আগামী ১৬ নভেম্বর সারা মহারাষ্ট্রে ব্যাঙ্ক ধর্মঘটের ডাক দিল ব্যাঙ্ক সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চ 'ইউনাইটেড ফোরাম অফ ব্যাঙ্ক ইউনিয়ন্স' (ইউএফবিইউ)। তাদের দাবি, 'লাডকী বহীন যোজনা'র উপভোক্তাদের একাংশের তাণ্ডবেই এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে তারা।
অভিযোগ, লাডকী বহীন যোজনার ওই উপভোক্তাদের জন্য ব্যাঙ্ক কর্মীদের 'অসুরক্ষিত পরিবেশে' কাজ করতে হচ্ছে! কারণ, ওই উপভোক্তারা ব্য়াঙ্কের কর্মীদের নানাভাবে হেনস্থা করছেন।
ইউএফবিইউ-এর রাজ্য আহ্বায়ক দেবাশিস তুলজাপুরকর এই প্রসঙ্গে অভিযোগ করে বলেন, 'লাডকী বহীন যোজনা যখন কার্যকর করা হচ্ছিল, সেই সময় ব্যাঙ্কগুলিতে এক চরম অব্যবস্থা তৈরি হয়। কারণ, সরকার পক্ষ কোনও সুষ্ঠু পরিকল্পনা ছাড়াই এই যোজনা ঘোষণা করে দিয়েছিল। এমনকী, এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলিকে যথাযথ তথ্যও সরবরাহ করা হয়নি। যার জেরে ব্যাঙ্ককর্মীরা রীতিমতো আতঙ্কের মধ্যে কাজ করতে বাধ্য হন। তাই আমরা স্থির করেছি, সমবেতভাবে এর প্রতিবাদ করব এবং একদিনের জন্য ধর্মঘটে সামিল হব।'
দেবাশিস জানিয়েছেন, এই যোজনার উপভোক্তাদের একাংশের গুন্ডামির জেরে ব্যাঙ্ক কর্মীরা এখনও ঠিক মতো কাজ করতে পারছেন না। বীড়, জলনা, লাটুর, ঢুলে এবং পুণে শহরে এমন একাধিক ঘটনা ঘটেছে, যেখানে উপভোক্তাদের হাতে ব্যাঙ্ক কর্মীদের হেনস্থা হতে হয়েছে। তাঁদের নানাভাবে আঘাত করা হয়েছে।
দেবাশিসের আরও অভিযোগ, শুধুমাত্র উপভোক্তারাই যে এমন হামলা চালাচ্ছেন, তাই নয়। তাঁদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতারাও। এই যোজনার অধীনে টাকা পাওয়ার জন্য ব্যাঙ্কগুলিতে নতুন অ্যাকাউন্ট খুলতে, অ্য়াকাউন্টের সঙ্গে আধার লিংক করাতে এবং অকেজো হয়ে পড়া অ্য়াকাউন্টগুলি পুনরায় সচল করতে লম্বা লাইন পড়ছে।
দেবাশিস জানিয়েছেন, 'স্বাভাবিক নিয়ম অনুসারেই, লাডকী বহীন যোজনার আওতায় মাসিক ভাতার টাকা উপভোক্তার অ্যাকাউন্টে জমা পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই সার্ভিস চার্জ বাবদ নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ওই অ্য়াকাউন্ট থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কেটে নেওয়া হচ্ছে।'
অভিযোগ, অনেক উপভোক্তাই এই টাকা কাটার প্রকৃত কারণ জানেন না, বা তাদের তা জানানোও হয়নি। ফলে তাঁরা এ নিয়ে স্থানীয় ব্যাঙ্কের কর্মীদের সঙ্গে রীতিমতো ঝগড়া, হাতাহাতি শুরু করে দিচ্ছেন।
বহু ক্ষেত্রে এলাকার নেতারা এই ধরনের হামলায় উস্কানি দিচ্ছেন। এমনকী, তাঁদের কেউ কেউ সরাসরি ব্যাঙ্ক কর্মীদের ভয় দেখাচ্ছেন, হুমকি দিচ্ছেন।
এই পরিস্থিতিতে ধর্মঘটের মতো কঠোর পরিস্থিতিতে যাওয়ার আগে ব্যাঙ্ক সংগঠনগুলিকে সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছেন রাজ্য়ের মন্ত্রী অতুল সাভে।