‘ম্যাচ মাস্ট গো অন।' এশিয়া কাপে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে অনুষ্ঠিত ম্যাচ বাতিলের দাবিতে দায়ের হওয়া আবেদন দ্রুত শুনানির আর্জি খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। কয়েকমাস আগেই পহেলগাঁওয়ে নৃশংস হামলার সাক্ষী থেকেছে গোটা দেশ। পাল্টা 'অপারেশেন সিঁদুর' অভিযানে পাকিস্তানকে যোগ্য জবাব দিয়েছে ভারত। সব মিলিয়ে ২২ এপ্রিল পরবর্তী ভারত-পাক কূটনৈতিক সম্পর্ক একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। এই অবস্থায় ২০২৫ সালের এশিয়া কাপে ১৪ সেপ্টেম্বর যুযুধান দুই প্রতিপক্ষ একে অপরের মুখোমুখি হতে চলেছে৷ তার আগে পহেলগাঁও-কাণ্ডের প্রভাব ২২ গজে আছড়ে পড়ে।
এশিয়া কাপে ভারত-পাক ম্যাচ বাতিল করার জন্য সুপ্রিম কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল এবং অবিলম্বে তার শুনানির আবেদন করা হয়। কিন্তু শীর্ষ আদালত ভারত বনাম পাকিস্তান ম্যাচ বাতিলের দাবিতে দায়ের হওয়া আবেদন দ্রুত শুনানির আর্জি খারিজ করে দিয়েছে। শুক্রবার শুনানি হবে কিনা জানতে চাইলে ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি জে কে মাহেশ্বরী ও বিচারপতি বিজয় বিষ্ণোই সরাসরি বলেন, 'এত তাড়াহুড়ো কিসের? ম্যাচটা এই রবিবার, এখন কী করা যায়? ম্যাচটা তো হতেই হবে।' তবে, শুনানির সময় আবেদনকারীর আইনজীবী বলেন, 'আমার মামলা দুর্বল হলেও, এটি তালিকাভুক্ত করা উচিত।' যদিও সুপ্রিম কোর্ট তাৎক্ষণিক তালিকাভুক্তি প্রত্যাখ্যান করে। আবেদনে দাবি করা হয়েছে যে, ভারত সরকারকে বিদেশের মাটিতে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হোক। সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদের অধীনে আইনের ছাত্রী উর্বশী জৈন এবং আরও ৩ জন ছাত্রী এই জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন।
আরও খবর-হাড়হিম হায়দরাবাদ! প্রেসার কুকার দিয়ে বারবার আঘাত, মহিলার গলা কেটে খুনের পর…
তাঁদের বক্তব্য, পহেলগাঁও হামলার পর বাইশ গজে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলা মানে দেশের সাধারণ মানুষের ভাবাবেগে আঘাত করা। আবেদনে বলা হয়, 'দুই রাষ্ট্রের মধ্যে ক্রিকেট ম্যাচ মানে সংহতি এবং বন্ধুত্ব স্থাপন। কিন্তু পহেলগাঁও হামলায় দেশের সাধারণ মানুষ যখন প্রাণ হারাচ্ছেন এবং ঝুঁকি নিয়ে দেশের সেনা যখন অপারেশন সিঁদুর সংঘটিত করছে তখন ক্রিকেট ম্যাচ খেলা মানে বিপরীত বার্তা প্রদান করা। এর অর্থ যে দেশ সন্ত্রাসবাদকে প্রশ্রয় দেয় তাদের সঙ্গে খেলাধুলো উদযাপন করা।' আবেদনে আরও বলা হয়, ‘এই ম্যাচ শহিদদের পরিবারের আবেগে আঘাত করতে পারে। দেশের মর্যাদা ও নাগরিকদের নিরাপত্তা বিনোদনের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’ আবেদনকারীরা আরও দাবি করেন, ক্রিকেট নিয়ন্ত্রণ সংস্থাকে দেশের যুব কল্যাণ ও ক্রীড়া মন্ত্রকের আওতায় আনতে হবে, যাতে ২০২৫ সালের ন্যাশনাল স্পোর্টস গভর্ন্যান্স আইনের অধীনে তা পরিচালিত হতে পারে।তবে সুপ্রিম কোর্ট এই আবেদনের তাৎক্ষণিক শুনানি নাকচ করে দেয়।
আরও খবর-হাড়হিম হায়দরাবাদ! প্রেসার কুকার দিয়ে বারবার আঘাত, মহিলার গলা কেটে খুনের পর…
প্রসঙ্গত, আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর দুবাইতে ভারত ও পাকিস্তানের দল একে অপরের মুখোমুখি হবে। পহেলগাঁও-কাণ্ডের পর দুই দেশ এই প্রথম ক্রিকেটের ময়দানে মুখোমুখি হতে চলেছে।এদিকে, পাকিস্তানের সঙ্গে খেলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের স্বর ক্রমশ তীব্র হয়েছে। ইতিমধ্যেই শিবসেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউতের একটি বিবৃতি প্রকাশ্যে এসেছে। তিনি পাকিস্তানের সঙ্গে ম্যাচ খেলাকে 'রাষ্ট্রদ্রোহিতা' বলে অভিহিত করেছেন। একই সঙ্গে, তিনি অপারেশন সিঁদুরের কথা মনে করিয়ে দিয়ে সরকারকে কোণঠাসা করেছেন। এছাড়াও, ভারতের একাধিক প্রাক্তন ক্রিকেটার স্পষ্টভাবে বলেছেন যে, এই ম্যাচটি বয়কট করা উচিত। কেদার যাদব থেকে শুরু করে হরভজন সিং বিসিসিআই-কে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচ থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।