মহেন্দ্র সিং ধোনিকে নিয়ে আইপিএল ২০২৫ মরশুমের শুরু থেকেই চলছে সমালোচনার ঝড়। আগের ছয় ম্যাচে ব্যাট হাতে তাঁর পারফরম্যান্স ছিল হতাশার। কিন্তু লখনউ সুপার জায়ান্টসের বিরুদ্ধে পুরনো ধোনিকে ফিরে পাওয়া গেল। উইকেটের পিছনে তাঁর ক্ষিপ্রতা নিয়ে কোনও সংশয় আগে থেকেই ছিল না। সোমবার (১৪ এপ্রিল) উইকেটের পিছনে দাঁড়িয়ে একা দায়িত্ব নিয়ে লখনউ সুপার জায়ান্টসের রান নিয়ন্ত্রণ করলেন ধোনি। সেই সঙ্গে ব্যাট হাতেও দলকে ভরসা জুগিয়ে নিন্দুকদের মুখ বন্ধ করলেন। অধিনায়ক হয়ে প্রত্যাবর্তন করার পর, দ্বিতীয় ম্যাচেই চেন্নাই সুপার কিংসকে জয়ে ফেরালেন মাহি। ঘরের মাঠে ‘গুরু’র হাতেই বধ হলেন পন্ত। এদিকে টানা পাঁচ ম্যাচ হারের পর জয়ে ফিরল চেন্নাইয়ের দল।
পন্তের হাফসেঞ্চুরির পরেও, ধোনির কেরামতিতে ১৬৬-তেই শেষ লখনউয়ের ইনিংস
অবশেষে ২৭ কোটির ঋষভ পন্তের ব্যাটের মুখ খুলল তাঁর ‘গুরু’ মহেন্দ্র সিং ধোনির দলের বিরুদ্ধেই। এদিন লখনউ সুপার জায়ান্টসের হয়ে হাফসেঞ্চুরি করেন পন্ত। তাঁর সৌজন্যেই কিছুটা অক্সিজেন পায় লখনউ।
এদিন ঘরের মাঠ একানা স্টেডিয়ামে খেলতে নেমে টস হারেন পন্ত। ধোনি লখনউকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠান। আর ব্যাট করতে নেমেই বিপর্যয়ের মুখে পড়ে লখনউ সুপায় জায়ান্টস। প্রথম ওভারেই এডেন মার্করামকে (৬) ফেরান খলিল আহমেদ। দুরন্ত ক্যাচ নেন রাহুল ত্রিপাঠি। চতুর্থ ওভারে আবার বিধ্বংসী ব্যাটার নিকোলাস পুরানের গুরুত্বপূর্ণ উইকেটটি তুলে নেন অংশুল কম্বোজ। যদিও ধোনি ডিআরএস নিচ্ছিলেন না, কিন্তু অংশুল জোর করায় বাধ্য হন তিনি ডিআরএস নিতে। এবং সেটি ফলপ্রসূ হয় সিএসকে-র জন্য।
এর পর চারে নেমে তৃতীয় উইকেটে মিচেল মার্শকে নিয়ে জুটি গড়ার চেষ্টা করেছিলেন ঋষভ পন্ত। তারা জুটিতে হাফসেঞ্চুরিও করেন। কিন্তু ২টি করে চার, ছয়ের সৌজন্যে ২৫ বলে ৩০ করে সাজঘরে ফেরেন মার্শ। মার্শ আউট হলে, প্রথমে আয়ুষ বাদোনি এবং তার পর আব্দুল সামাদের সঙ্গে পন্ত জুটি গড়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু ধোনি সেই জুটি স্থায়ী হতে দেননি। প্রথম বাদোনিকে (১৭ বলে ২২) স্টাম্প করেন মাহি। তার পর নন-স্ট্রাইকার জোনের উইকেট এক টিপে ভেঙে আব্দুল সামাদকে (১১ বলে ২০) সাজঘরে ফেরান সিএসকে অধিনায়ক।
সামাদ ফেরার পরের বলেই পন্তের দুরন্ত একটি ক্যাচ নেন ধোনি। উইকেটে পিছনে এদিন অনবদ্য মেজাজে ছিলেন মাহি। অসাধারণ ফিল্ডিং করেছেন। যার জেরে মাথিশা পাথিরানার বলে পন্তও ৪৯ বলে ৬৩ করে আউট হয়ে যান। তাঁর ইনিংসে ছিল চারটি করে চার এবং ছয়। শেষমেশ নির্দিষ্ট ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৬৬ রান করে লখনউ সুপার জায়ান্টস। সিএসকে-র হয়ে মাথিশা পাথিরানা এবং রবীন্দ্র জাদেজা ২টি করে উইকেট নেন।
ধোনি-শিবম জুটিতে জয়ে ফিরল সিএসকে
১৬৭ রানের লক্ষ্য খুব বড় ছিল না। সেই রান তাড়া করতে নেমে সিএসকে-র দুই ওপেনার শেখ রশিদ এবং রাচিন রবীন্দ্র শুরুটা খারাপও করেননি। ৪.৫ ওভারে প্রথম উইকেটে তাঁরা ৫২ রান যোগ করে ফেলেছিলেন। কিন্তু ৬টি চারের হাত ধরে ১৯ বলে ২৭ করে আউট হয়ে যান রশিদ। রাচিন রবীন্দ্রও এর পর আউট হন ২২ বলে ৩৭ করে। মারেন ৫টি চার।
কিন্তু ৭৪ রানে ২ উইকেট থেকে ৯৬ রানে চার উইকেট পড়ে যায় চেন্নাই সুপার কিংসের। সেই সময়ে বেশ চাপে পড়ে গিয়েছিল সিএসকে। খেলার রং কিছুটা হলেও বদলে দিয়েছিলেন লখনউয়ের বোলাররা। রাহুল ত্রিপাঠি (১০ বলে ৯), রবীন্দ্র জাদেজা (১১ বলে ৭) এদিন ব্যর্থ হন। জাদেজা ব্যাট হাতে বহু দিন ধরেই অত্যন্ত খারাপ ফর্মে রয়েছেন। ব্যর্থ হয়েছেন বিজয় শঙ্করও (৮ বলে ৯)। তবে শিবম দুবে এবং মহেন্দ্র সিং ধোনি মিলে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন।