কলকাতার পর এবার পুরুলিয়া। প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি থাকা এক তরুণীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল। ঘটনায় অভব্য আচরণের অভিযোগে এক স্বাস্থ্যকর্মীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতের নাম মহম্মদ এনামুল হক। পুরুলিয়ার বান্দোয়ান ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এই ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রেরই কর্মী। অভিযোগ পেয়ে জেলা স্বাস্থ্য দফতর পৃথক তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
আরও পড়ুন: ক্লাসে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রীর শ্লীলতাহানি, অভিযুক্ত শিক্ষককে মারধর, পরে গ্রেফতার
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, বান্দোয়ান থানা এলাকার বাসিন্দা ওই তরুণী তিন বছরের মেয়েকে নিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পুষ্টি পুনর্বাসন কেন্দ্রে ভর্তি ছিলেন। অভিযোগ, গত শুক্রবার বিকেলে খাবার দেওয়ার কথা বলে অভিযুক্ত স্বাস্থ্যকর্মী তাঁকে ফাঁকা একটি ঘরে ডেকে নিয়ে যান। সেখানে তাঁর গায়ে হাত দেওয়া-সহ অশোভন আচরণ করেন। ঘটনার পরদিন, শনিবার, তরুণী বিষয়টি একই ওয়ার্ডে থাকা অন্যান্য মহিলাদের জানান। তাঁরা যৌথভাবে প্রতিবাদ তুলে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ চান। খবর পেয়ে তরুণীর পরিবারের সদস্যরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পৌঁছে বিএমওএইচের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ভুক্তভোগী তরুণীর বক্তব্য, খাবার দেওয়ার নামে তাঁকে আলাদা ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। ভিতরে গিয়ে তিনি তাঁর শরীরে হাত দেন। তৎক্ষণাৎ প্রতিবাদ করে তিনি বাইরে বেরিয়ে আসেন। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ এনামুল হককে গ্রেফতার করে।
বিএমওএইচ কাজিরাম মুর্মু জানান, ওই মহিলা প্রথমে এক চিকিৎসককে বিষয়টি বলেন। পরে তিনি প্রশাসনের কাছেও লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগটি পুলিশে পাঠানো হয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) অশোক কুমার বিশ্বাস বলেন, ঘটনা সম্পর্কে অবগত হয়েছিলেন তিনি। পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে। তিনি জানান, আইন আইনের পথে চলবে। পাশাপাশি জেলা স্বাস্থ্য দফতর এই ঘটনার জন্য তিন সদস্যের তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে।
রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের পুরুলিয়া স্বাস্থ্য শাখার জেলা সভাপতি মহম্মদ নিয়ামুল খান বলেন, অভিযোগের বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। প্রমাণিত হলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।ডিওয়াইএফআই-এর সভাপতি সুব্রত মাহাতোর বক্তব্য, চিকিৎসা পরিষেবা নিতে এসে কেন একজন মহিলাকে যৌন হেনস্তার শিকার হতে হবে? অভিযুক্তের কঠোর শাস্তি চাই। তাঁর অভিযোগ, ঘটনার পরে পুষ্টি পুনর্বাসন কেন্দ্রে ভর্তি থাকা সবাইকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে। যদিও স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রের দাবি, ভর্তি ছিলেন হাতে গোনা কয়েকজন, মনসা পুজোর ছুটিতে তাঁরাই বাড়ি ফিরতে ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।পুলিশ জানিয়েছে, দায়ের হওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনানুগ পদক্ষেপ চলবে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তদন্ত কমিটিও সংশ্লিষ্ট নথি, কর্মীদের বয়ান এবং সিসিটিভি সহ প্রয়োজনীয় প্রমাণ খতিয়ে দেখবে।