কোনও নারীর স্তন খামচে ধরলে কিংবা তাঁর পরনে থাকা পাজামার দড়ি খুলে ফেললও সেই ঘটনাকে ধর্ষণ বা ধর্ষণের চেষ্টা বলা যাবে না! তবে, সেই ঘটনাকে আক্রমণাত্মক যৌন হেনস্থা বলা যেতে পারে না, একটি মামলার প্রসঙ্গে এই পর্যবেক্ষণ করেছে উত্তরপ্রদেশের এলাহাবাদ হাইকোর্ট।
এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, একটি পকসো মামলার ক্ষেত্রে সেই মন্তব্য তরা হয়েছে। এক্ষেত্রে যে নির্যাতনের শিকার হয়েছে, সে একজন নাবালিকা। বয়স ১১ বছর। অভিযোগ, প্রধান অভিযুক্ত দুই ব্যক্তি তার স্তন স্পর্শ করে এবং তার পরনের পাজামার দড়ি ছিঁড়ে ফেলে। তারপর তাকে জোর করে মাটিতে ফেলে টেনে, হিঁচড়ে একটি কালভার্টের নীচে নিয়ে যাওয়া চেষ্টা করে! ঘটনাটি ঘটে উত্তরপ্রদেশের কাসগঞ্জে।
ঘটনা প্রসঙ্গে আরও জানা গিয়েছে, এটি ঘটেছিল ২০২১ সালে। ১১ বছরের বালিকাকে 'লিফট' দেওয়ার বাহানা করেছিল দুই অভিযুক্ত। আর, তারপরই তার সঙ্গে এই আচরণ করে ওই দুই ব্যক্তি। কিন্তু, মেয়েটির চিৎকারে ওই পথ দিয়ে যাওয়া বাকি মানুষজন এগিয়ে আসে। তারা বাধা দেওয়ার ফলেই সে যাত্রায় রক্ষা পায় নাবালিকা। কিন্তু, বেগতিক বুঝে ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেয় দুই অভিযুক্ত। পরবর্তীতে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত ওই দু'জনের নাম - পবন ও আকাশ। তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ নম্বর ধারা এবং পকসো আইনের ১৮ নম্বর ধারা অনুসারে মামলা রুজু করা হয়। কাসগঞ্জ ট্রায়াল কোর্টের নির্দেশেই এই ধারাগুলি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়।
এনডিটিভি-র প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, এলাদাবাদ হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪-বি নম্বর ধারা (নিগ্রহ অথবা পোশাক খুলে নেওয়ার উদ্দেশ্যে অপরাধমূলক শক্তির ব্যবহার) এবং পকসো আইনের ৯/১০ নম্বর ধারা (আক্রমণাত্মক যৌন নিগ্রহ) অনুসারে মামলা করতে হবে।
এই মামলায় তৃতীয় অভিযুক্ত হিসাবে পবনের বাবা অশোকের নাম রয়েছে। তাকে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০৪ নম্বর ধারা (শান্তি বিঘ্নিত করার লক্ষ্য়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অবমাননা করা) এবং ৫০৬ (অপরাধমূলক ভীতি প্রদর্শন) নম্বর ধারার অধীনে সমন পাঠানো হয়েছে। অশোকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, এই ঘটনার পর ওই বালিকা যখন তার কাছে গিয়েছিল, তখন অশোক তাকে অপমান করেছিল এবং ভয় দেখিয়েছিল।
এই মামলায় এলাহাবাদ হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ হল - আইন অনুসারে, যাকে ধর্ষণ বলা হয়, এক্ষেত্রে সেই ঘটনাা ঘটেনি। আদালতের মতে, যদি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ধর্ষণে চেষ্টার অভিযোগ আনতেই হয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট আইনজীবীকে প্রমাণ করতে হবে যে অভিযুক্তরা ধর্ষণের প্রস্তুতি পর্ব অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছিল।