কিছু দিন আগেই তিনি গিয়েছিলেন চিনের সফরে। সেখানে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রথমবার ভারতের উত্তরপূর্বের ৭ রাজ্য নিয়ে মুখ খুলেই বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন। সেই চিন সফরে মহম্মদ ইউনুসের আলোচনায় উঠে আসে বাণিজ্য ইস্যু। এবার বাণিজ্য সহ একাধিক ইস্যু ফোকাসে রেখে মহম্মদ ইউনুস যাচ্ছেন ভারতের বন্ধু দেশ জাপানে।
আগামী ২৮ মে, বুধবার, জাপানের উদ্দেশে রওনা হচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস। সদ্য তাঁর ইস্তফার জল্পনা বাংলাদেশের রাজনীতির অলিন্দে পারদ চড়ায়। তড়িঘড়ি একাধিক রাজনৈতিক দল, একাধিক মহলের সঙ্গে বৈঠকে বসেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস। চট্টগ্রাম বন্দর ইস্যু কেন্দ্র করে বাংলাদেশে প্রতিবাদ আন্দোলন জোরদার হতেই নড়েচড়ে বসে ইউনুস প্রশাসন। সঙ্গে বাংলাদেশের রাজনীতিতে 'মানবিক করিডর' ইস্যুও বেশ চাপে রেখেছে ইউনুস সরকারকে।দেশের এমন এক পরিস্থিতিতে এবার ভারতের বন্ধু দেশ জাপানে যাচ্ছেন ইউনুস। জানা যাচ্ছে ৪ দিনের সফরে যাচ্ছেন ইউনুস। সেখানে নিক্কেই ফোরামে ‘ফিউচার অব এশিয়া’ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা তাঁর। এছাড়াও জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সঙ্গে ৩০ মে ইউনুসের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে ইউনুসের।
উল্লেখ্য, বরাবরই বিভিন্ন ক্ষেত্রে বন্ধু জাপানকে পাশে পেয়েছে ভারত। দুই দেশের মধ্যে ‘স্পেশ্যাল স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড গ্লোবাল পার্টনারশিপ’ রয়েছে। সদ্য সেই জাপানে ভারতের প্রতিনিধি দল সফর করেছে ভারত-পাক সংঘাত ইস্যুতে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ ভারতীয় সাংসদদের একটি দল সেদেশে গিয়েছিল ‘অপারেশন সিঁদুর’ সম্পর্ক অবহিত করতে, সেই আলোচনাতেই পাকিস্তানের সন্ত্রাসের মুখোশ খুলে দেন অভিষেকরা। আর কূটনৈতিক আঙিনায় এই পাকিস্তানের সঙ্গেই ইউনুস আমলে ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে বাংলাদেশের।
এদিকে, জানা যাচ্ছে, জাপানে মূলত, ৭ টি সমঝোতায় স্মারক স্বাক্ষর করতে পারেন মহম্মদ ইউনুস। দুই দেশের শীর্ষ পর্যায়ে তেমনই প্রস্তুতি রয়েছে বলে খবর। বৈঠকে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং বিভিন্ন খাতভিত্তিক সহযোগিতা, বিশেষ করে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি ও সাংস্কৃতিক বিনিময় নিয়ে আলোচনা হতে পারে। বাংলাদেশ জুড়ে যখন ‘মানবিক করিডর’ ইস্যুতে রাজনৈতিক পারদ তুঙ্গে তখন ইউনুসের জাপান সফরে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় উঠে আসতে পারে রোহিঙ্গা ইস্যুও। এছাড়াও আলোচনা হতে পারে নিরাপত্তা সহযোগিতা এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয়ে। উল্লেখ্য, বেশ কিছু ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে সমঝোতার সম্ভাবনা রয়েছে। এগুলি হল, বাজেট সহযোগিতা,বিদ্যুৎ খাতে কৌশলগত সমঝোতা, নারায়ণগঞ্জে বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চলের (এসইজে) ভূমি নিয়ে সমঝোতা, মানবসম্পদ উন্নয়নবিষয়ক প্রবাসীকল্যাণে সমঝোতা, বিনিয়োগ উন্নয়ন সমঝোতা এবং প্রকল্পগুলোতে সরকারি উন্নয়ন সহায়তার বিষয়।