আঙুলে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়লেন ঋষভ পন্ত! লর্ডস টেস্টের প্রথম দিনে কিপিং করলেন ধ্রুব জুরেল। ভারতের আগ্রাসী উইকেটকিপার-ব্যাটার ঋষভ পন্ত আঙুলে চোট পেয়ে চিকিৎসার জন্য মাঠ ছাড়তে বাধ্য হলেন। উইকেটকিপিং করতে গিয়েই তিনি এই আঘাত পান। তার অনুপস্থিতিতে কিপিংয়ের দায়িত্ব নেন ধ্রুব জুরেল।
জসপ্রীত বুমরাহর করা ৩৪তম ওভারে পন্ত একটি বল আটকাতে ডাইভ দেন, কিন্তু বলটি পরিষ্কারভাবে ধরতে পারেননি তিনি। ফলে ইংল্যান্ড ২ রান বাই হিসেবে তুলে নেয়। এরপরই পন্তকে ব্যথায় কষ্ট পেতে দেখা যায় এবং তিনি চিকিৎসার জন্য মাঠ ছাড়েন, সূত্র মারফৎ এই তথ্যটি জানা গেছে।
ঋষভ পন্ত যদি সিরিয়াস চোট পান, তাহলে সেটি ভারতের জন্য বড় ধাক্কা হবে। কারণ, তিনি এই সিরিজে ভারতের অন্যতম সেরা ব্যাটার। চার ইনিংসে তিনি করেছেন ৩৪২ রান, গড় ৮৫.৫০, যার মধ্যে রয়েছে দুটি শতরান ও একটি অর্ধশতরান। লিডসে করা জোড়া শতরানের মধ্যে তাঁর সেরা ইনিংস ছিল ১৩৪। টেস্টে ভারতের হয়ে উইকেটকিপার-ব্যাটার হিসেবে সবচেয়ে বেশি শতরান এবং SENA (দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া) দেশগুলিতে কোনো এশিয়ান কিপার হিসেবে সর্বোচ্চ রান তাঁরই ঝুলিতে।
ধ্রুব জুরেল এখন পর্যন্ত চারটি টেস্ট খেলেছেন, ছয় ইনিংসে করেছেন ২০২ রান, গড় ৪০.৪০, সর্বোচ্চ ৯০ রান, যা ছিল ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে তাঁর অভিষেক সিরিজে। যদিও এই সফরে এখনও তিনি মূল একাদশে সুযোগ পাননি, তবে India A দলের হয়ে ঘরোয়া ও বিদেশের মাটিতে (অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড) ভালো পারফরম্যান্স করেছেন।
এখন লর্ডস টেস্টের প্রথম দিনের চা বিরতি পর্যন্ত ইংল্যান্ড তুলেছে ১৫৩/২ রান সংগ্রহ করেছে। ইংল্যান্ডের রান ১৫০ ছুঁয়েছে, ব্যাট করছেন জো রুট ও ওলি পোপ। প্রথম সেশনের শেষে ইংল্যান্ড ছিল ১৫৩/২, রুট ৫৪* ও পোপ ৪৪* রানে অপরাজিত ছিলেন। দুজনে মিলে গড়েছেন ১০৯ রানের পার্টনারশিপ।
টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় ইংল্যান্ড। ওপেনার জ্যাক ক্রলি ও বেন ডাকেট জসপ্রীত বুমরাহ এবং আকাশ দীপের আগুন ঝরানো বোলিংয়ের মুখোমুখি হন, যেখানে শুরুতে খুব বেশি ক্যারি ছিল না, তবে ঘাস থাকায় বল সুইং করছিল।
প্রথম সাত ওভারে ইংল্যান্ড তোলে মাত্র ১৫ রান। এরপর অষ্টম ওভারে আকাশ দীপকে তিনটি বাউন্ডারি মেরে হাত খোলেন ক্রলি—একটি কভারের মধ্য দিয়ে, একটি স্লিপ কর্ডনের ওপর দিয়ে, এবং একটি দুর্দান্ত কভার ড্রাইভ। ১৩ তম ওভারে ইংল্যান্ড ছিল ৩৫/০, তখন ডাকেট ১৯* ও ক্রলি ১৮* রানে অপরাজিত ছিলেন। প্রথম ঘণ্টায় তারা কোনও উইকেট না হারিয়ে খেলেন।
ড্রিঙ্কস ব্রেকের পরই আক্রমণে আনা হয় অলরাউন্ডার নীতিশ কুমার রেড্ডিকে। তাঁর হাত ধরেই দুজন ওপেনারকে ফেরানো যায়—উভয়কেই ক্যাচ ধরেন উইকেটরক্ষক রিশভ পন্ত। ডাকেট ৪০ বলে ২৩ রানে (তিনটি চার) এবং ক্রলি ৪৩ বলে ১৮ রানে (চারটি বাউন্ডারি) ফেরেন। ডাকেট পুল করতে গিয়ে আউট হন, আর ক্রলির গ্লাভস ছুঁয়ে বেরিয়ে যাওয়া বলটি পন্ত তালুবন্দি করেন।
এরপর জো রুট ব্যাটিংয়ে যোগ দেন ওলি পোপের সঙ্গে। মহম্মদ সিরাজের ১৮তম ওভারে রুট দুটি বাউন্ডারি মেরে ১৬.৪ ওভারে ইংল্যান্ডের স্কোর ৫০ পার করেন। মিড-উইকেট দিয়ে ফ্লিক এবং কভার ড্রাইভে চমৎকার শট খেলেন রুট, যা তাঁর বড় ইনিংস খেলার সংকেত দেয়। প্রথম সেশন থেকে চা বিরতি পর্যন্ত বাকি সময়ে রুট ও পোপ খেলতে থাকেন, আর কোনও উইকেট পড়েনি।
চা বিরতি পর্যন্ত ইংল্যান্ডের সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড: ১৫৩/২ (জো রুট ৫৪*, ওলি পোপ ৪৪*, নীতীশ কুমার রেড্ডি ২/৩৫) বনাম ভারত।