সোমবার বান্দ্রা পুলিশ থানায় সুশান্তের দুই দিদি, প্রিয়াঙ্কা সিং এবং মীতু সিং ও চিকিত্সক তরুণ কুমারের বিরুদ্ধে প্রয়াত অভিনেতাকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়া সহ আইপিসি ও এনডিপিএস আইনের একাধিক ধারায় এফআইআর দায়ের করেছেন রিয়া চক্রবর্তী। রিয়ার এই এফআইআরকে ভুয়ো বলে দাবি করলেন সুশান্তের অপর দিদি শ্বেতা সিং কীর্তি। তিনি যোগ করেন, এই ভুয়ো এফআইআর তাঁদের লড়াইকে দমিয়ে দিতে পারবে না। রিয়ার এফআইআর সংক্রান্ত একটি খবরের প্রতিবেদন টুইট করে শ্বেতা লেখেন, ‘আমাদের কিছুই ভাঙতে পারবে না,এই ধরণের ফেক এফআইআর তো অবশ্যই পারবে না’। সোমবার এনসিবির দফতরে সাড়ে আট ঘন্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ পর্বের মুখোমুখি হওয়ার পর সোজা বান্দ্রা থানায় হাজির হন রিয়া চক্রবর্তী। এবং সেখানে ৮ জুন সুশান্তকে ‘ অ্যানসাইটির জন্য জাল এবং বেআইনি প্রেসক্রিবশন পাঠানোয়’ এফআইআর দায়ের করলেন সুশান্ত মামলার মূল অভিযুক্ত।সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে রিয়ার তরফে দায়ের করা এই মামলা ইতিমধ্যেই সিবিআইকে হস্তান্তর করেছে মুম্বই পুলিশ। এন অম্বিকা, ডেসিপি (হেডকোয়াটার্স-১) তথা মুম্বই পুলিশের মুখপাত্র জানিয়েছেন, ‘রিয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে বান্দ্রা পুলিশ থানায়। সুপ্রিম কোর্টের রায় মেনে এই এফআইআর হস্তান্তর করে দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা (সিবিআই) এর হাতে, বিস্তারিত তদন্তের জন্য’।সুপ্রিম কোর্ট এই মামলা সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার সময় সাফ জানিয়েছল, সুশান্তের মৃত্যু সংক্রান্ত কোনও এফআইআর পরবর্তী সময়ে দাখিল হলে সেই মামলারও তদন্ত করবে সিবিআই।প্রিয়াঙ্কা সিং, মীতু সিং এবং নয়া দিল্লির রামমোনহর লোহিয়া হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ডঃ তরুণ কুমারের বিরুদ্ধে সুশান্তকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়া,প্রতারণা,জালিয়াতি এবং অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছেন রিয়া। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৬৪,৪৬৫,৪৬৬,৪৬৮,৪৭৪,৩০৬,১২০ (বি), ৩৪ ধারায় এবং এনডিপিএস আইন, ১৯৮৫ এর আওতায় ৮(সি), ২১,২২, এবং ২৯ এর আওতায় এফআইআর দায়ের করেছেন সুশান্তের লিভ ইন পার্টনার রিয়া চক্রবর্তী।সুশান্তের পরিবারের আইনজীবী বিকাশ সিং রিয়ার অভিযোগ সম্পর্কে সোমবার সন্ধ্যায় জানান, ‘এটা মুম্বই পুলিশকে এই মামলায় জিইয়ে রাখবার একটা প্রচেষ্টা মাত্র’। সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘ওঁরা এই ধরণের অপকর্ম করবেই যাতে সুশান্তের পরিবার ন্যায়বিচার না পায়’।তিনি যোগ করেন, ‘আমাকে রিয়ার অভিযোগের একটি কপি দেওয়া হয়েছে। এটা মুম্বই পুলিশের জুরিসডিকশন বজায় রাখবার চেষ্টা, যেখানে সুপ্রিম কোর্ট পরিষ্কারভাবে বলেছে সুশান্তের মৃত্যু সংক্রান্ত যে কোনও মামলার তদন্ত করবে সিবিআই’।গোটা দেশে চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা মামলায় নতুন টুইস্ট যোগ করল রিয়ার এই অভিযোগ।১৪ জুন বান্দ্রার অ্যাপার্টমেন্ট থেকে উদ্ধার হয় সুশান্ত সিং রাজপুতের দেহ, প্রাথমিক তদন্তে মুম্বই পুলিশের দাবি ছিল আত্মহত্যা করেছেন অভিনেতা। সোমবার এনসিবি দফতরে প্রায় সাড়ে আটঘন্টা ধরে জেরা চলে রিয়ার। এরপর ব্যালাড স্ট্রিটে এনসিবি অফিস থেকে সোজা সন্ধ্যা ৭ টা নাগাদ বান্দ্রা থানায় পৌঁছান রিয়া। এবং প্রায় ছ ঘন্টা বান্দ্রা থানায় ছিলেন সুশান্ত মামলার মূল অভিযুক্ত। রাত ১২.৫০ নাগাদ বান্দ্রা থানা থেকে জুহু তারায় অবস্থিত নিজের অ্যাপার্টমেন্টের উদ্দেশ্য মুম্বই পুলিশের নিশ্ছিত্র নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে রওনা দেন রিয়া।