বিহারে বিধানসভা নির্বাচনের আগে নয়া সমীকরণে জটিলতা বাড়াল। এনডিএ ও মহাগঠবন্ধন, দুই শিবিরেই আসন ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে শাসক জোটে চিরাগ পাসওয়ান, জিতনরাম মাঝি ও উপেন্দ্র কুশওয়াহার দাবির কারণে সমঝোতা জটিল হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে, বিরোধী শিবিরে আরও দুটি দল-হেমন্ত সোরেনের ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) এবং পশুপতি পারাসের নেতৃত্বাধীন এলজেপি (পারাস গোষ্ঠী) যোগ দিয়েছে। সেই সঙ্গে কংগ্রেস ও সিপিআই(এমএল)-ও বেশি আসনের দাবি তুলছে।
বর্তমানে বিহারের মহাগঠবন্ধনে ছয়টি দল রয়েছে-লালু যাদবের রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি), কংগ্রেস, সিপিআই, সিপিএম ও ভিআইপি। এখন জেএমএম এবং এলজেপি (পারাস)-ও এতে যোগ দিয়েছে। অর্থাৎ এখন রাজ্যের মোট ২৪৩টি আসনকে আট দলের মধ্যে ভাগ করতে হবে, যা সমঝোতায় পৌঁছানোকে আরও জটিল করে তুলছে। পশুপতি পারাসের মাধ্যমে মহাগঠবন্ধন পাসওয়ান ভোট ভাগ করার চেষ্টা করবে।বিশেষ করে খাগারিয়ায়, যেখান থেকে পাসওয়ান পরিবার উঠে এসেছে। পারাস দীর্ঘদিন ধরে খাগারিয়ার আলৌলি বিধানসভা থেকে এমএলএ ছিলেন। সূত্রের খবর, এলজেপি (পারাস) গোষ্ঠীকে অন্তত দুই থেকে তিনটি আসন দেওয়া হবে, যেখান থেকে পারাস ও তাঁর ছেলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন।জোট আশা করছে, পাসওয়ান ভোট বিভক্ত করা সম্ভব হবে যদি পারাসকে হাজিপুর থেকেও প্রার্থী করা হয়।
জেএমএম-কেও একটি আসন দেওয়া প্রয়োজন, কারণ ঝাড়খণ্ডে আরজেডি ও কংগ্রেসও সরকারে অংশীদার। তাই ঝাড়খণ্ড সীমান্তবর্তী এলাকা যেমন বাঁকা, মুঙ্গের ও ভাগলপুরে জেএমএমকে আসন দেওয়া হতে পারে। কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি বলেছেন, সবাইকে কিছু আসন ছেড়ে দিতে হবে এবং অন্য দলগুলির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। শনিবার পাটনায় বৈঠক শেষে কংগ্রেস রাজ্য সভাপতি রাজেশ রাম স্পষ্ট জানিয়েছেন, প্রতিটি দলকে কিছু আসন ছাড়তে হবে এবং বাকি দলগুলিকে জায়গা দিতে হবে।
২০২০ সালে মহাগঠবন্ধনের পারফরম্যান্স
আরজেডি লড়েছিল ১৪৪ আসনে, জিতেছিল ৭৫।কংগ্রেস লড়েছিল ৭০ আসনে, জিতেছিল ১৯।সিপিআই(এমএল) লড়েছিল ১৯ আসনে, জিতেছিল ১২।সিপিএম লড়েছিল ৪ আসনে, জিতেছিল ২।সিপিআই লড়েছিল ৬ আসনে, জিতেছিল ২।
এবার মুকেশ সাহনির ভিআইপি (বিকাশশীল ইন্সান পার্টি)-ও মহাগঠবন্ধনে রয়েছে। সাহনি ৫০টি আসন এবং জোট জিতলে উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ দাবি করেছেন। মুকেশ সাহনি চান যে, যেমন তেজস্বী যাদবকে মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী ঘোষণা করা হবে, তেমনই তাঁকেও উপমুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী ঘোষণা করা হোক। সূত্রের খবর, আরজেডির তেজস্বী যাদব বা কংগ্রেসের পক্ষে তাঁকে সামঞ্জস্য করানো কঠিন হবে। সম্ভাবনা রয়েছে, তাঁকে ২০-২৫টি আসন দেওয়া হতে পারে। তবে অনেক দলেরই আপত্তি রয়েছে, কারণ গতবার সাহনি ১১ আসনে লড়েছিলেন এবং মাত্র ৪টিতে জিতেছিলেন। তবে এবার তেজস্বী যাদব তাঁকে জোটে রাখতে চান, পিছিয়ে পড়া শ্রেণির ভোট পাওয়ার লক্ষ্যে। কংগ্রেস হয়তো এবার ৭০ আসনের বদলে ৬০ আসনেই সন্তুষ্ট থাকতে হবে। তবে সূত্র বলছে, তারা রাজি হবে যদি আসনগুলি জেতার মতো শক্তিশালী হয়। সিপিআই(এমএল)-এর স্ট্রাইক রেট গত নির্বাচনে খুব ভালো ছিল, তাই এবার তারা আরও বেশি আসন চাইতে পারে। সম্প্রতি ভোটাধিকার যাত্রায় ‘ইন্ডিয়া অ্যালায়েন্স’-এর সংহতি দেখা গিয়েছিল।সেখানেও কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী সবসময় মুকেশ সাহনি ও দীপঙ্কর ভট্টাচার্যকে সঙ্গে রেখেছিলেন।