এবার প্যাকেজ লেনদেনেও শুল্কছাড় তুলে নিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এতদিন পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৮০০ ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ৭০,২৪৩ টাকা) পর্যন্ত মূল্যের প্যাকেজ পাঠালে কোনও শুল্ক দিতে হত না। কিন্তু সেই সুবিধা এবার তুলে নিল ট্রাম্প প্রশাসন। শুক্রবার থেকে নতুন নিয়ম কার্যকর হয়েছে। তবে আগামী ছ’মাসের জন্য পার্সেল প্রেরকদের অন্য একটি বিকল্প বেছে নেওয়ার সুযোগও দিয়েছে ওয়াশিংটন।
মার্কিন কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রোটেকশন এজেন্সি (সিবিপি)-এর এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, এখন থেকে যে কোনও মূল্যের পার্সেলের উপর সংশ্লিষ্ট দেশের রপ্তনি শুল্কের হারেই শুল্ক ধার্য করা হবে। তবে প্রেরকেরা চাইলে আগামী ছ’মাসের জন্য সরাসরি বাড়তি অর্থ দিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পার্সেল পাঠাতে পারবেন। বিভিন্ন দেশের ক্ষেত্রে এই বাড়তি অর্থের পরিমাণ বিভিন্ন রকম। শুল্কহার অনুযায়ী, এই অতিরিক্ত অর্থ ৮০ ডলার (৭,০২৪ টাকা) থেকে ২০০ ডলার (১৭,৫৬১ টাকা) পর্যন্ত হতে পারে। যাদের উপর শুল্ক ১৬ শতাংশ বা তার কম, তাদের ক্ষেত্রে বাড়তি ৮০ ডলার দিলেই চলবে।এই তালিকায় ব্রিটেন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেশ কিছু দেশ রয়েছে। অন্যদিকে, ১৬-২৫ শতাংশ শুল্কের ক্ষেত্রে পার্সেলের জন্য বাড়তি দিতে হবে ১৬০ ডলার (১৪,০৪৯ টাকা)। ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম এই তালিকায় পড়ছে।আর ২৫ শতাংশ বা তার বেশি শুল্কের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২০০ ডলার দিতে হবে।এই তালিকায় আছে চিন, ভারত, ব্রাজিল, কানাডার মতো দেশে।তবে এই নিয়ম ছ’মাসের জন্য। তারপর থেকে সব দেশের পার্সেলেই স্বাভাবিক রফতানি শুল্ক প্রযোজ্য হবে।
আরও পড়ুন-'ঘৃণার রাজনীতি!' প্রধানমন্ত্রীর মা'কে নিয়ে কুকথা, পাটনায় BJP-কংগ্রেস ধুন্ধুমার, নিন্দায় শাহ
মার্কিন বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো এই সিদ্ধান্তকে ‘স্থায়ী পরিবর্তন’ বলে ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি দাবি করেন, 'ভয়ঙ্কর শুল্কছাড় বন্ধ করার যে সিদ্ধান্ত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিয়েছেন, তাতে আগামী দিনে আমেরিকানেরা লাভবান হবেন। মাদক এবং অন্যান্য নিষিদ্ধ ও বিপজ্জনক জিনিসপত্র আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবাধে ঢুকতে পারবে না। তাছাড়া, এর থেকে বছরে এক হাজার কোটি ডলার বাড়তি রাজস্ব আদায় হবে। এটা একটা স্থায়ী পরিবর্তন।’ তিনি জানিয়েছেন, পার্সেল লেনদেনের ক্ষেত্রে শুল্কছাড় যে তুলে নেওয়া হল, এই ব্যবস্থা স্থায়ী। ভবিষ্যতে কোনও দেশের ক্ষেত্রে ব্যবস্থার পরিবর্তনের কোনও সম্ভাবনা নেই।
আরও পড়ুন-'ঘৃণার রাজনীতি!' প্রধানমন্ত্রীর মা'কে নিয়ে কুকথা, পাটনায় BJP-কংগ্রেস ধুন্ধুমার, নিন্দায় শাহ
পার্সেলে শুল্কছাড় থাকায় অনেক দেশ রফতানি শুল্ক এড়ানোর মাধ্যম হিসাবে এই পথকে ব্যবহার করত বলে অভিযোগ। কারণ, সাধারণ রফতানিতে শুল্ক দিতে হলেও পার্সেলের মাধ্যমে সরাসরি গ্রাহকের হাতে যদি সেই পণ্য পৌঁছে দেওয়া যায়। তাতে শুল্ক এড়ানো যেত।বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সিদ্ধান্ত ভারতীয় ক্ষুদ্র ও মাঝারি রফতানিকারকদের ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। যাঁরা সরাসরি গ্রাহকের কাছে পণ্য পাঠিয়ে থাকেন, তাঁদের জন্য খরচ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যাবে। এর ফলে পণ্য প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্পর্কেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে মত বিশ্লেষকদের। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপ আরও দেশকে পাল্টা শুল্ক আরোপে উৎসাহিত করতে পারে বলেই ধারণা।