করাচি থেকে উড়ান শুরু করেছিল 'পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স' (পিআইএ)-এর বিমান পিকে-৩০৬। কিন্তু সেই বিমান যখন লাহোরের আল্লামা ইকবাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে, তখন দেখা যায়, বিমানের একটি চাকা (রিয়ার হুইল) স্রেফ গায়েব হয়ে গিয়েছে। এবং সেই চাকা ছাড়াই বিমানটি রানওয়েতে অবতরণ করেছে!
এর ফলে যে বড়সড় অঘটন ঘটতেই পারত, তেমনটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু, তেমন কোনও অঘটন ঘটেনি। এমনকী, বিমানের যে একটি চাকা নেই, সেটাও কারও নজরে আসেনি।
অবতরণের পর যখন বিমানটির রুটিন তল্লাশি ও স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হচ্ছিল, সেই সময়েই কর্মীরা চাকা গায়েব হওয়ার বিষয়ে জানতে পারেন এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এই বিষয়ে অবগত করেন। পাক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে পিআইএ।
পাক সংবাদমাধ্যমের কাছে ইতিমধ্যেই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছেন পিআইএ-র একজন মুখপাত্র। তিনি জানিয়েছেন, একটি রিয়ার হুইল ছাড়াই লাহোরে অবতরণ করেছেন পিকে-৩০৬।
শোনা যাচ্ছে, বিষয়টি সামনে আসার পর রীতিমতো খোঁজাখুঁজি শুরু করে দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ঘটনার পর প্রায় ১৪ ঘণ্টা কেটে গেলও সেই হারানো চাকার কোনও সন্ধান না তো করাচি বিমানবন্দরে পাওয়া গিয়েছে, না লাহোর বিমানবন্দরে পাওয়া গিয়েছে।
অন্যদিকে, সংবাদসংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, পিআইএ-র এক মুখপাত্র তাদের জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে অনুমান করা হচ্ছে, খুব সম্ভবত উড়ান শুরু করার মুহূর্তেই ওই চাকাটি করাচি বিমানবন্দরে খুলে গিয়ে থাকতে পারে। তাহলে সেই চাকা গেল কোথায়? কেন আগেই সেই ঘটনা কারও নজরে এল না?
এই প্রশ্নের উত্তর না মিললেও পিআইএ-র ওই মুখপাত্র দাবি করেছেন, করাচি বিমানবন্দরে চাকার কিছু বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া টুকরো অংশ পাওয়া গিয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, 'মনে হচ্ছে, উড়ান শুরু করার সময়েই একটি রিয়ার হুইলের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল!... (যদিও তারপরও) পিকে-৩০৬ নির্বিঘ্নেই অবতরণ করেছে!'
এই ধারণা বা তত্ত্ব সত্যি হলে তা যে কত বড় অবহেলা, সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। যদিও এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি ওই পিআইএ মুখপাত্র। বদলে তিনি জানান, 'নিয়ম মেনেই যাত্রীদের বিমান থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। তারপর রুটিন নজরদারিতে ধরা পড়ে, বিমানের মেইন ল্যান্ডিং গিয়ার (রিয়ার)-এ যে ছ'টি চাকা থাকে, তার মধ্যে একটি নেই!'
কীভাবে এমনটা ঘটল, তা কর্তৃপক্ষ খতিয়ে দেখছে। কেউ ওই চাকা চুরি করেছে কিনা, সেটাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে!