সরকারি প্রকল্পের অর্থ খরচের সময়সীমা বেঁধে দিল নবান্ন। কারণ সময়সীমা বেঁধে দিলে একদিকে প্রকল্পের বরাদ্দ অর্থ পুরোটা খরচ করার চাপ তৈরি হবে। আর সেই টাকা খরচ হলে ফেরত চলে যাবে না। এই কারণে প্রত্যেকটি দফতরকে এবার সময়সীমা বেঁধে দিল নবান্ন। ইতিমধ্যেই এই মর্মে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। কোনও কাজে যেন ঢিলেমি না থাকে। এই নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে কারণ দেখা গিয়েছে, প্রত্যেক অর্থবর্ষের শেষে বেশ কিছু ক্ষেত্রে টাকা খরচ হয়নি। তা ফিরে যাচ্ছে। সেটা যে শুধু কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পে তা নয় রাজ্য সরকারের প্রকল্পেও। যার জন্য সময়সীমা পেরিয়ে গেলে সেই টাকা রাজ্যের কোষাগারে ফিরে আসছে।
আর যে সব দফতর কাজ শেষ করতে গড়িমসি করে তারা সময়সীমার শেষবেলায় এসে খরচের হিড়িক পড়ে যায়। ওই সব দফতর তখন তড়িঘড়ি কাজ করতে চেষ্টা করে। ফলে ভুলভ্রান্তি হয়ে যায়। এই কারণে কাজের সামঞ্জস্য যেমন নষ্ট হয় তেমনই ভুলভ্রান্তির আশঙ্কা থেকে যায়। সেসব যাতে আর না হয় তাই নবান্নের অর্থ দফতর এই বিষয়ে কড়া অবস্থান নিয়েছে। ওই নির্দেশিকায় স্পষ্ট বলা হয়েছে, কোনওরকম কাজে ঢিলেমি মেনে নেওয়া হবে না। মানুষের উন্নয়নে যে টাকা খরচ করার কথা সেটা যেন সঠিকভাবে এবং পুরো টাকাটাই সঠিক সময়ে খরচ হয় সেটা দেখতে হবে। খরচেও সবরকম স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে বলে নবান্নের নির্দেশিকা।
আরও পড়ুন: ইসলামপুরের বই চুরির ঘটনায় সিআইডি তদন্তের নির্দেশ, দু’বছর পর দিল কলকাতা হাইকোর্ট
বাংলায় এখন বহু সামাজিক প্রকল্প রয়েছে। সেখানে রাজ্য বাজেটে টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। সেই টাকায় যেন উন্নয়নের কাজ সময় থাকতে তড়তড়িয়ে হয়। এবার মার্চ মাসের কাজের বেতন থেকে শুরু করে ভাতা, মজুরি, পেনশন আগামী ২ এপ্রিল তারিখের মধ্যে দেওয়া হবে। রাজ্যের সব দফতরকে নির্দেশ দিয়ে নবান্নের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, একসঙ্গে প্রচুর বিল জমা হলে সমস্যা তৈরি হতে পারে। নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে সেগুলি পাঠাতে হবে। ট্রেজারি বা পে অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস অফিসে কোনও বিল বা চালান কত তারিখের মধ্যে পাঠাতে হবে সেটার তালিকা করে দেওয়া হয়েছে। সরকারি কর্মীদের বকেয়া, অবসরকালীন ভাতা বা ট্রাভেল অ্যালাওয়েন্স বিল সংক্রান্ত বিষয়ও স্পষ্ট করা হয়েছে।
নবান্ন সূত্রে খবর, ওই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ২৮ মার্চের পর পে অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস অফিসে বা ট্রেজারিতে কোনও বিল পাঠানো যাবে না। ১৩ মার্চের মধ্যে যে বিলগুলি ফেরত দেওয়া হয়েছিল অথবা আপত্তি তোলা হয়েছে সেগুলি আবার নতুন ভাবে পাঠানোর শেষ তারিখ আগামী ১৭ মার্চ। চেক বা শূন্য বিল অথবা পিএল ট্রান্সফার স্টেটমেন্টের ব্যাক অ্যান্ড ডেলিভারি কোনওভাবেই অর্থবর্ষ শেষে আর নেওয়া যাবে না। অর্থ দফতরের সম্মতি না থাকলে কোনও অগ্রিমও নেওয়া যাবে না। এই পদক্ষেপের ফলে কাজ দ্রুততার সঙ্গে হবে এবং টাকাও সম্পূর্ণ খরচ হবে বলে মনে করা হচ্ছে।