মেঘভাঙা বৃষ্টি এবং ধসে বিপর্যস্ত হিমাচল প্রদেশ।বহু ঘরবাড়ি, স্কুল, হাসপাতাল ধসের কবলে পড়ে ভেঙে গিয়েছে। কুলুতে ভারী বৃষ্টির জেরে বিপদসীমা ছুঁয়ে ফেলেছে বিয়াস নদী। গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছে নদী।মানালিতও করুণ পরিস্থিতি। প্রবল বন্যার জলে ঐতিহাসিক শের-ই-পাঞ্জাব রেস্তোরাঁটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভবনের বেশিরভাগ অংশ ভেসে গিয়েছে, কেবল সামনের গেটের দেয়ালটি দাঁড়িয়ে আছে।
জানা গিয়েছে, রেস্তোরাঁটি বিয়াস নদীর খুব কাছাকাছি অবস্থিত। এটি অতি বর্ষণের ফলে বিপদসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছিল। একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গেছে, রেস্তোরাঁর সামনের দিকটি ছাড়া বাকিটা ভেঙে নদীতে তলিয়ে গিয়েছে।শের-ই-পাঞ্জাব রেস্তোরাঁটি তার খাঁটি উত্তর ভারতীয় খাবারের জন্য দীর্ঘদিন ধরে অত্যন্ত জনপ্রিয়। এমনকী বলিউডের বিভিন্ন তারকা, ক্রীড়াবিদ এবং সাম্প্রতিক সময়ে সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সাররা নিয়মিত এখানে যেতেন। মানালিতে ভ্রমণে আসা পর্যটকদের জন্য এটি এক আকর্ষণীয় গন্তব্য ছিল।জানা গিয়েছে, সোমবার রাত থেকে শুরু হওয়া ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে মানালি, মান্ডি, শিমলা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় নতুন করে ভূমিধস ও হঠাৎ বন্যা দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মানালি-লে হাইওয়ের একাধিক জায়গা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বন্যার জলে ইতিমধ্যে একটি বহুতল হোটেল এবং চারটি দোকান ভেসে গিয়েছে।
এদিকে, আবহাওয়া দফতর চাম্বা এবং কাংড়া জেলায় রেড অ্যালার্ট এবং মান্ডি, কুল্লু এবং মানালিতে অরেঞ্জ অ্যালার্ট জারি করেছে।বিয়াস নদীর জলও বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে, যার ফলে চণ্ডীগড়-মানালি জাতীয় সড়ক পুরোপুরি জলের নীচে চলে গেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।কিন্নর জেলার পানউইতে মেঘ ভাঙা বৃষ্টির ফলে শতদ্রু নদীর জলস্তর হঠাৎ করে বেড়ে যায়। নদীর পাশে থাকা বাড়ি, দোকান, হোটেল মুহূর্তেই জলের তোড়ে ভেসে যায়। দৃশ্যটি এতটাই ভয়ঙ্কর ছিল যে, মনে হচ্ছিল যেন জলের স্রোত পাহাড় থেকে সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে আসছে। কর্তৃপক্ষ নিচু এলাকার বাসিন্দাদের জন্য সতর্কবার্তা জারি করেছে।অন্যদিকে, সিমলায় টানা বৃষ্টিতে ভূমিধস ও গাছ পড়ে রাস্তা বন্ধ হয়ে রয়েছে।এই পরিস্থিতিতে স্বেচ্ছাসেবক ও উদ্ধারকারী দল উদ্ধারকাজে নেমেছে।মানালির বাসিন্দা ও পর্যটকদের নিরাপদ স্থানে থাকতে এবং প্রয়োজনে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।