আজ ৭৯ তম স্বাধীনতা দিবস। স্বাধীনতা দিবসের ৭৮ বছর পূর্তিতে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।২০১৪ সাল থেকে শুরু করে এই নিয়ে ১২ বার লালকেল্লায় স্বাধীনতা দিবসের ভাষণ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এবারের স্বাধীনতা দিবসের থিম রাখা হয়েছে 'নয়া ভারত।' সেই সঙ্গে অপারেশন সিঁদুরের সাফল্য উদযাপনেও শামিল হয়েছেন দেশবাসী।
এই বছর স্বাধীনতা দিবসের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হল অপারেশন সিঁদুরের সাফল্য উদযাপন, যা ভারতীয় কূটনৈতিক ও সামরিক কৌশলের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ভারতীয় বিমান বাহিনী জাতীয় পতাকা এবং অপারেশন সিঁদুর পতাকা বিশেষ ফ্লাইপাস্ট-এ উড়ে গিয়েছে লালকেল্লার উপর দিয়ে।চলতি বছরের স্বাধীনতা দিবসের আমন্ত্রণ পত্রেও রয়েছে অপারেশন সিঁদুর। শুক্রবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর আগমনেই শুরু হয় লালকেল্লার মূল অনুষ্ঠান। দিল্লি পুলিশ ও সশস্ত্র বাহিনীর পক্ষ থেকে তাঁকে গার্ড অফ অনার প্রদান করা হয়। এরপর জাতীয় পতাকা উত্তোলনের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় সঙ্গীত ও ২১ তোপধ্বনি সম্পন্ন হয়। এরপর জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণের শুরুতেই অপারেশন সিঁদুরের জয়গান দিয়ে তাঁর ১২তম ভাষণ শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী। তবে তাঁর আগে ছিল অপারেশন সিঁদুরের সাফল্য উদযাপনে ভারতীয় বায়ুসেনার বিশেষ ফ্লাইপাস্ট। উইং কমান্ডার বিনয় পুনিয়া এবং আদিত্য জয়সওয়ালের নেতৃত্বে আকাশের বুক চিরে উড়ল দু’টি এম আই ১৭ বিমান। একটি বিমানে ছিল জাতীয় পতাকা, অন্যটিতে অপারেশন সিঁদুর- এর লোগো। দুটি বিমান থেকেই উপস্থিত দর্শকদের উদ্দেশ্যে ছড়িয়ে দেওয়া হয় ফুলের পাপড়ি। এ বছর প্রধানমন্ত্রীকে সহায়তা করেছেন ফ্লাইং অফিসার রাশিকা শর্মা, এবং ২১ তোপধ্বনি পরিচালনা করেছেন ১৭২১ ফিল্ড ব্যাটারি (সেরিমনিয়াল) ইউনিট। প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের পর আবার জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন এবং শেষ পর্যায়ে তেরঙা বেলুন ছেড়ে অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।
আরও পড়ুন-গেরুয়া পাগড়ি-নেহেরু জ্যাকেট! প্রধানমন্ত্রীর আউটফিটে দেশপ্রেম ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য
এদিন লালকেল্লায় দাঁড়িয়ে অপারেশন সিঁদুর নিয়ে প্রশংসায় পঞ্চমুখ প্রধানমন্ত্রী মোদী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, শত্রুদের কল্পনাতীত সাজা দিয়েছে ভারতীয় সেনা। ধর্ম জেনে বেছে বেছে স্ত্রী, সন্তানের সামনে খুন করেছিল জঙ্গিরা। ডেরায় ঢুকে জঙ্গিদের ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়েছে সেনারা। তিনি বলেন, 'আমাদের দেশ দীর্ঘ বহু বছর ধরে সন্ত্রাসকে সহ্য করে এসেছে। তবে এখন সন্ত্রাস এবং সন্ত্রাসবাদীদের লালন-পালনকারীদের, আমরা এবার আলাদা আলাদা মোটেই ভাবব না। ওরা মানবতার বিরুদ্ধে শত্রু। তাঁদের মধ্যে কোনও ফারাক নেই। ভারত এবার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে, এই পরমাণু হামলার হুমকি এবার আর আমরা মেনে নেব না। অনেকদিন ধরে এই ব্ল্যাকমেল চলছে। এবার আর মেনে নেওয়া হবে না। যদি এরপরেও শত্রুরা অপরাধ জারি রাখে, তাহলে এবার আমাদের সেনারাই ঠিক করবে। সন্ত্রাস চালালে কড়া জবাব দেওয়া হবে।'
আরও পড়ুন-গেরুয়া পাগড়ি-নেহেরু জ্যাকেট! প্রধানমন্ত্রীর আউটফিটে দেশপ্রেম ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য
উল্লেখ্য, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রাজধানী জুড়ে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দিল্লি পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আধাসামরিক বাহিনী ও বিশেষ কমান্ডো মিলিয়ে ১০ হাজারের বেশি নিরাপত্তাকর্মী এবং ৩ হাজার ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বাজার, মেট্রো স্টেশন, বাস টার্মিনাল ও জনবহুল এলাকায় টহল বাড়ানো হয়েছে।