নবান্ন অভিযানের জন্য কোনও আবেদনপত্র জমা পড়েনি বলে দাবি করল কলকাতা পুলিশ। তবে তারপরও আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও মৃত্যুর ঘটনার এক বছরের মাথায় যে নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে, সেজন্য যাবতীয় প্রস্তুতি সেরে রাখছে বলে পুলিশের তরফে জানানো হল। শুক্রবার ভবানী ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতীম সরকার, এডিজি (আইন-শৃঙ্খলা) জাভেদ শামিম, কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা এবং হাওড়ার পুলিশ কমিশনার প্রবীণ ত্রিপাঠী স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, নবান্ন অভিযান করা যাবে না। পরিবর্তে দুটি বিকল্প জায়গা চিহ্নিত করে দিয়েছে পুলিশ। সেইসঙ্গে কড়া ভাষায় পুলিশ জানিয়েছে, নিয়ম লঙ্ঘন করলে আইনি পদক্ষেপ করা হবে। একইভাবে কালীঘাট অভিযানেরও অনুমতি দেওয়া হয়নি।
নবান্ন অভিযান নিয়ে পুলিশ কী বলল?
১) পুলিশের যুক্তি, নবান্ন রাজ্যের প্রশাসনিক সদর দফতর। সেখানে সর্বদা ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৬৩ ধারা জারি করা থাকে। তাই সেখানে মিছিল করা যাবে না। দেখানো যাবে না বিক্ষোভ।
২) পরিবর্ত দুটি জায়গা: বিক্ষোভ বা মিছিলের জন্য দুটি বিকল্প জায়গা দিয়েছে - সাঁতরাগাছি বাসস্ট্যান্ড এবং রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ চত্বর।
কালীঘাট অভিযান নিয়ে পুলিশ কী বলল?
কলকাতা পুলিশেের তরফে জানানো হয়েছে, বিকেলে কালীঘাট অভিযান করার কথা আছে অভয়া মঞ্চের। যদিও তার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের জন্য চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে বিকল্প জায়গা।
নবান্ন ও কালীঘাট নিয়ে পুলিশের হুঁশিয়ারি
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, যে কয়েকটি বিকল্প জায়গা চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে, সেখানেই জমায়েত করা যাবে। অন্যত্র জমায়েত হলে পদক্ষেপ করা হবে। এখন সিসিটিভি, ড্রোনের মতো বিভিন্ন ব্যবস্থা আছে। ফলে আইন ভঙ্গ করলে সহজেই ধরা যাবে।
শনিবার যান চলাচলের ক্ষেত্রে কী কী বিধিনিষেধ থাকছে?
নবান্ন অভিযানের জন্য আপাতত যান চলাচলের উপরে সেরকম কোনও বিধিনিষেধ জারি করেনি কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ। শুক্রবার পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, শনিবার (৯ অগস্ট) ভোর ৪ টে থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত কলকাতার কয়েকটি রাস্তায় পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল করতে দেওয়া হবে না। তবে সেই তালিকা থেকে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার, অক্সিজেন, দুধ, ওষুধ, ফল, শাকসবজির মতো জরুরি এবং পচনশীল পণ্যবহনকারী গাড়িকে বাদ রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: 'টাকা খেয়ে এরকম করে এরা…', সিবিআইয়ের নামে বিস্ফোরক আরজি করের নির্যাতিতার বাবার
কোন কোন রাস্তায় গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে?
১) বিদ্যাসাগর সেতু ও বিদ্যাসাগর সেতুর র্যাম্প, খিদিরপুর রোড, তারাতলা রোড, ডায়মন্ড হারবার রোড, সার্কুলার গার্ডেনরিচ রোড, গার্ডেনরিচ রোড হাইড রোড, কোল বার্থ রোড, রিমাউন্ট রোড এবং ওই রাস্তাগুলির সংযোগকারী ফিডার রোডে পণ্যবাহী যান চলাচলে বিধিনিষেধ থাকবে।
আরও পড়ুন: চিকেন নেকের কাছে চিনা বায়ুঘাঁটি তৈরি হচ্ছে? বাংলাদেশ নিয়ে ভারত সোজা বলল ‘আমরা…’
২) জওহরলাল নেহরু রোড, রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ, রেড রোড, নিউ রোড, ডাফরিন রোড, মেয়ো রোড, আউটরাম রোড, খিদিরপুর রোড, হসপিটাল রোড, লাভার্স লেন, কুইন্সওয়ে, ক্যাসুয়ারিনা অ্যাভিনিউ, ক্যাথিড্রাল রোড, এজেসি বোস রোড, এসএন ব্যানার্জি রোড, ওল্ড কোর্ট হাউস স্ট্রিট, কাউন্সিল হাউস স্ট্রিট, কিংসওয়ে, সেন্ট জর্জেস গেট রোড, স্ট্র্যান্ড রোড, এম জি রোড, স্ট্র্যান্ড ব্যাঙ্ক রোড, কেকে টেগোর স্ট্রিট, কালাকার স্ট্রিট, ব্র্যাবোর্ন রোড এবং হাওড়া ব্রিজেও সেই বিধিনিষেধ থাকবে।
আরও পড়ুন: রাজ্যে প্রায় ৭০০০ শিক্ষক, ডাক্তার ও নার্স নিয়োগের সিদ্ধান্ত! ভোটের আগে হবে চাকরি
৩) সেইসঙ্গে কলকাতা পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি বুঝে কোনও রাস্তায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। আর শনিবার যেহেতু রাখি পূর্ণিমা পড়েছে, তাই এমনিতেই রাস্তায় গাড়ির চাপ কিছুটা কম থাকবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।