পাবে। তবে এই পদক্ষেপ নিয়ে দেশজুড়ে শুরু হয় তীব্র বিতর্ক ও সমালোচনা। এরপরেই দৈনিক কাজের সময় বাড়ানোয় অনুমতি দেয় তেলাঙ্গনা সরকারও। আট বা ৯ ঘণ্টা নয়, তেলাঙ্গনায় দৈনিক সর্বোচ্চ কাজের সময় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ ঘণ্টা। অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার লক্ষ্যেই দৈনিক কাজের সময় বৃদ্ধির অনুমতি দেয় রাজ্য সরকার। তবে এই বর্ধিত শিফটের অনুমতি দেওয়া হয়েছে শুধুমাত্র বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেই। যাতে শুধু চাকরি নয়, জীবিকার প্রয়োজনে স্বাধীন ভাবে ব্যবসার প্রতিও আকৃষ্ট হন রাজ্যবাসী এবং নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় সময় দিতে পারেন।