ঋণের কিস্তি মেটাতে না পারায় অসুস্থ এক বৃদ্ধাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গেলেন ব্যাঙ্কের কর্মীরা। এমনই গুরুতর অভিযোগ উঠেছে নরেন্দ্রপুরে। শুধু তুলে নিয়ে যাওয়াই নয়, বৃদ্ধাকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। গোটা ঘটনায় ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে নরেন্দ্রপুর থানায় অভিযোগ জানিয়েছে বৃদ্ধার পরিবার। ব্যাঙ্কের এমন অমানবিক পদক্ষেপে তাঁরা সমালোচনায় সরব হয়েছেন। যদিও পরে ছেড়ে দেওয়া হয় বৃদ্ধাকে।
আরও পড়ুন: নগ্ন ছবি ছড়িয়ে দেব! শিক্ষককে হেনস্থা লোন কোম্পানির, সম্মান রক্ষায় মরণ-ঝাঁপ
অভিযোগ, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে বৃদ্ধাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় এবং দুপুর ২টো পর্যন্ত তাঁকে আটকে রাখা হয়। বৃদ্ধার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, কিস্তি মেটাতে দেরি হওয়ায় এর আগেও তাঁকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল ব্যাঙ্কের তরফে। আর একেবারে অসুস্থ বৃদ্ধাকেই তুলে নিয়ে যান কর্মীরা।
পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, এদিন সকালে ব্যাঙ্ক থেকে কয়েকজন কর্মী আসে। ঋণের কিস্তি নিয়ে তাঁদের সঙ্গে বৃদ্ধা এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের বচসা বাঁধে। তারপরেই তাঁরা অসুস্থ বৃদ্ধাকে তুলে নিয়ে যান। পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, এর আগেও ওই ব্যাঙ্ক থেকে দু'বার ঋণ নিয়েছেন বৃদ্ধা। প্রথমে ৩০ হাজার টাকা ও পরে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। তবে প্রত্যেকবারই ঋণ শোধ করেছিলেন। প্রয়োজন থাকায় ফের তৃতীয়বারের জন্য ব্যাঙ্ক থেকে ১ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন পাঁচ মাস আগে। ঋণ নেওয়ার পর থেকেই প্রতি মাসে কিস্তির টাকা মিটিয়ে আসছিলেন তিনি। তবে ফেব্রুয়ারি মাসে এখনও পর্যন্ত আর্থিক সমস্যার কারণে কিস্তির টাকা মেটাতে পারেননি। এরপর থেকেই ব্যাঙ্কের তরফে তাঁকে ফোন করে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল।
জানা গিয়েছে, নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ ব্যাঙ্কে গিয়ে ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। তবে অভিযোগ, পুলিশের সামনেই ব্যাঙ্ক ম্যানেজার বৃদ্ধা এবং তাঁর ছেলেকে দিয়ে জোর করে মুচলেকা লিখিয়ে নিয়েছেন। তাতে বলা হয়েছে, মার্চ মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে হবে। যদিও এ বিষয়ে ব্যাঙ্কের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, চলতি মাসেই ক্ষুদ্র ঋণ সংস্থার এজেন্টদের অত্যাধিক চাপের কারণে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছিল। ঘটনাটি কর্ণাটকের বেলাগাভি জেলার। ঋণশোধ করতে না পারায় ওই ব্যক্তিকে চাপ দেওয়া হচ্ছিল। তারপরেই তিনি এমন পদক্ষেপ করেন বলে অভিযোগ।