ভারতের শহরাঞ্চলের প্রায় ৪০ শতাংশ মহিলা নিরাপত্তার অভাববোধ করেন।এমনই বিস্ফোরক তথ্য উঠে এসেছে ন্যাশনাল অ্যানুয়াল রিপোর্ট অ্যান্ড ইনডেক্স অন উওমেন্স সেফটি ২০২৫-এর রিপোর্টে। বৃহস্পতিবার দেশব্যাপী এই মাপকাঠি প্রকাশিত হয়। ৩১টি শহরের ১২,৭৭০ জন মহিলাকে এই সমীক্ষার নমুনা হিসেবে নেওয়া হয়।
ন্যাশনাল অ্যানুয়াল রিপোর্ট অ্যান্ড ইনডেক্স অন উওমেন্স সেফটি ২০২৫-এর রিপোর্টে দেশের শহরগুলিকে অতি নিরাপদ, নিরাপদতম, মোটামুটি নিরাপদ, নিরাপদ নয় এবং অতি খারাপ নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিভাগে ভাগ করা হয়েছে।রিপোর্টে বলা হয়েছে, ১০ জনের মধ্যে ৬ জন মহিলা মেনে নিয়েছেন যে, তাঁরা তাঁদের শহরে নিরাপদবোধ করেন। অন্যদিকে, ৪০ শতাংশ মহিলার ধারণা তাঁরা নিরাপত্তার অভাববোধ করছেন। পাশাপাশি ৭ শতাংশ মহিলা স্বীকার করে নিয়েছেন যে, ২০২৪ সালে তাঁরা প্রকাশ্যে যৌন হেনস্তার শিকার হয়েছেন। অপদস্থ হয়েছেন। এই সংখ্যাটিই দ্বিগুণ যাঁদের বয়স ২৪-এর নীচে।যৌন হেনস্তার জায়গাগুলি হল পাড়া-প্রতিবেশীদের মধ্যে ও ট্রেনে-বাসে।বিশেষ সমীক্ষায় ধরা পড়েছে দিন ও রাতের মধ্যেও মহিলাদের মতামতের পার্থক্য রয়েছে।অধিকাংশ মহিলাই রাতের নিরাপত্তা নিয়ে ভিন্নমত পোষণ করেন।
মহিলা নিরাপত্তায় শহরের তালিকা
রিপোর্টে কলকাতা, দিল্লি, পাটনা, জয়পুর, ফরিদাবাদ, শ্রীনগর ও রাঁচিকে দেশে মহিলাদের জন্য সবচেয়ে কম নিরাপদ শহর হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। অর্থাৎ এই শহরগুলি মহিলাদের পক্ষে মোটেই নিরাপদ নয়। অন্যদিকে, কোহিমা, বিশাখাপত্তনম, ভুবনেশ্বর, আইজল, গ্যাংটক, ইটানগর ও মুম্বই দেশে মহিলাদের জন্য নিরাপদতম শহরগুলির তালিকায় উঠে এসেছে। এই শহরগুলিতে লিঙ্গসাম্যতা, নাগরিকদের সচেতনতা, পুলিশি ব্যবস্থা এবং মহিলাদের আনন্দ-খুশিতে রাখার মতো পরিকাঠামো রয়েছে বলে সমীক্ষায় অংশ নেওয়া মহিলারা জানিয়েছেন।তবে পাটনা ও জয়পুরের মহিলারা দুর্বল সরকারি ব্যবস্থা, দায়িত্ববোধে অভাব, পিতৃতান্ত্রিক মনোভাব এবং শহুরে পরিকাঠামোর অভাবকে তুলে ধরেছেন।
এদিন রিপোর্টটি প্রকাশ করে জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন বিজয়া রাহতকর বলেন, একজন মেয়ের জন্য নিরাপত্তা শুধু আইনশৃঙ্খলার প্রশ্ন নয়। একজন মেয়ের জীবনের বিভিন্ন দিক রয়েছে এতে। মহিলাদের শিক্ষা, ভবিষ্যৎ, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থানের সুযোগ এবং স্বাধীনভাবে ঘোরাফেরাও নিরাপদবোধের অন্তর্ভুক্ত। তাঁর কথায়, জাতীয় মহিলা কমিশনে, আমাদের অগ্রাধিকার হল প্রতিটি মহিলা যাতে বাড়িতে, কর্মক্ষেত্রে, পাবলিক প্লেসে এবং অনলাইনে নিরাপদ বোধ করেন তা নিশ্চিত করা।'