ভারতীয় স্পিনার কুলদীপ যাদব মনে করন, ইনজুরি কাটিয়ে তিনি এখন নিজের ছন্দ ফিরে পেয়েছেন এবং চলতি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে প্রতি ম্যাচের সঙ্গে তিনি আরও উন্নতি করবেন। রবিবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচে ডেথ ওভারে তিনটি উইকেট শিকার করেন কুলদীপ যাদব। তিনি একটা সময় হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও তৈরি করেছিলেন। গত বছর স্পোর্টস হার্নিয়ার কারণে অস্ত্রোপচার করাতে হয়েছিল কুলদীপকে, যার ফলে তিনি তিন মাসের বেশি সময় ক্রিকেটের বাইরে ছিলেন। তবে ফিরে এসেই চমক দেখাচ্ছেন কুলদীপ যাদব।
নিজের পারফরমেন্স নিয়ে কী বললেন কুলদীপ যাদব?
ভারত বনাম পাকিস্তান ম্য়াচের পরে কুলদীপ যাদব বলেন, ‘ইনজুরি থেকে সেরে উঠতে ছয় মাস সময় লাগে। আমি ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে দুটি ম্যাচ খেলেছি। তখনও ভালো ছন্দে ছিলাম। বাংলাদেশের বিরুদ্ধেও আমার ভালো ছন্দ ছিল। কিন্তু স্পিনার হিসেবে সবসময় উইকেট নেওয়ার চেষ্টা থাকে (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে উইকেটশূন্য ছিলেন)। তবে আজ যখন প্রথম ওভার করলাম, তখনই মনে হল আমি আগের চেয়ে আরও ভালো ছন্দে আছি। আমি এখন বেশ স্বস্তিতে আছি।’
কুলদীপ যাদব আরও বলেন, ‘এখনও মনে হচ্ছে আমি আরও ভালো বোলিং করতে পারব। মাত্র ৩-৪টি ম্যাচ খেলেছি। আরও বেশি ম্যাচ খেললে আরও উন্নতি হবে।’ পাকিস্তানের বিপক্ষে ছয় উইকেটের জয়ের পর মিশ্র অঞ্চলে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মুখ খোলেন কুলদীপ যাদব।
আরও পড়ুন … ১টা খেলা বেঁচে ছিল, সেই ক্রিকেটকেও শেষ করে দিল.....হাহাকার পাকিস্তানের প্রাক্তনীদের
নাসিম, সলমন, শাহিনকে আউট করার পরিকল্পনা নিয়ে কী বললেন কুলদীপ যাদব-
রবিবার নাসিম শাহ, সলমন আলি আঘা ও শাহিন শাহ আফ্রিদিকে আউট করেন কুলদীপ যাদব। নিজের পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘প্রথম স্পেলে আমি বেশ কিছু চায়নাম্যান বল করেছি। ‘রং ওয়ান’ (গুগলি) আমার একটি বৈচিত্র্য। আমি ‘টপস্পিন’ও করেছি রং ওয়ানের সঙ্গে। সলমনের উইকেটটি ছিল সাধারণ চায়নাম্যান ডেলিভারি। এটি ধীরগতির ছিল, তবে আমি গতি পরিবর্তন করেছিলাম। দ্বিতীয় উইকেট ছিল প্রথম বলেই সুইং করা। আমি স্টাম্প টার্গেট করছিলাম। মনে হয়েছিল রং ওয়ান দেওয়াটা ভালো বিকল্প হতে পারে। তাই আমাকে সবসময় ভাবতে হয়, কোন বলটা করব। ধীরগতির উইকেটে ইনকামিং ডেলিভারিগুলো ব্যাটারদের জন্য কঠিন হয়। তাই এটাই ছিল আমার পরিকল্পনা।’
আরও পড়ুন … IND vs PAK: অনুষ্কা ছিলেন না, তাও সেঞ্চুরি করে কার দিকে ব্যাট দেখান বিরাট? জানলে চমকে যাবেন!
আরও নিখুঁত হতে চান কুলদীপ যাদব-
কুলদীপ মনে করেন, তিনি নিজের নিখুঁততা আরও বাড়াতে পারবেন। তিনি বলেন, ‘সত্যি বলতে, নিখুঁতভাবে বল করা নিয়ে বলতে গেলে, আমি মনে করি যত বেশি ম্যাচ খেলব, তত ভালো হব। যখন আপনি বেশি ম্যাচ খেলেন, তখন গতি নিয়ন্ত্রণ করাও সহজ হয়ে যায়।’ তিনি ডেথ ওভারে বল করার চ্যালেঞ্জ উপভোগ করেন। কুলদীপ বলেন, ‘আমি শেষ ১০ ওভারে বোলিংয়ের প্রথম পছন্দ হতে পেরেছি। এমনকি অধিনায়কও অনুভব করেন যে, যখন স্পিনারের বৈচিত্র্য থাকে, তখন তাকে মারা কঠিন হয়ে যায়।’
কুলদীপ আরও বলেন, ‘সৌভাগ্যবশত, উইকেট ধীরগতির ছিল, যা আমার জন্য ভালো হয়েছে। আমি গতি পরিবর্তন ও রং ওয়ান বা টপস্পিন দিয়ে মিশ্রণ তৈরি করছিলাম। যখন আপনি মাঝখানে ১-২টি উইকেট পান, তখন ব্যাটাররা আপনাকে ঠেকিয়ে খেলতে বাধ্য হয়। সেটাই ঘটেছিল শেষ ১০ ওভারে। পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলা মানেই সমর্থকদের প্রচুর প্রত্যাশা থাকে। তবে আমি এটি উপভোগ করি।’
আরও পড়ুন … IND vs PAK: 'লজ্জা করো ভারত, বাচ্চাদের এভাবে র্যাগিং করছো...!' খেপে লাল পাকিস্তান ফ্যানরাই
দ্রুত ইনজুরি কাটিয়ে ওঠার কৃতিত্ব এনসিএ-কে দিলেন কুলদীপ যাদব-
ন্যাশনাল ক্রিকেট অ্যাকাডেমির (NCA) কর্মীদের কঠোর পরিশ্রমের ফলেই এত দ্রুত সুস্থ হতে পেরেছেন বলে জানান কুলদীপ যাদব। তিনি বলেন, ‘আমি এনসিএ-কে অনেক কৃতিত্ব দেব। আমি রাজনির (ফিজিও) সঙ্গে কাজ করেছি। আমাদের ফিজিও ধনঞ্জয় ছিলেন, তিনি নীতিন প্যাটেলের অধীনে ছিলেন। আমি একদিনের জন্যও বিশ্রাম নিইনি, মাত্র দুই দিন ছুটি নিয়েছিলাম। তিনি (নীতিন) আমাকে ডেকে পাঠান। আমি খুবই মনোযোগী ছিলাম। জানতাম যে যদি সামান্য দেরিও হয়, তাহলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি মিস করতে পারব। আমি কখনো ভাবিনি এত তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠতে পারব। কিন্তু স্টাফরা খুব কঠোর পরিশ্রম করেছে।’