সোমবার দিল্লি-এনসিআরের বেশিরভাগ এলাকায় প্রবল বাতাসের সঙ্গে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। সড়কে জল জমে যানজট তৈরি হয়েছে। যানবাহন ধীরগতিতে চলছে। গুরুগ্রামে ভারী বৃষ্টির ফলে সড়কে জল জমে বন্যার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ফরিদাবাদেও পরিস্থিতি খারাপ ছিল। ঘন মেঘ এবং ভারী বৃষ্টির কারণে দুপুর ৩ টের দিকে দিল্লির পালম এলাকায় দৃশ্যমানতা ৮০০ মিটারের নিচে নেমে এসেছে। এর ফলে ৪০০-র বেশি ফ্লাইট ব্যাহত হয়েছে। মঙ্গলবারও দিল্লি এবং এনসিআরের বিভিন্ন অংশে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। বিশেষ করে গুরুগ্রামে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ফরিদাবাদেও ভারী বৃষ্টি হতে পারে। আবহাওয়া দফতরের অনুমান, দিল্লি এনসিআরে বৃষ্টিপাতের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। দিল্লির বিভিন্ন স্থানে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে।
দিল্লিতে যমুনা নদী উত্তাল। দিল্লিতে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অনুমান করা হচ্ছে, মঙ্গলবার যমুনার জলস্তর বিপদসীমা ২০৫.৩৩ মিটার থেকে প্রায় এক মিটার উপরে উঠতে পারে। সরকার বন্যার আশঙ্কায় সতর্কতা জারি করে যমুনার নিম্নাঞ্চলে নজরদারি বাড়িয়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ দলকে ২৪ ঘণ্টা সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যমুনার তীরে অবস্থিত এলাকাগুলিকে খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দিল্লি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ (ডিডিএমএ) যমুনায় বন্যার আশঙ্কায় সোমবার পুরানো রেলওয়ে সেতু বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে। নির্দেশ অনুযায়ী, মঙ্গলবার বিকেল ৫ টা থেকে যখন যমুনার জলস্তর ২০৬ মিটার ছাড়িয়ে যাবে, তখন পুরনো রেলওয়ে সেতু জনসাধারণের চলাচলের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হবে। এই ব্যবস্থা পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত চালু থাকবে। এই সময় পুরনো রেলওয়ে সেতু দিয়ে চলাচলকারী ট্রেনগুলিও সীমিত গতিতে চলবে।
যমুনায় বন্যার সম্ভাব্য ঝুঁকি বিবেচনায় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা বলেছেন, দিল্লিবাসীকে বন্যার আশঙ্কায় ভয় পেতে হবে না। বন্যা মোকাবিলায় সমস্ত সংশ্লিষ্ট বিভাগকে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে। প্রতিটি পরিস্থিতির উপর নিয়মিত নজরদারি করা হচ্ছে।
হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঘন মেঘ, প্রবল বাতাস এবং ভারী বৃষ্টির ফলে বিমান পরিষেবায় প্রভাব পড়েছে। দিল্লি বিমানবন্দরে মোট ৪৪৮টি ফ্লাইট ব্যাহত হয়েছে। ফ্লাইটরাডার২৪-এর তথ্য অনুযায়ী, দিল্লি বিমানবন্দরে ৯৫টি নামতে এবং ৩৫৩টি নির্ধারিত ফ্লাইট ছাড়তে দেরি হয়েছে।
তারইমধ্যে এমন পরিস্থিতি হয়েছে যে গুরুগ্রাম হাইওয়েতে সাত কিলোমিটার দীর্ঘ ট্র্যাফিক জ্যাম তৈরি হয়েছে। তিন ঘণ্টার বেশি জ্যামে আটকে রয়েছে গাড়ি। কারণ রাস্তার বিস্তীর্ণ অংশে জল জমে গিয়েছে। তা নিয়ে বিজেপি সরকারকে কটাক্ষ করেছে কংগ্রেস। তাদের দাবি, দু'ঘণ্টার বৃষ্টিতেই ২০ কিমি জ্যাম তৈরি হয়ে গিয়েছে।