আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে ছিটকে গেল ইংল্যান্ড। আরও একবার জোস বাটলারের দলকে চমকে দিল আফগানিস্তান। ব্যাট হাতে ইব্রাহিম জাদরানের দুর্ধর্ষ ইনিংসের পর বল হাতে পেসার আজমাতউল্লাহ ওমারজাই তুললেন পাঁচ উইকেট। আর তাতেই আফগানরা ম্যাচ জিতে নিল ৮ রানে। পরপর দুই ম্যাচ হেরে ইংল্যান্ড ছিটকে গেল প্রতিযোগিতা থেকে।
টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমেছিল আফগানিস্তান। কিন্তু জোফ্রা আর্চারের বিধ্বংসী স্পেলের সামনে ধরাশায়ী অবস্থা হয় আফগানদের। রহমানউল্লাহ গুরবাজ ৬, সেদিকউল্লাহ অটল ৪ এবং রহমত শাহ ফেরেন মাত্র ৪ রানে। ওপেন করতে নেমে একাই তখন লড়ে যান ইব্রাহিম জাদরান, তাঁর শতরানের সুবাদেই স্কোর ৩০০র গণ্ডি টপকে ফেলে আফগানরা।
আরও পড়ুন-FIH Pro League-এ চমক ভারতের! প্যারিস অলিম্পিক্সে সোনাজয়ী নেদারল্যান্ডসকে হারাল দীপিকারা
আফগানিস্তানের মাটিতে ইব্রাহিম জাদরানের এই ইনিংস বহুদিন মনে রাখবে সকলের। আসলে ইংল্যান্ডের আগের ম্যাচ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে কোনও ১৫০+ স্কোর ছিল না। সেখানে এই ম্যাচের পর ইতিমধ্যেই দুটি ১৫০+ স্কোর করে ফেলল ব্যাটাররা। আগের ম্যাচে করেছিলেন বেন ডাকেট, এই ম্যাচে করলেন ইব্রাহিম। সেই সুবাদেই ৩৭/৩ থেকে আফগান দলের স্কোর পৌঁছায় ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ৩২৫ রানে।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে ফিল সল্ট এবং জেমি স্মিথের উইকেট দ্রুত হারায় ইংল্যান্ড। ওমারইজাই মাত্র ১২ রানের মাথায় ফেরান রহমানউল্লাহ গুরবাজকে। জেমি স্মিথকে ৯ রানে আউট করেন মহম্মদ নবি। হ্যারি ব্রুকও ২১ বলে ২৫ রান করে আউট হন। এরপরই ইংল্যান্ডের মরণ বাঁচন ম্যাচে হাল ধরেন অধিনায়ক জস বাটলার এবং দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত সৈনিক জো রুট।
দুর্দান্ত শতরান করে আফগানিস্তানের হাতে নাগালে প্রায় চলে যেতে বসা ম্যাচেই প্রাণ এনে দেন জো রুট। জোস বাটলার ৪২ বলে ৩৮ রান করে ওমারজাইয়ের বলে আউট হন। এরপর লিভিংস্টোনও আউট হন মাত্র ১০ রানে। শেষদিকে মাথায় ঠান্ডা রেখেই জো রুটের সঙ্গে ম্যাচ বের করার লড়াইয়ে সামিল হন জেমি ওভার্টন। বাড়তে থাকা RRRকে আয়ত্তে আনেন ওভার্টন-রুট।
ওয়ান ডে ক্রিকেটে নিজের ১৭তম শতরান পেলেন জো রুট। ২০১৯ সালের পর এই প্রথম ওডিআইতে শতরানের দেখা পেলেন রুট। তাঁকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে নিয়ে যে ইসিবি কোনও ভুল করেনি, সেটা সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে এসেই প্রমাণ করে দিলেন বর্ষিয়ান রুট। অবশ্য ক্লাইম্যাক্স বাকি ছিল শেষ পাঁচ ওভারে।
৪৬তম ওভারের পঞ্চম বলে আউট হন জো রুট। আজমাতউল্লাহ ওমারজাইকে বড় শট মারতে গিয়ে রহমানউল্লাহ গুরবাজের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন রুট। শেষ হয় দুর্দান্ত ইনিংসের। ১১১ বলে ১২০ রান করেন রুট। ইনিংসে মারেন ১১টি চার এবং ১টি ছয়। এরপর জেমি ওভার্টন ইংল্যান্ডের ইনিংসকে টেনে নিয়ে যান। তিনি ২৮ বলে ৩২ রান করে সেই ওমারজাইয়ের বলেই আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন। শেষ ২ ওভারে তখন বাকি ছিল ১৬ রান।
৮ বলে ১৪ রান করে ফজলহক ফারুকির বলে ৪৯তম ওভারে আউট হন জোফ্রা আর্চার। শেষ ওভারে ইংল্যান্ডের দরকার ছিল কমপক্ষে ১২ রান ম্যাচ ড্র করার জন্য। আর আফগানিস্তানের দরকার ছিল ১ উইকেট। ওমারজাইয়ের হাতেই শেষ ওভারে বোলিংয়ের দায়িত্ব তুলে দেন আফগান অধিনায়ক শাহিদি। প্রথম চার বলে চার রান দেন ওমারজাই। ফলে শেষ ২ বলে ইংল্যান্ডের জয়ের জন্য দরকার ছিল ৯ রান। পঞ্চম বলে আদিল রশিদকে আউট করেন ওমারজাই, এক্ষেত্রে ক্যাচ নেন ইব্রাহিম জাদরান। ম্যাচে পাঁচ উইকেট নেন ওমারজাই।