রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির আবহে ফের বড় পদক্ষেপ নিল স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। আদালতের রায় মেনে ২০১৬ সালের প্রথম এসএলএসটি পরীক্ষায় ‘টেন্টেড’ হিসেবে চিহ্নিত কয়েকশো প্রার্থীর আবেদন খারিজ করে দিল কমিশন। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে দ্বিতীয় এসএলএসটি (২০২৫)-এর প্রভিশনাল অ্যাডমিট কার্ড আপলোড করা হলেও বাদ পড়লেন একাধিক প্রার্থী।
আরও পড়ুন: এসএসসির ভূমিকায় প্রশ্ন আদালতের, ‘চিহ্নিত অযোগ্যদের’ নিয়ে যুক্তি দিলেন কল্যাণ
এসএসসি জানিয়েছে, যাঁদের আবেদন বাতিল হয়েছে তাঁরা ওয়েবসাইটে লগইন করে বাতিলের কারণ দেখতে পারবেন। কমিশনের এই পদক্ষেপকে স্কুলশিক্ষা দফতর প্রায় নজিরবিহীন বলেই ব্যাখ্যা করেছে। কর্মকর্তাদের মতে, রাজ্যের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এত স্পষ্টভাবে বাতিলের কারণ জানানো বিরল ঘটনা। প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে ২০২৩ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হয়। এর মধ্যে ১৭ হাজার ২০৬ জন ছিলেন শিক্ষক। আদালত পরে ১৫ হাজার ৪০৩ জন যোগ্য প্রার্থীকে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজে থাকার অনুমতি দেয়। তবে বাকি প্রার্থীদের ক্ষেত্রে যাঁরা শূন্য নম্বর পেয়েও নিয়োগপত্র পেয়েছিলেন, অথবা মেয়াদোত্তীর্ণ প্যানেলের মাধ্যমে চাকরি করেছিলেন তাঁদের ক্ষেত্রেই এই বাতিলের সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে।
আইনজীবী মহলের একাংশের মতে, কমিশন এইভাবে প্রভিশনাল অ্যাডমিট কার্ডে বাতিলের তালিকা প্রকাশ করে আসলে ভবিষ্যতের মামলার রাস্তা আটকে দিতে চাইছে। কারণ এতদিন আদালতে এসএসসি দাবি করত, লিখিত ও সাক্ষাৎকারের পর ভেরিফিকেশন ছাড়া অযোগ্য প্রার্থী শনাক্ত করা সম্ভব নয়। এখন তারা বলতে পারবে, দুর্নীতির সঙ্গে যুক্তদের অ্যাডমিট কার্ড আগেই বাতিল করা হয়েছে।
তবে কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে এসএসসি-র নোটিসে স্পষ্ট বলা হয়েছে, প্রার্থীদের যোগ্যতা যাচাই প্রক্রিয়া এখানেই শেষ নয়। আদালতের নির্দেশ ও কমিশনের নিয়ম মেনে শারীরিক বা অনলাইন ভেরিফিকেশন এবং পরবর্তী কাউন্সেলিংয়েও এই যাচাই চলবে।