কেরলের এরনাকুলামে ক্যানাড়া ব্যাঙ্কের এক শাখায় গরুর মাংসের উপর নিষেধাজ্ঞা ঘিরে অদ্ভুত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। অভিযোগ, নতুন দায়িত্ব পাওয়া এক আঞ্চলিক ম্যানেজার ক্যান্টিনে গরুর মাংস পরিবেশনে বাধা দেন। এরপরেই প্রতিবাদে ব্যাঙ্ক কর্মীরা ক্যান্টিনের বাইরে গরুর মাংস ও পরোটা পরিবেশন করে ‘বিফ ফেস্ট' পালন করেছেন। (আরও পড়ুন: কেউ চিরকাল বন্ধু বা শত্রু থাকে না, ট্যারিফ তরজার আবহে বড় মন্তব্য রাজনাথের)
আরও পড়ুন-রোগী দেখতে দেখতেই..., হৃদরোগই প্রাণ কাড়লো কার্ডিয়াক সার্জনের, সতর্কতা বিশেষেজ্ঞদের
ইন্ডিয়া টুডে-র প্রতিবেদনে অনুযায়ী, ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া-র নেতৃত্বে কর্মীরা জানায়, ম্যানেজার যে মানসিক চাপ দিচ্ছেন ও অপমানজনক আচরণ করছেন বিরুদ্ধে আগেই আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গরুর মাংস নিষেধাজ্ঞার খবর প্রকাশ্যে আসার পর মূল দাবি বদলে গিয়ে আন্দোলন আরও জোরদার হয়। বিইএফআই নেতা এস এস অনিল বলেন, 'এই ব্যাঙ্ক সংবিধানের নির্দেশিকা মেনেই চলে। খাদ্যাভ্যাস একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়। আমরা কাউকে গরুর মাংস খেতে বাধ্য করছি না। কিন্তু আমাদের খাওয়ার অধিকার কেড়ে নেওয়া যাবে না। তাই প্রতিবাদে আমরা গরুর মাংস খেয়ে জানালাম, ব্যক্তিস্বাধীনতার সঙ্গে আপস চলবে না।' অন্যদিকে, এই আন্দোলনে যোগ দিয়েছে কেরলের রাজনৈতিক মহলও। বাম সমর্থিত স্বতন্ত্র বিধায়ক কে টি জলিল কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়ে বলেন, 'কেরলে কোনওভাবেই সঙ্ঘ পরিবার বা হিন্দুত্ববাদী এজেন্ডা চাপানো যাবে না। কী খাব, কী পরব, কী ভাবব-এ সব ঠিক করার অধিকার কোনও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নেই।' (আরও পড়ুন: ভারতের সঙ্গে আলোচনায় মরিয়া পাকিস্তান, ইনিয়ে বিনিয়ে বার্তা ইসহাক দারের)
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের বেশিরভাগ শুল্ককে অবৈধ ঘোষণা করল মার্কিন আদালত, মাথায় বাজ প্রেসিডেন্টের
তিনি আরও জানান, 'এই মাটির রঙ লাল, এই মাটির হৃদয় লাল। যেখানে লাল পতাকা উড়ে, সেখানেই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে নির্ভয়ে প্রতিবাদ করা যায়। ঐক্যবদ্ধ কমরেডরা কখনও গেরুয়া পতাকা তুলে মানুষের স্বাধীনতা হরণ করতে দেবে না।' এর আগে ২০১৭ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের পশু বিক্রি সংক্রান্ত নির্দেশিকার পরও কেরলে একাধিকবার ‘বিফ ফেস্ট’ আয়োজন করে প্রতিবাদ হয়েছিল। সেদিক থেকে দেখলে, সাম্প্রতিক এই ঘটনায় কেরলে ব্যক্তিস্বাধীনতা রক্ষার লড়াই ফের নতুন করে সামনে এল।আসলে কেরলের খাদ্য সংস্কৃতিতে মালাবার পরোটা এবং বিফ ফ্রাই এক বিশেষ জায়গা দখল করে আছে। নরম, স্তরে স্তরে তৈরি পরোটা আর মশলাদার ভাজা বিফের এই যুগলবন্দি শুধু অফিস ক্যান্টিনেই নয়, হোটেল, চায়ের দোকান থেকে শুরু করে উৎসবের টেবিলে পর্যন্ত জনপ্রিয়।