শ্রীদেবীর সৌন্দর্যের মোহে তাঁর মা-কে ত্যাগ করেছিলেন বনি কাপুর। দুই সন্তানকে ভুলেছিলেন, এই 'ব্যাপারটা' মানতে পারেননি অর্জুন কাপুর। তাঁর শৈশব ছিন্নভিন্ন হয়েছিল বাবা-মা'র বিচ্ছেদ, বাবার পরকীয়া এবং দ্বিতীয় বিয়ের জেরে। বনি যখন শ্রীদেবীর গলায় মালা দেন তখন তাঁর মেয়ে অংশুলা দুধের শিশু। এই অবিচারের জ্বালা দীর্ঘসময় তাড়া করেছে অংশুলাকে।
অর্জুন-অংশুলার সঙ্গে তাঁদের সৎ মা শ্রীদেবীর সম্পর্ক সহজ ছিল না। বাবা-র দ্বিতীয় স্ত্রীর বাইরে শ্রীদেবী কোনওদিন তাঁদের ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠতে পারেননি। এমনকী শ্রীদেবীর জীবদ্দশায় সৎ বোনেদের সঙ্গেও সম্পর্ক ছিল না দুজনের। কিন্তু ২০১৮ সালে শ্রীদেবীর অকালমৃত্যুর পর কাছাকাছি আসে বনির দুই পরিবার। দুই সৎ বোন জাহ্নবী ও খুশিকে বড় দাদা-দিদির মতো আগলেছেন অর্জুন-অংশুলা।
অংশুলা সম্প্রতি বলেছেন যে কী কারণে তিনি এবং অর্জুন কাপুর খারাপ সময়ে জাহ্নবী এবং খুশিকে সমর্থন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। অংশুলা আরও বলেন যে ছোট থেকে সৎ বোনেদের নিয়ে তাঁর মধ্যে যে ধারণা ছিল তা বাদ দিয়ে তিনি দুজনকে জানার চেষ্টা করেছেন এবং এখন তাঁদের মধ্যে একটি ভাল বন্ধন তৈরি হয়েছে।
অংশুলা বলেন, ‘আমি আমার নিজের সম্পর্কে কথা বলব, আমার ভাইয়ের নয়। যখন ওদের সঙ্গে কথা বলি তখন আমার মাথায় একটাই ভাবনা ছিল যখন আমার মা মারা যায়, তখন আমার কী অবস্থা হয়েছিল।আমি চাইনি তারা একা এই জিনিসটির মুখোমুখি হোক। আমার এবং আমার ভাইয়ের মধ্যে একটি কথোপকথন হয়েছিল যে আমরা চাইনি যে তাঁরা একা এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হোক কারণ তাঁরা দুজনেই আমাদের তুলনায় খুব ছোট ছিল। ১৭ ও ২০ বছর বয়সে একই যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়েছে জাহ্নবী ও খুশিকে। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলেছি, শুধুমাত্র ওদের সমর্থন করতে। অংশুলা জানান, ওই পরিস্থিতিতে বাবা বনি কাপুরের পাশে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন তাঁর দাদা অর্জুন কাপুর। তাঁর কথায়, ’২০১৮ সালের পর থেকে আমরা তাঁকে জানতে শুরু করি, আমাদের জীবনের বাবার অধ্যায়টা ফাঁকা স্লেটের মতো ছিল। আমরা একে অপরের সম্পর্কে কী ভাবতাম বা আমাদের পরিবার আমাদের যা বলেছিল তার থেকে আমরা একে অপরকে আলাদাভাবে বোঝার সময় পেয়েছি।'
অংশুলা বলেন, এখন তাদের মধ্যে এমন একটি বন্ধন তৈরি হয়েছে যে জাহ্নবী এবং খুশি জানেন যে যাই ঘটুক না কেন, তাঁদের পাশে সবসময় তাঁদের দিদি আছে। তাঁরা একে অপরের বিচার করে না। তাঁরা চারজনই একে অপরের সাথে হৃদয় থেকে কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। আর তাঁরা চারজনে যাতে একসঙ্গে সময় কাটায় সেই দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়েছেন জাহ্নবী।
অর্জুনের মা মোনার সঙ্গে বিবাহিত থাকাকালীন বনি শ্রীদেবীর সঙ্গে পরকীয়ায় লিপ্ত হন। বনি ১৯৯৬ সালে মোনার সাথে বিবাহবিচ্ছেদ করেন এবং একই বছর শ্রীদেবীকে বিয়ে করেন। অর্জুনের বয়স তখন ১০ বছর, আর ছোট বোন অংশুলা কাপুরের বয়স ছিল মাত্র পাঁচ বছর। বনি ও শ্রীদেবীর দুই মেয়ে জাহ্নবী কাপুর ও খুশি কাপুর।
২০১২ সালে হাবিব ফয়সাল পরিচালিত 'ইশকজাদে' ছবির মাধ্যমে বলিউডে পা রাখেন অর্জুন, তাঁর অভিষেকের কয়েকদিন আগে ক্যানসার আক্রান্ত মোনা শৌরির মৃত্যু হয়। কাকতালীয়ভাবে, জাহ্নবীর প্রথম ছবি ধড়ক মুক্তির কয়েক মাস আগেই প্রয়াত শ্রীদেবীও। ভাগ্যের এই নিষ্ঠুর পরিহাস জুড়ে দিয়েছিল অর্জুন-জাহ্নবীকে।