রাজস্থান রয়্যালসের তরুণ ব্যাটার বৈভব সূর্যবংশী আইপিএলে অভিষেকের পর দ্রুত বিশ্ব ক্রিকেটে নাম লিখিয়েছেন। মূল যে বিষয়টি তাঁকে আলাদা করেছে, তা হল—তিনি মাত্র ১৪ বছর বয়সি। আইপিএল ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সে অভিষেক নেওয়া ব্যাটার হিসেবেও তিনি পরিচিত, পাশাপাশি ভারতের সর্বকনিষ্ঠ List-A অভিষেকেও তিনি নাম লিখিয়েছেন। আইপিএল-এর মঞ্চে নামার আগেই প্রশ্ন উঠেছিল—এই বিপুল বিনিয়োগ (৩০ লাখ থেকে ক্রয়ের ভিত্তিমূল্যে ১.১০ কোটি টাকায় কেনা) কি শুধুই ব্যবসায়ী ও মার্কেটিং প্ল্যান?
সূর্যবংশী প্রথমে রাজস্থানের ম্যাচে সুযোগ পায়নি, যতদিন না অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন চোট পান। এরপরই, ১৯ এপ্রিল লখনউ সুপার জায়ান্টসের বিরুদ্ধে অভিষেকে মাত্র ২০ বলে ৩৪ রান করে আইপিএল যাত্রা শুরু করেছিলেন তিনি। এই সময়ে প্রথম বলেই ছক্কা মেরে সকলের নজর কেড়েছিলেন তিনি!
২৮ এপ্রিল ছবিটা বদলে গেল, ১৪ বছর ৩২ দিনের বয়সেই তিনি আইপিএলে ৩৮ বলে ১০১ রান করেন, সেটি ছিল গুজরাট টাইটান্সের বিরুদ্ধে। এটি আইপিএলের ইতিহাসে দ্বিতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরি (৩৫ বল), কেবল ক্রিস গেইলের (৩০ বল) পরেই, এবং ভারতীয়দের দ্বিতীয় দ্রুততম (ইউসুফ পাঠানের পর)। এরপরই তিনি ভারত U‑19 টিমের হয়ে প্রস্তুতি ম্যাচে মাত্র ৯০ বলে ১৯০ রান সংগ্রহ করেন। এরই মধ্যে অনেকেই তুলনা করছেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি, যুবরাজ সিংহ, এবং বড়সড় তুলনাও শোনা যাচ্ছে ‘সচিন তেন্ডুলকরের মতো’।
সচিন যখন ১৬‑এ দেশের হয়ে পাকিস্তান সফরে টেস্টে অভিষেক করেন, তখন তো কোনও আইপিএলই ছিল না, তবে তার আগেই সতীর্থরা লক্ষ্য করেছিলেন— ‘ব্যাটিংয়ে স্বভাব, নিয়ন্ত্রণ, লম্বা ফরম্যাটে ধৈর্য’—যা পরিপক্ক ব্যাটার হওয়ার লক্ষণ ছিল।
কিন্তু প্রবীণ ভারতীয় স্পিনার ও প্রাক্তন BCCI নির্বাচক বেঙ্কটপতি রাজু মনে করেন—ভবিষ্যতের জন্য দ্রুত জাতীয় দলে নেওয়া ঠিক হবে না। হিন্দুস্তান টাইমসকে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, ওর সময় লাগবে। ওদের মধ্যে যারা বেরিয়ে এসেছে, তাদের U‑19 বিশ্বকাপগুলোতে বলার মতো পারফরম্যান্স করতে হবে। (ধোয়া) ডে ফোর ম্যাচগুলোয় দেখা যাবে। ওর কাছে সাদা বলের ট্যালেন্ট আছে, সেটা আমরা ইতিমধ্যেই দেখেছি।’
তিনি যোগ করে জানান সচিনের সঙ্গে বৈভবের কোনও তুলনাই হয় না। তিনি বলেন, ‘তুলনা করাটা ঠিক নয়। সচিনের সময়কালে সে ভারতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার আগে রঞ্জির‑প্রথম ম্যাচেই সেঞ্চুরি করেছিলেন, Duleep‑তে সেঞ্চুরি করেছিলেন, Rest‑of‑India‑তেও শতরান হাঁকিয়েছিলেন। তিন ফরম্যাটেই সফল হয়েছিলেন তিনি। এখন যদি ও খেলার ধারাবাহিকতায় এটি দেখাতে পারে, তাহলে আমরা তাঁকে জাতীয় দলে নিয়ে আসতে পারব।’
এ সময় রাজু সহজভাবে বলে দিলেন—বয়সে যতই ছোট হোক, বৈভব U‑19 বিশ্বকাপ ও চার‑দিনের ম্যাচে ধারাবাহিকভাবে সাফল্য পাবে একবার, তার পরই আমরা তাঁকে জাতীয় দলে সুযোগ দিতে পারি।