এআই ব্যবহার করে কয়েকটি হাসপাতালে গুগল লোকেশন আপলোডের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সুতরাং একজন রোগীর ভর্তির পরে, অস্ত্রোপচারে যাওয়ার আগে–পরে, শয্যায় আসার পরে এবং ছুটির সময়ে রোগীর ছবি তুলে আপলোড করতে হবে। সেখানে কোনও অনিয়ম থাকলে সহজেই চিহ্নিত করে দেবে এআই। যা এককথায় অত্যন্ত কঠিন কাজ।
স্বাস্থ্য ভবন
স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে চিকিৎসার নামে কিছু বেসরকারি নার্সিংহোম দুর্নীতি করছে বলে প্রায়ই নবান্নে অভিযোগ আসে। আর তার জেরে প্রত্যেকদিন প্রায় দু’লাখ নথি যাচাই করতে হয় স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে। সেখান থেকে গরমিল বা অনিয়ম খুঁজে বের করাটা বেশ কঠিন কাজ। তবে তাই করতে হয়েছে। তাই এবার এই কাজ সহজে করে ফেলতে কৃত্রিম মেধার (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই) ব্যবহার শুরু করেছে স্বাস্থ্য দফতর। এই কত্রিম মেধা বা এআই এবার আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের নজরদারিতে ব্যবহারের পরিকল্পনা করেছে নির্বাচন কমিশন।
এদিকে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের পথেই হাঁটতে চলেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরও। আসলে চিকিৎসার করার নামে ভুয়ো বিল করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। আবার বেসরকারি হাসপাতালে রেফার করে কমিশন নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বেশ কয়েকটি নার্সিংহোম বা বেসরকারি হাসপাতালের পাঠানো স্বাস্থ্যসাথীর নথিতে ইতিমধ্যেই অনিয়ম ধরা পড়েছে। ভুয়ো নথিও বেশ কিছু পাওয়া গিয়েছে। যা কৌশলে জমা করে বিলের টাকা তুলে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। এবার এআই দিয়ে অনেক দ্রুত কাজ করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। ভুয়ো নথি জমা দেওয়ার অভিযোগে ২০২২ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত ৭৪টি বেসরকারি হাসপাতালকে কোপে পড়তে হয়েছে। প্রায় আট কোটি টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
অন্যদিকে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে অনিয়ম ধরতে হাসপাতালে হঠাৎ পরিদর্শন করা ও ফোন করে রোগীর থেকে বিস্তারিত তথ্য যাচাইয়ের হচ্ছিল। তখনই ভুয়ো নথি সামনে চলে আসে। তবে অনেকেই আবার ফাঁক–ফোকর দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে। সেটা রোখাই এখন প্রধান লক্ষ্য। তাই স্বাস্থ্যসাথীর বিল বকেয়া আছে, এমন অভিযোগ অনেকে করতে পারছেন না। কারণ ঠিক সময়ে টাকা দেওয়া হচ্ছে। সূত্রের খবর, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে রোজ দু’লাখ নথি খতিয়ে দেখতে হয়। যা এককথায় অত্যন্ত কঠিন কাজ। তাই লক্ষ লক্ষ নথির মধ্যে প্রেসক্রিপশন, প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষার রিপোর্ট সহজেই চিহ্নিত করে দেবে এআই। তাতেই গরমিল ধরা পড়বে।
স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে অস্ত্রোপচারের তারিখ, সময়, চিকিৎসকের নাম নথিভুক্ত করতে হয় পোর্টালে। তার জেরে একজন চিকিৎসক দৈনিক কতগুলি অস্ত্রোপচার করছেন সেটা সহজে হিসাব রাখতে পারা যাবে। এআই ব্যবহার করে কয়েকটি হাসপাতালে গুগল লোকেশন আপলোডের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সুতরাং একজন রোগীর ভর্তির পরে, অস্ত্রোপচারে যাওয়ার আগে–পরে, শয্যায় আসার পরে এবং ছুটির সময়ে রোগীর ছবি তুলে আপলোড করতে হবে। সেখানে কোনও অনিয়ম থাকলে সহজেই চিহ্নিত করে দেবে এআই। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্বাস্থ্য কর্তা বলেন, ‘কোন হাসপাতালের কোন ধরনের ভুল কতবার হচ্ছে সেটা দেখে লাল, হলুদ এবং সবুজ রঙে চিহ্নিত করা হচ্ছে। বারবার লাল হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’