বিহারের ভোটার তালিকা নিয়ে জট আরও গভীর হচ্ছে। এসআইআর প্রক্রিয়ার মধ্যেও নথির অসংগতি ধরা পড়ায় এবার খসড়া ভোটার তালিকায় নাম থাকা প্রায় ৩ লক্ষ ভোটারকেই নোটিশ পাঠাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। আগামী সাত দিনের মধ্যে বৈধ পরিচয়পত্র নিয়ে স্থানীয় ইআরও-র দফতরে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, এসআইআর প্রক্রিয়ার পর বিহারের মোট ভোটারের প্রায় ৯৮.২ শতাংশই ফর্ম জমা করেছিলেন। প্রায় ৬৫ লক্ষ নাম তালিকা থেকে বাদও গেছে। এর মধ্যে মৃত, স্থানান্তরিত এবং ডুপ্লিকেট নাম রয়েছে। কিন্তু যাঁরা বৈধ ফর্ম জমা দিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যেও বহুজনের নথিতে গরমিল ধরা পড়েছে। কারও জমা দেওয়া কাগজ অসম্পূর্ণ, আবার অনেক ক্ষেত্রে পরিচয়পত্রই নেই। এই কারণে প্রথম দফায় তিন লক্ষ ভোটারকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। তবে কমিশনের ধারণা, এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
অভিযোগ উঠছে, বেশিরভাগ নোটিশই যাচ্ছে সীমাঞ্চল এবং সীমান্তবর্তী জেলার বাসিন্দাদের কাছে। বিশেষত কিষানগঞ্জ, পূর্ণিয়া, আরারিয়া, মধুবনী ও পশ্চিম চম্পারণের মতো সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় বেশি প্রভাব পড়ছে। এই ভোটাররা সাত দিনের মধ্যে বৈধ নথি জমা না দিলে তাঁদের নামও ভোটার তালিকা থেকে বাদ যেতে পারে। ফলে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে তাঁরা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন না।
এদিকে, নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, নথি যাচাই প্রক্রিয়া এখনও চলছে। এখন পর্যন্ত যতজনকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে, তা সাময়িক হিসেব। তদন্ত ও যাচাই সম্পূর্ণ হলে সংখ্যা অনেকটাই বৃদ্ধি পেতে পারে। অন্যদিকে বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, অনেক বৈধ ভোটারও শুধুমাত্র নথি-সংক্রান্ত সমস্যার কারণে তালিকা থেকে বাদ যাচ্ছেন। এর ফলে একাংশ জনগণ ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সব মিলিয়ে, এসআইআর প্রক্রিয়ার পর নাম কাটা ও নোটিশ পাঠানোর ঘটনায় বিহারের রাজনীতি ইতিমধ্যেই উত্তপ্ত। কমিশনের নোটিশ পাওয়া তিন লক্ষ ভোটার এখন দুশ্চিন্তায় নথি প্রমাণ না করতে পারলে তাঁদের ভোটাধিকারই যাবে হারিয়ে।