পাকিস্তানের সঙ্গে সদ্য সৌদি আরবের একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি হয়েছে। যে চুক্তিতে বলা হয়েছে, দু’টির মধ্যে কোনও একটি দেশ অন্য কোনও দেশ বা অস্তিত্ব দ্বারা আক্রান্ত হলে, তাকে দুই দেশের উপরেই আঘাত হিসাবে গণ্য করা হবে। চুক্তির পোশাকি নাম ‘কৌশলগত এবং পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি’। প্রশ্ন হল, ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের সংঘাত বাঁধলে কি ভারতের ‘বন্ধু’ সৌদি আরব দিল্লির বিরুদ্ধে গিয়ে আঘাত হানবে? এই প্রশ্ন করা হয়েছিল পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে। তিনি কী জানিয়েছেন দেখা যাক।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, যদি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাত হয়, তাহলে কি ভারতের বিরুদ্ধে যাবে সৌদি? তিনি বলেন,' হ্যাঁ অবশ্যই! এটা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।' পাকিস্তানের জিও টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আসিফ এই চুক্তিকে ‘সম্মিলিত প্রতিরক্ষা’ বলে উল্লেখ করেন। তিনি এই চুক্তিকে ন্যাটোর আর্টিক্যাল ৫ এর সঙ্গে তুলনা করেন। যে আর্টিক্যালে বলা হয়েছে, ব্লক-র একজন সদস্যের ওপর হানা মানে, গোটা ন্যাটোর ওপর হানা। পাকিস্তানের মন্ত্রীর সাফ দাবি, ‘যদি আগ্রাসন দেখা দেয়, সৌদি আরবের বিরুদ্ধে হোক বা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে, আমরা যৌথভাবে এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলব।’ একই সঙ্গে আবার কৌশলী মেজাজ নিয়ে পাকিস্তানের এই মন্ত্রীর সতর্ক বার্তা,'এই চুক্তিটি কোনও আগ্রাসনের জন্য ব্যবহার করার আমাদের কোনও ইচ্ছা নেই।' তারপরই হুঁশিয়ারির সুর পাকিস্তানি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর কণ্ঠে, ‘কিন্তু যদি পক্ষগুলিকে হুমকি দেওয়া হয়, তাহলে স্পষ্টতই এই ব্যবস্থা কার্যকর হবে।’
গাজা, ইরানের বিরুদ্ধে ইজরায়েলের আগ্রাসনের প্রেক্ষাপটে সৌদি ও পাকিস্তানের এই প্রতিরক্ষা চুক্তি বেশ তাৎপর্যরপূর্ণ। এই সময়ে এই চুক্তি নিয়ে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, যে পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্র সৌদি আরবের ব্যবহারের জন্য উপলব্ধ। পাক মন্ত্রী বলছেন,'এই চুক্তির অধীনে আমাদের সক্ষমতা অবশ্যই উপলব্ধ থাকবে,' তিনি আরও উল্লেখ করে বলেন যে পাকিস্তান সর্বদা তার পারমাণবিক স্থাপনা পরিদর্শনের অনুমতি দিয়েছে। এদিকে, এক সিনিয়র সৌদি অফিশিয়াল জানিয়েছেন,' এটি একটি ব্যাপক প্রতিরক্ষা চুক্তি যা সকল সামরিক উপায়কে অন্তর্ভুক্ত করে।' উল্লেখ্য, পাকিস্তান ও সৌদির এই চুক্তি, দুই দেশের দেনা পাওনাতেই বেশ উল্লেখ্য ও তাৎপর্যপূর্ণ। পাকিস্তানের জন্য ইতিবাচক দিক হল, তাদের শক্তিশালী আর্থিক সহায়তা হাতে আসা এবং 'আরব দেশগুলোর জোট' গঠনের সম্ভাবনা। সৌদি আরবের জন্য এর অর্থ 'পারমাণবিক ঢাল'।