রোজভ্যালি কাণ্ডে বড় সিদ্ধান্ত নিল ওডিশার ভুবনেশ্বরের খুরদার একটি বিশেষ আদালত। যার জেরে বিরাট স্বস্তি পেতে চলেছেন রোজভ্যালিতে বিনিয়োগ করে টাকা হারানো ব্যক্তিরা।
টাইমস অফ ইন্ডিয়া-এর প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ, ২০২৫) ওই আদালত বাজার থেকে রোজভ্যালির তোলা এবং পরবর্তীতে বাজেয়াপ্ত হওয়া টাকার মধ্যে ৩৩২.৭ কোটি টাকা 'রিলিজ' করার অনুমতি দিয়েছে। এত দিন এই বিপুল পরিমাণ অর্থ বিভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্য়াকাউন্টে 'ফিক্সড ডিপোজিট' হিসাবে রক্ষিত ছিল।
আদালত সূত্রে জানানো হয়েছে, যাঁরা রোজভ্যালিতে টাকা জমা রেখেছিলেন বা বিনিয়োগ করেছিলেন, কিন্তু পরবর্তীতে আর নিজেদের সেই আমানত ফেরত পাননি, তাঁদের সেই মূলধন ফেরত দিতেই ওই ৩৩২.৭ কোটি টাকা ব্যবহার করা হবে।
প্রসঙ্গত, রোজভ্যালি কাণ্ডে তদন্ত শুরুর পর থেকে এখনও পর্যন্ত বিপুল পরিমাণ অর্থ ও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে কেন্দ্রীয় অর্থনৈতিক তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি। তারা এই বিষয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে জানিয়েছে, বর্তমানে ক্রোক করা সম্পদের বাজারদর প্রায় ৪৫০ কোটি টাকা।
ইডি-র বাজেয়াপ্ত করা সম্পদের মধ্যে বহু স্থাবর এবং অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে। এই অবস্থায় যাঁরা রোজভ্যালিতে বিনিয়োগ করে টাকা হারিয়েছিলেন, তাঁদের যাতে সেই অর্থ ফেরত দেওয়া যায়, তার জন্য আদালতের কাছে অস্থাবর সম্পত্তিগুলি 'রিলিজ' করার আবেদন জানিয়েছিল সংশ্লিষ্ট 'অ্যাসেট ডিসপোজাল কমিটি' (এডিসি)। বৃহস্পতিবারের অর্ডারে সেই আবেদন মেনে নিয়েছে আদালত।
অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি দিলীপ কুমার শেঠের তত্ত্বাবধান ও নজরদারির অধীনে এই এডিসি গঠন করা হয়েছিল। যে কমিটি ইতিমধ্যেই মোট পাঁচ দফায় ৩২,৩১৯ জন বিনিয়োগকারীকে ২১ কোটি টাকারও বেশি অর্থ ফেরত দিয়েছে।
এখনও পর্যন্ত ইডি-র তদন্ত ও অনুসন্ধান যত দূর এগিয়েছে, সেই অনুসারে তাদের অনুমান হল - রোজভ্যালিতে টাকা রেখে বিপদে পড়েছেন, এমন প্রায় ৩১ লক্ষ বিনিয়োগকারী তাঁদের টাকা ফেরত চেয়ে আবেদন জমা করেছেন।
এই প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার ভুবনেশ্বরের আদালত যে নির্দেশ দিয়েছে, তাতে আরও অসংখ্য বিনিয়োগকারীর বকেয়া অর্থ ফেরানো সম্ভব হবে বলেই আশা করছে সংশ্লিষ্ট মহল। এর ফলে টাকা হারানো বিনিয়োগকারীরাও উপকৃত হবেন।
প্রসঙ্গত, রোজভ্যালিতে যাঁরা টাকা জমা রেখেছিলেন, তাঁদের একটা বড় অংশই গরিব ও নিম্ন মধ্যবিত্ত। অতিরিক্ত সুদের আশায় তাঁরা রোজভ্যালিতে বিনিয়োগ করেছিলেন। কিন্তু, দুর্নীতি সামনে আসার পর, এবং কেন্দ্রীয় সংস্থা তদন্ত শুরু করতেই তাঁদের বিনিয়োগ করা অর্থও বাঁধা (বাজেয়াপ্ত) পড়ে যায়। আদালতের নির্দেশে সেই টাকা ফেরত পাওয়া গেলে এই ভুক্তভোগীরা কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবেন বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।