অসম-সহ গোটা দেশের মনভার। সিঙ্গাপুরের সাগরে স্কুবা ড্রাইভিং করতে গিয়ে অকালে প্রাণ হারিয়েছেন গায়ক জুবিন গর্গ। তাঁর মৃত্যুতে কাঁদছে গোটা অসম। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মাই সবার প্রথম নিশ্চিত করেছিলেন জুবিনের মৃত্যু সংবাদ। তিনি শনিবার এক্স-এ বলেন, সিঙ্গাপুরে জুবিনের ময়নাতদন্ত করা হবে, তারপর তার মরদেহ ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
ইতিমধ্যেই সেই ময়নাতদন্তের কাজ শেষ হয়েছে। দিল্লিতে শনিবার রাতে এসে পৌঁছাবে গায়কের মরদেহ। তা গ্রহণ করতে রাজধানীতে হাজির হবেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, গুয়াহাটির সরুসাজাইয়ে রাখা হবে জুবিন গর্গের মরদেহ। সেখানে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পারবে ভক্তরা। জানা যাচ্ছে, শনিবার দিল্লিতে জুবিনের মরদেহ আসার পর বিশেষ বিমানে গুয়াহাটি উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে, রবিবার ভোর ৬টা নাগাদ অসমের মাটি স্পর্শ করবে জুবিনের নিথরদেহ।
এরপর গায়কের মরদেহ পৌঁছাবে তাঁর কাহিলিপাড়ার বাসভবনে। সেখানে তাঁর অপেক্ষায় ৮৫ বছর বয়সী বৃদ্ধ বাবা। সেখান থেকে দেহ নিয়ে যাওয়া হবে সরুসাজাইয়ের স্টেডিয়ামে। গায়কের শেষকৃত্য সম্পর্কে পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য সরকার। ওদিকে শনিবারই গায়কের মৃত্যুতে তিনদিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালন করবে অসম।
এর আগে মুখ্য়মন্ত্রী বলেন, 'আমি ভারতের হাইকমিশনার ড. শিল্পক আম্বুলের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। প্রিয় জুবিনের মরদেহ দ্রুত আসামে ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা সমন্বয় করছি। প্রক্রিয়াটি দৃঢ় হওয়ার সাথে সাথেই আমি একটি আপডেট শেয়ার করব। @HCI_Singapore।
অসমের মুখ্যমন্ত্রী তাঁর স্ত্রী রিঙ্কিকে নিয়ে গুয়াহাটিতে জুবিনের বাড়িতেও যান। প্রয়াত গায়িকার স্ত্রী গরিমা সাইকিয়া গর্গের সঙ্গে দেখা করেন তাঁরা। ছবি শেয়ার করে অসমের মুখ্যমন্ত্রী টুইট করেছেন, 'রিঙ্কি এবং আমি এই দুঃখের সময়ে তাঁর পরিবারের পাশে দাঁড়াতে গুয়াহাটিতে আমাদের প্রিয় জুবিনের বাসভবনে গিয়েছিলাম। তিনি আরও বলেন, ‘তাঁর হাজার হাজার ভক্ত রাস্তায় তাঁর শেষ দর্শনের জন্য অপেক্ষা করছেন - আমরা তাকে শিগগিরই অসমে ফিরিয়ে আনার জন্য নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি।’
জুবিন নর্থ ইস্ট ফেস্টিভ্যালে অংশ নিতে সিঙ্গাপুর গিয়েছিলেন, যেখানে তাঁর পারফর্ম করার কথা ছিল। উৎসবে পারফরম্যান্সের একদিন আগে স্কুবা ডাইভিংয়ের সময় শ্বাসকষ্টের জেরে তিনি মারা যান বলে অভিযোগ করা হয়েছে। জুবিনের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে অসমের মুখ্যমন্ত্রী এক বিবৃতিতে বলেছেন, জুবিনের কণ্ঠে মানুষকে উত্তেজিত করার অতুলনীয় ক্ষমতা রয়েছে এবং তাঁর সংগীত সরাসরি মন এবং আত্মার সাথে কথা বলে'। তিনি বলেন, ‘আজ অসম তার প্রিয় সন্তানদের মধ্যে একজনকে হারিয়েছে এবং জুবিন রাজ্যের জন্য কত বড় সম্পদ ছিলেন তা বর্ণনা করার ভাষা আমার কাছে নেই। তিনি খুব তাড়াতাড়ি চলে গেছেন, এটি যাওয়ার বয়স ছিল না। তাঁর অনন্য কণ্ঠস্বর জনগণকে আলোড়িত করেছিল, এমন সংগীত তৈরি করেছিল যা সর্বস্তরের মানুষের হৃদয় এবং আত্মাকে স্পর্শ করেছিল। তাঁর অকাল মৃত্যু এক শূন্যতা রেখে যাবে এবং তা কখনই পূরণ হবে না’।
নর্থইস্ট ইন্ডিয়া ফেস্টিভ্যালের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, স্কুবা ডাইভিংয়ের সময় শ্বাসকষ্ট হয়েছিল জুবিনের। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগে তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে সিপিআর দেওয়া হয়। তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা সত্ত্বেও ভারতীয় সময় দুপুর ২.৩০ টার দিকে আইসিইউতে মৃত্য়ু হয় গায়কের।