সংখ্যালঘু কমিশনের কাঠামোয় বড়সড় রদবদলের পথে হাঁটল রাজ্য সরকার। এতদিন একজন ভাইস-চেয়ারপার্সন ছিল কমিশনে। এবার সেই সংখ্যা বাড়িয়ে করা হল দু’জন। শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় পাশ হল ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল মাইনরিটিজ কমিশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০২৫’, যার মাধ্যমে এই রদবদকের রাস্তাকে আইনি স্বীকৃতি দিল সরকার।
আরও পড়ুন: লক্ষ্মীর ভাণ্ডার থেকে সরাসরি বার্ধক্য ভাতায় তালিকাভুক্ত ৬.৮ লাখ মহিলা: মন্ত্রী
শুক্রবার সংশোধনী বিলটি পেশ করেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। আলোচনার শুরু থেকেই বিষয়টি নিয়ে উত্তপ্ত বিতর্ক তৈরি হয়। কেউ-কেউ কমিশনের দায়িত্ব বাড়ার যুক্তি মেনে নিলেও বিরোধীরা আদৌও দুটি ভাইস-চেয়ারপার্সনের প্রয়োজনীয়তা কতটা, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি প্রশ্ন তোলেন কমিশনের একাধিক পদের কি বাস্তবে কোনও প্রয়োজনীয়তা রয়েছে? নাকি শুধু রাজনৈতিক ভারসাম্য রক্ষার কৌশল? তৃণমূলের মহম্মদ আলি ও হুমায়ুন কবীর এই সংশোধনীকে সমর্থন করে বলেন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের স্বার্থে কমিশনের ভূমিকা আরও বিস্তৃত হওয়া জরুরি। তাই প্রশাসনিক দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়ার জন্য অতিরিক্ত ভাইস-চেয়ারপার্সন আবশ্যিক।
তবে বিতর্কের কেন্দ্রে ছিলেন বিজেপি বিধায়ক শংকর ঘোষ। তিনি সরাসরি প্রস্তাব দেন, ভাইস-চেয়ারপার্সনের পদে অন্তত একজন যেন এমন কেউ হন, যিনি মুসলিম নন। তাঁর কথায়, সন্ত্রাস কিংবা দুর্নীতির কোনও ধর্ম নেই। সংখ্যালঘু মানে কেবল ধর্ম নয় শিক্ষা, সুযোগ ও নিরাপত্তার দিক থেকেও তা বিচার করা উচিত।
বিলের পক্ষে মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, এই বিল কোনও ভেদাভেদের জায়গা নয়। বরং সংবিধান অনুযায়ী, ছ’টি স্বীকৃত ধর্মীয় সংখ্যালঘু গোষ্ঠী মুসলিম, খ্রিস্টান, শিখ, পার্সি, বৌদ্ধ ও জৈন এই কমিশনের আওতায় আসে। কাজের ব্যাপ্তি বেড়েছে, ভিজিট বেড়েছে, তাই প্রশাসনিক কাঠামোও বিস্তৃত করতে হচ্ছে।
মন্ত্রী আরও জানান, চেয়ারম্যানের বেতন থাকলেও ভাইস-চেয়ারপার্সনের কোনও নির্দিষ্ট পারিশ্রমিক নেই। সভাপ্রতি ১,০০০ টাকা ‘সিটিং অ্যালোওয়েন্স’ দেওয়া হয় মাত্র। তবু কাজের গুরুত্ব এবং পরিধি বিচার করে এই পদ সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিলটি পাশ হওয়ার পর স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জোর চর্চা।