ওড়িশার ভূমিপুত্র কূটনীতিক দীনেশ কে পট্টনায়েক এবার কানাডায় ভারতের তরফে রাষ্ট্রদূত হিসাবে পা রাখছেন। উল্লেখ্য, খলিস্তান ইস্যুতে কানাডার পুরনো ট্রুড সরকারের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকলেও, বর্তমানে কানাডার কার্নি প্রশাসনের সঙ্গে দিল্লির পুরনো সম্পর্কের উষ্ণতা তৈরি হতে দেখা যাচ্ছে। ঠিক এই পরিস্থিতিতে পট্টনায়ক এই দায়িত্ব নিয়ে ওটাওয়াতে ভারতের রাষ্ট্রদূত হয়ে যাচ্ছেন। একদিকে, মার্কিন শুল্ক তাণ্ডবের পর যখন কানাডা-আমেরিকা সম্পর্ক খুব একটা সুখের নয়, ঠিক তখনই পট্টনায়কের কাঁধে বড় দায়িত্ব এল। বর্তমানে দীনেশ কে পট্টনায়ক ভারতের তরফে স্পেনে অবস্থিত দূতাবাসের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বে রয়েছেন।
কানাডা- আমেরিকা সম্পর্ক ও ভারত-আমেরিকা সম্পর্কের বর্তমান অঙ্কের নিরিখে বিদেশমন্ত্রী জয়শংকরের মন্ত্রকের এই তাবড় অফিসার দীনেশ পট্টনায়কের কূটনৈতিক আঙিনায় কানাডার দূতাবাসে এই পদে নিয়োগ হওয়া বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়। উল্লেখ্য, ওড়িশার ভূমিপুত্র হলেও পট্টনায়কের সঙ্গে যোগ রয়েছে কলকাতারও। তিনি কলকাতার ‘ইন্ডিয়ান ইনসস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট’ থেকে এমবিএ পাশ করেন। এদিকে, ভারতের বিদেশমন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ১৯৯০ ব্যাচের ভারতীয় বিদেশ দপ্তরের কর্মকর্তা পট্টনায়েক খুব শীঘ্রই ওটোয়াতে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তিনি বর্তমানে স্পেনে ভারতের রাষ্ট্রদূত।
এদিকে, সদ্য আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কের খাতে কানাডা, যুক্তরাষ্ট্রের উপর কিছু প্রতিশোধমূলক শুল্ক প্রত্যাহার করে নেয়। যা সাদরে গ্রহণ করে ট্রাম্প প্রশাসন। সেই জায়গা থেকেও দিল্লি-ওটাওয়া নতুন সমীকরণ কোন খাতে বয়,সেদিকে নজর থাকবে সব মহলের। এর আগে কানাডার ওপর শুল্ক চাপাতেই কানাডার প্রাইম মিনিস্টার কার্নি সাফ জানান, 'যখন যুক্তিসঙ্গত হবে তখন আমরা কথা বলব' ট্রাম্পের সঙ্গে।
( Lucky Rashi: সেপ্টেম্বরের শুরু থেকেই সুখের সময় আরম্ভ হচ্ছে! তাবড় যোগে লাভ কোন ৩ রাশির?)
এদিকে, জানা যাচ্ছে, কানাডার তরফে ক্রিস্টোফার কুটারকে ভারতে রাষ্ট্রদূত করে পাঠানো হচ্ছে। তাঁর নাম ঘোষণার অপেক্ষা শুরু হয়েছে। এর আগে তিনি ‘চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স’ হিসাবে ইজরায়েলে রয়েছেন। এদিকে, গত ১০ মাস ধরে কানাডায় ভারতের রাষ্ট্রদূতের পদটি খালি ছিল। খলিস্তান ইস্যুতে কানাডার বুকে খলিস্তানপন্থী হরদীপ সিং গুজ্জরের মৃত্যুর পর ট্রুডে সরকার দিল্লির দিকে আঙুল তুলতেই দুই দেশের সম্পর্কে শীতলতা আসে। এরপর থেকেই কানাডা ও ভারত দুই দেশ থেকেই একাধিক কূটনীতিককে সরানো হয়। কানাডার তরফে ক্যামেরন ম্যাকে ভারতে অবস্থিত কানাডার দূতাবাসের রাষ্ট্রদূতের পদ থেকে সরে যাওয়ার পর থেকে এই পদে আর কাউকে আসতে দেখা যায়নি এপর্যন্ত। অন্যদিকে, গত অক্টোবরে কানাডায় নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত সঞ্জয় বর্মা ও ৫ অফিসারকে প্রত্যাহার করে নেয়। এঁদের ট্রুডো সরকার, হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যাকাণ্ডে জেরা করার পদক্ষেপে হাঁটছিল। তারপরই পদক্ষেপ করে দিল্লি।
দীনেশ পট্টনায়েকের ভারত ও বিদেশে ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং তিনি ২০১৬-২০১৮ সালে যুক্তরাজ্যে ডেপুটি হাইকমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই পদে থেকে ভারতীয় প্রবাসীদের মধ্যে খালিস্তান সমস্যা মোকাবিলা করা জরুরি ছিল, ঠিক যেমন কানাডার ক্ষেত্রেও খলিস্তান ইস্যু একটি বড় দিক। এর আগে তিনি ঢাকা, জেনিভা, ভিয়েনায় ভারতীয় মিশনের বলিষ্ঠ অঙ্গ ছিলেন। উল্লেখ্য, পট্টনায়কের নিযুক্তি ভারত-কানাডার পুরনো সম্পর্ককে ফের উজ্জিবীত করতে পারে কি না, সেদিকে তাকিয়ে কূটনৈতিক বিশ্ব!